বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
সাক্ষাৎকার

দেশের উন্নয়নে অংশীদার হতে চায় এনআরবিসি - এস এম পারভেজ তমাল

দীর্ঘ ১৪ বছর পর চতুর্র্থ প্রজন্মের ব্যাংকের মধ্যে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকই প্রথম পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে ব্যাংকের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা উন্নয়ন, প্রবাসীদের নিয়ে পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন বিষয় দৈনিক যায়যায়দিনের কাছে তুলে ধরেছেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমাল
নতুনধারা
  ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:০০
এস এম পারভেজ তমাল

যায়যায়দিন : এনআরবিসি চতুর্থ প্রজন্মের একটি ব্যাংক। এত অল্প সময়ে পুঁজিবাজারে আসার কারণ কী?

এস এম পারভেজ তমাল : ব্যাংক তো পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি, লাইসেন্সও লিমিটেড কোম্পানি, সত্যিকার অর্থে মালিকানায় জন অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে পুঁজিবাজার ছাড়া উপায় নেই। তবে আমরা মন্দাকালীন আবেদন করেছি, পুঁজিবাজারে গতি যখন নিম্নমুখী ছিল, পুঁজিবাজারে যে অবস্থা ছিল তা থেকে ১১ গুণ বেশি সাড়া পেয়েছি। এ বিষয়টি আমাদের জন্য পজিটিভ। পুঁজিবাজারে এলে প্রথম সুবিধা লাখো মানুষের ব্যাংক হিসাবে লাখো মানুষ নজরদারিতে থাকে। ব্যাংকের ভিত্তি আরও সুস্পষ্ট হয়। জনগণ দেখতে পারে, কী কাজ হচ্ছ, কী সেবা দিচ্ছে, সেবার মান বা গুণগত মান কতটা। আমি মনে করি, সত্যিকারের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করতে হলে পুঁজিবাজারে আসতে হবে। ব্যাংকের মূলধন দিয়ে ব্যাংক চলে না, ব্যাংক চলে জনগণের টাকায়। তাই মালিকানা সুস্পষ্ট হলে সেটি আরও ভালো হয়। একাই ছিল তাড়াতাড়ি পুঁজি বাজারে আসার মূল কারণ।

যাযাদি : চলতি বছরে আপনাদের পরিকল্পনা কী?

পারভেজ তমাল : চলতি বছরে আমরা কাজ করছি। গত ২ বছরের ফসল হয়তো এ বছর দেখতে পারবেন। এ বছরের শেষে ৮০০ লোকেশনে যাওয়ার ইচ্ছা আছে। আর ৮০০ মানেই গ্রামবাংলার সর্বস্তরে পৌঁছে যাওয়া। এ বছর আমরা এক লাখ মানুষকে ছোট ছোট লোন দেব। ফলে কমপক্ষে এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তাই দেশের উন্নয়নেও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকও ভালো ভূমিকা রাখতে পারবে।

এই এক লাখ লোন সিঙ্গেল ডিজিটে এবং গ্রামের মানুষকে দেওয়া হবে। আমরা সনাতন ব্যাংকিং চিন্তা-ভাবনা থেকে বের হয়ে আসতে চাইছি।

যাযাদি : প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সেবা দেওয়ার জন্য বা অন্য কোনো বিশেষ পরিকল্পনা আছে কী?

পারভেজ তমাল : আমাদের কোনো মানুষই এখন আর পিছিয়ে নেই। গ্রামকে শহরায়ন করার যে পরিকল্পনা সরকার নিয়েছে, সেখানে ব্যাংকের কার্যক্রম অপরিহার্য। গ্রামকে শহরায়ন করতে হলে উন্নয়নমুখী কাজে গ্রামের মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে। এটিই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সবচেয়ে বড় কাজ হবে। গ্রামের মানুষ যদি গ্রামেই তার চাহিদা অনুযায়ী অর্থনৈতিক পরিবেশ পায় এবং এ ক্ষেত্রে যদি তার মেধা-কর্মদক্ষতার প্রতিফলন ঘটাতে পারে তাহলে সত্যিকারের উন্নয়ন হবে।

যাযাদি : এই ব্যাংকে প্রবাসীদের জন্য কী কী সুবিধা রয়েছে?

পারভেজ তমাল : প্রবাসীদের জন্য অনেক কাজ করছি। তাদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করার প্রক্রিয়া আগেই করা ছিল। প্রবাসীদের জন্য স্কিম ডিপোজিট এখন আমরা বিশেষভাবে করছি। প্রবাসীদের মধ্যে যারা গত বছর কর্মসংস্থান হারিয়েছেন, যারা দেশে ফিরে এসেছেন, তাদের সহজ শর্তে লোন দেওয়ার জন্য কাজ করছি। পাশাপাশি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমরা যৌথ উদ্যোগে এ বছরই প্রবাসীদের জন্য কয়েকটি সার্ভিস করব। এর মধ্যে রয়েছে হেলথ ডেস্ক, জরুরি সহযোগিতাসহ বিভিন্ন সহযোগিতা। এমনকি বিদেশে গিয়ে যারা মৃতু্যবরণ করেন তাদের লাশ দেশে আনার ক্ষেত্রে পুরোপুরি অর্থায়ন করার জন্য ইতোমধ্যে কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

যাযাদি : করোনাকালে আপনারা গ্রাহকদের বিশেষ কোনো সুবিধা দিয়েছেন কি?

পারভেজ তমাল : করোনাকাল সবার জন্যই কঠিন, আমরাও এ সময় অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। সংকট উত্তরণে সরকার বিভিন্ন প্রণোদনার উদ্যোগ নিয়েছে। আমরাও করোনার বিষয়টি মাথায় রেখে নানা উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা করোনাকালে একটি বিশেষ লোন চালু করেছিলাম সিঙ্গেল ভিজিটের, যা শুধু গ্রামের ছোট ব্যবসায়ী, ছোট উদ্যোক্তা, স্বল্প আয়ের পেশাদারি মানুষের জন্য। তাদের প্রত্যেককে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত লোন দিয়েছি। আমরা প্রায় ৬৫ কোটি টাকা লোন দিয়েছিলান। এছাড়া সরকারের যে প্রণোদনা এনজিওগুলোর জন্য ছিল সেখানে সবচেয়ে বেশি অংশগ্রহণ ছিল আমাদের। আমরা মনে করেছিলাম, গ্রামের মানুষকে যদি সাহায্য না করা যায় তাহলে বিশাল সমস্যা তৈরি হতে পারে।

এ কারণে প্রথমত আমরা কোনো ব্রাঞ্চ বন্ধ করিনি, লোন কার্যক্রম কখনো বন্ধ ছিল না। উল্টো করোনার সময় লোন আরও বেশি দিয়েছি। এখনো বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত আছে। এখন দরকার বেশি বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য কাজ করা।

যায়যায়দিন : সারাদেশে আপনাদের ব্যাংকের কতগুলো শাখা-উপশাখা রয়েছে?

এস এম পারভেজ তমাল : এ মুুহূর্তে আমাদের ৮৩টি শাখা এবং ৪২৩টি উপশাখা নিয়ে এনআরবিসি ব্যাংকের সেবা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। প্রতিদিন আমাদের উপশাখা হচ্ছে, মার্চেই ৮০০ উপশাখা চালুর লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে