বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

'পুলিশ অভিযোগ তদন্ত কমিশন'

যাযাদি রিপোর্ট
  ০১ মার্চ ২০২১, ০০:০০

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্তে 'পুলিশ অভিযোগ তদন্ত কমিশন' নামে একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের 'শতাধিক' আইনজীবীর পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি করেন।

পরে তিনি বলেন, 'বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোলস্নার হাইকোর্ট বেঞ্চে রিট আবেদনটির শুনানি হতে পারে।'

অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক, অবসরপ্রাপ্ত সচিব, আইনের শিক্ষক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের অন্তর্র্বর্তী আদেশ চাওয়া হয়েছে ওই রিট আবেদনে।

এই কমিটি করতে হবে এমনভাবে, যাতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা করে তারা সরাসরি আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে পারে।

শিশির মনির বলেন, 'স্বাধীন পুলিশ অভিযোগ তদন্ত কমিশন' গঠন করতে বিবাদীদের গত বছর ১০ সেপ্টেম্বর উকিল নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তাদের কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে রিট আবেদনটি করা হয়।

আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শককে সেখানে বিবাদী করা হয়েছে। ১৪৫ পৃষ্ঠার রিট আবেদনের সঙ্গে ১ হাজার ৫২২ পৃষ্ঠার নথি (ডকুমেন্ট) যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

আবেদনে পুলিশ বাহিনী গঠনের উদ্দেশ্য, ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধে তাদের অবদান, পুলিশের গৌরবময় অর্জনের বর্ণনা তুলে ধরার পাশাপাশি পুলিশ বাহিনীর শৃঙ্খলায় বিদ্যমান আইনি কাঠামো সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে এবং কমিশন গঠনের জন্য আটটি যুক্তি দেওয়া হয়েছে।

সেইসঙ্গে ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে গত বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত 'পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধ ও অসদাচরণের' ৫৮৯টি অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে বলে আইনজীবী জানান।

আইনজীবী শিশির মনির বলেন, 'রিটে দৃষ্টান্ত হিসেবে পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ছয়টি মামলার অনুলিপি সংযুক্ত করা হয়েছে। এসব মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনে অভিযোগ ওঠা পুলিশ সদস্যদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।'

তিনি বলেন, "তদন্ত হলো বিচারের প্রাথমিক ধাপ। ন্যায়বিচারের জন্য প্রধান শর্ত হলো সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত। সুষ্ঠু তদন্ত সংবিধানের ৩৫(৩) ও ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ব্যক্তির মৌলিক অধিকার। বর্তমান আইনি কাঠামোতে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তার তদন্তের দায়িত্ব পুলিশকেই দেওয়া হয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এ তদন্ত প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এ বিষয়ে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার 'পুলিশ অধ্যাদেশ' নামে একটি আইনের খসড়া প্রস্তুত করেছিল। প্রস্তাবিত অধ্যাদেশের ৭১ দফায় 'পুলিশ কমপেস্নইন্ট কমিশন' গঠনের বিধান প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু সেই খসড়া অধ্যাদেশ আজও আইনে পরিণত হয়নি।"

এছাড়া রিটে আটটি আন্তর্জাতিক কনভেনশন ও নীতিমালা যুক্ত করা হয়েছে। এসব আন্তর্জাতিক দলিলে পুলিশের অপরাধ তদন্তে আলাদা কর্তৃপক্ষ বা কমিশন গঠনের জোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

রিট আবেদনকারী আইনজীবীদের মধ্যে মো. আসাদ উদ্দিন, রেদোয়ান আহমেদ, মো. সাইফুল ইসলাম, শিকদার মাহমুদুর রাজি, শ্যাম সুন্দর দাস, ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ, মোহাম্মদ সাজ্জাদুল ইসলাম, মো. মোর্শেদ মীর, জামিলুর রহমান খান, শেখ নাসের ওয়াহেদ (সিমন), মো. আল-আমিন, আল রেজা মো. আমির, ইমরুল কায়েস, গোলাম সারোয়ার, মো. শাহাবুদ্দিন খান (লার্জ), মো. দুলাল মিয়া, মো. জাকির হায়দার, মো. আব্দুল আলীম, মো. হুমায়ুন কবির, জি এম মুজাহিদুর রহমান, মো. মতিয়ার রহমান অন্যতম।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে