নওগাঁয় নদীতে ফসলের মাঠ

প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপর্যয়ের পূর্বাভাস

বদলগাছী

প্রকাশ | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:০০

হাফিজার রহমান
বদলগাছীতে ছোট যমুনার বুকে হচ্ছে চাষাবাদ -যাযাদি
নওগাঁর বদলগাছী অংশে মরা খালে পরিণত হয়ে পড়েছে ছোট যমুনা নদী। যৌবন হারিয়ে নদীর বুকজুড়ে বোরো ধান চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে মারাত্মক প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপর্যয়ের পূর্বাভাস দেখা দিয়েছে। বদলগাছী উপজেলার কোলঘেঁষে ছোট যমুনা নদী প্রবাহিত হয়েছে। নদীর কথা ভাবতেই মনে পড়ে শৈশবে ফেলে আসা হারানো দিনের পুরনো কবিতার কথা 'আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে/বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে'। মূলত বর্ষা মৌসুমে ১-২ মাস নদীতে জোয়ার থাকে, বিগত কয়েক বছর থেকে বদলগাছীর ছোট যমুনা নদী তার আপন সত্তা হারিয়ে আগাম শুকিয়ে যাওয়ায় নদীর বুকে চলতি মৌসুমে বোরো ধান চাষ করছেন স্থানীয় ভূমিহীন কৃষকরা। অথচ এই নদীই ছিল এক সময় এলাকার মানুষের যোগাযোগে অন্যতম মাধ্যম। ভরা যৌবন জোয়ারে পরিপূর্ণ নদীতে এক সময় চলত পালতোলা নৌকা, দূর থেকে ভেসে আসত মাঝি-মালস্নার গান। গ্রামের ছোট ছেলেমেয়েদের নদী জলে সাঁতার কাটার দৃশ্য, নদীর জোয়ারের সেই কলকল ধ্বনি, ঝরঝর করে নেমে আসা ঝরনার আওয়াজ এখন শুধু যেন স্মৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। নদ-নদী দেশের প্রাণ, এখন সেই নদীই যেন নিষ্প্রাণ মরা খাল হয়ে পড়েছে। বদলগাছীর উপর দিয়ে প্রবাহিত সেই খরস্রোতা ছোট যমুনা নদী শুধু বর্ষাকালে কয়েক দিনের জন্য পানিতে টলটল করে। এখন নদীর কোলজুড়ে চাষাবাদ হচ্ছে ধান, সরিষা, মিষ্টি আলুসহ অনেক ফসল। বদলগাছীর ডাঙ্গীসারা গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠ তাছির উদ্দীন (৮৫) বলেন, নদীর গতিপথ এমন হবার ফলে নদীর প্রাণ হারিয়ে যাবে। তেজাপাড়া গ্রামের ভৃমিহীন কৃষক আরশাফ আলী বলেন, 'আমাদের তেমন জমাজমি নেই। তাই বোরো মৌসুমে নদী শুকিয়ে গেলে চাষাবাদ করি।'