যশোর জেনারেল হাসপাতাল

ছিন্ন মস্তক রয়ে গেল প্রসূতির গর্ভে

প্রকাশ | ০১ মার্চ ২০২১, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর
চিকিৎসক-নার্স নেই। ফলে সন্তান প্রসবের চেষ্টা করলেন আয়া। নবজাতের দেহ বেরিয়ে এলেও ছিন্ন মস্তক রয়ে গেল প্রসূতির গর্ভে। মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটেছে শনিবার রাতে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে। ঘটনার পর উত্তেজনা সৃষ্টি হলে লেবার ওয়ার্ড থেকে সেবিকা, আয়া সবাই ভয়ে সরে পড়েন। ঘটনার শিকার প্রসূতি আন্না খাতুন (২৬) যশোরের শার্শা উপজেলার গাজীপুর গ্রামের ইয়ায়ুব হোসেনের স্ত্রী। আন্নার স্বামী আইয়ুব হোসেন অভিযোগ জানান, তার স্ত্রী আন্না ৫ মাসের গর্ভবতী। বাড়িতে পড়ে যাওয়ায় এবং সন্তানের নড়াচড়া টের না পাওয়ায় শুক্রবার রাতে তাকে নিয়ে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে আসেন। শনিবার সকালে চিকিৎসক আল্ট্রাসনোগ্রাম করান। এ সময় চিকিৎসক জানান, গর্ভে ২০ সপ্তাহের সন্তান মারা গেছে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবিকা গর্ভপাতের ওষুধ দেন। শনিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে সন্তানের পা বেরিয়ে আসে। এ সময় আন্নার স্বজনরা চিকিৎসক, নার্সদের ডেকেও পাননি। পরে ওয়ার্ডের আয়া মোমেনা নিজেই সন্তান প্রসব করানোর চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে সন্তানের দেহ বেরিয়ে এলেও ছিন্ন মস্তক রয়ে যায় প্রসূতির গর্ভে। এ ঘটনার পর রোগীর স্বজনরা হৈচৈ শুরু করলে সেবিকা, আয়া সবাই ওয়ার্ড ছেড়ে পালিয়ে যান। এ ব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য ঘটনার সময় দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক তানজিলা ইয়াসমিনের মোবাইল ফোনে রিং দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। পরে হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আরিফ আহম্মেদ ফোনে জানান, রোগীর গর্ভে ২০ সপ্তাহের মৃত বাচ্চা ছিল। গর্ভপাতের জন্য মেডিসিন দেওয়া হয়। রাতে বাচ্চার পা বেরিয়ে আসতে দেখে আয়া কাউকে না জানিয়ে নিজে ডেলিভারি করার চেষ্টা করে। গর্ভে বাচ্চাটি আগের দিনই মারা যাওয়ায় সেটিতে পচন শুরু হয়। এ কারণে আয়া টানাটানি করতেই মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে বেরিয়ে আসে। শনিবার সকালে ডিএনসি করে ওই প্রসূতির গর্ভ থেকে মৃত সন্তানের মাথা অপসারণ করা হয়েছে। এখন তিনি শঙ্কামুক্ত।' তবে ডা. আরিফ আহম্মেদ দাবি করেন, 'ঘটনার সময় ওয়ার্ডে চিকিৎসক, নার্স ছিলেন। তাদের না জানিয়ে আয়া নিজেই বাচ্চাটি বের করার চেষ্টা করেছে। এ জন্য তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'