রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ

রাজপথ উত্তপ্ত হচ্ছে প্রস্তুত থাকুন :টুকু

প্রকাশ | ০৩ মার্চ ২০২১, ০০:০০ | আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২১, ১৩:৫৭

রাজশাহী অফিস

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, গণতন্ত্র বারবার জীবিত হয়। আর এই গণতন্ত্র ফিরে আসবে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে। রাজপথ উত্তপ্ত হওয়া শুরু হয়েছে; তাই নেতাকর্মীকে আগামীর আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। মঙ্গলবার রাজশাহীতে বিভাগীয় বিএনপির সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। পুলিশের অনুমতি নিয়ে বিকালে রাজশাহী নগরের পাঠানপাড়া এলাকায় নাইস কনভেনশন সেন্টারে নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি। এতে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। 'আমার জীবন স্বার্থক, আমি বাঙালিকে তাদের গণতন্ত্র ফেরত দিয়েছি'- প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সূত্র ধরে ইকবাল হাসান মাহমুদ বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করতে চাই, আপনাকে কেন জনগণের ওপর নির্ভর না করে জনগণের ট্যাক্সের টাকায় তাদের কর্মচারী পুলিশ অফিসার, ডিসিদের ওপর নির্ভর করতে হয়? তাহলে কি আপনার গণতন্ত্রের ডেফিনেশন পরিবর্তন হয়ে গেল?' প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে টুকু বলেন, "আপনি বলেন, 'আমি উন্নয়ন করেছি, উন্নয়ন করেছি'। আপনি উন্নয়ন করেছেন, সেই জন্য তো ফরিদপুরের ছাত্রলীগের সভাপতি দুই হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। একটা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি যদি এত টাকা পাচার করে তাহলে প্রধানমন্ত্রী, আপনার রাঘববোয়ালরা কত টাকা পাচার করেছে বাংলাদেশের মানুষ সেই হিসাব চায়।'' তিনি আরও বলেন, 'আমরা রাজশাহীর এই সমাবেশ করতে চাইলাম মাদ্রাসা মাঠে। কিন্তু আপনি এটিকে সংকুচিত করে নাইস কনভেনশন সেন্টারে করতে দিলেন। আপনি হয়তো ভেবেছেন, বিএনপির সমাবেশে লোক হয় না। আপনি নাকি ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছেন, আপনার ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে দেখেন সমাবেশে লোকে লোকারণ্য।' তিনি বলেন, 'আমি সকালে যখন রাজশাহীতে নামলাম। মুক্তিযুদ্ধের সময় রাস্তাঘাট যেমন ফাঁকা ছিল, রাজশাহীর অবস্থা ঠিক তেমন দেখলাম। কীসের ভয়। আপনি তো গণতন্ত্র দিয়ে দিয়েছেন। তারপরও কীসের এত ভয়?' সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, 'বাংলাদেশে ৫২-তে রাজপথে ফয়সালা হয়েছে। ৫৪ থেকে ৬৯-রে রাজপথে ফয়লাসা হয়েছে। ৯১-এ রাজপথে ফয়সালা হয়েছে। প্রস্তুত হন এই রাজপথে ফয়সালা হবে। গণতন্ত্র হারিয়ে যাওয়া জিনিস না, কারও পকেটের মোয়া না। গণতন্ত্র বারবার জীবিত হয়।' পুলিশ বাহিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, '১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ রাতে বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনী নিজেদের জীবন বাজি রেখে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। কিন্তু আজ স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে দেখছি, সেই পুলিশ বাহিনী আর আজকের পুলিশ বাহিনীর মধ্যে কোনো মিল নাই। তখনকার পুলিশ বাহিনী ছিল বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের অগ্রসৈনিক। ২৫ তারিখ রাতে সবচেয়ে বেশি প্রাণ দিয়েছিল রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের সিপাহিরা। আজকে বাংলাদেশের পুলিশ একটা দলের কর্মী-বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।' মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুর রহমান মিলনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুন অর রশিদ এমপি, বিএনপির সাংগঠনি সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নাদিম মোস্তফা, ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রপ্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়া তাবিথ আউয়াল প্রমুখ।