পেশায় থেকেও স্বপ্ন পূরণ রাজপ্রসাদ ও তার স্ত্রীর

প্রকাশ | ০৬ মার্চ ২০২১, ০০:০০

দীপঙ্কর অপু, বোয়ালমারী (ফরিদপুর)
কর্মব্যস্ত মালতী পাল
কোনো পেশাই ছোট নয়। একাগ্রতা আর নিষ্ঠা থাকলে সব পেশায় থেকেই স্বপ্ন পূরণ করা সম্ভব। যেমন সম্ভব হয়েছে, ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের বড়গাঁ গ্রামের রাজপ্রসাদ পালের। মৃৎশিল্পের পেশায় থেকেও তিনি তার ভাগ্যোন্নয়ন করেছেন। রাজপ্রসাদের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়েকে ভালো বর দেখে বিয়ে দিয়েছেন। বড় ছেলে উপ-পুলিশ পরিদর্শক, আর ছোট ছেলে ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ থেকে মাস্টার্স করে এখন বিসিএসের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বয়সের কাছে হার মেনে রাজপ্রসাদ এখন পৈতৃক পেশা থেকে ছুটি নিয়েছেন। সেই সঙ্গে সংসারের দায়িত্ব থেকেও। বড় ছেলে পুলিশের উপ-পুলিশ পরিদর্শক হিসেবে চাকরি করায় পরিবারে অভাব নেই বললেই চলে। তারপরও রাজপ্রসাদের পৈতৃক পেশা ধরে রেখেছেন তার সহধর্মিণী মালতী রানী পাল। মালতী এখন মাটি দিয়ে দইয়ের টোপা (হাঁড়ি) তৈরি করেন। স্বামীর পেশায় তার অখন্ড মনোযোগ। সপ্তাহে তিন দিন টোপা তৈরি করেন। একদিনে ৫০-৬০টি দইয়ের টোপা তৈরি শুকনো অবস্থায় না পুড়িয়ে চার টাকা দরে বিক্রি করেন। মালতী রানী পাল বলেন, মাটির এ কাজকে ভালোবেসে ফেলেছি। তাই এখন ছাড়তে পারছি না। বড় ছেলে ভালো চাকরি করে। এখন মাটির কাজ না করলেও চলে। তবু এই জাতপেশা ছাড়তে মন চায় না। তিনি আরও বলেন, ছেলে-মেয়েরা যখন ছোট ছিল তখন স্বপ্ন দেখতাম তাদের শিক্ষিত করার, প্রতিষ্ঠিত করার। আজ সে স্বপ্নপূরণ হয়েছে। এই পেশায় থেকেও স্বপ্ন পূরণ করা যায়। রাজপ্রসাদ পালেরও একই কথা। মাটির কাজ করেই আজ ছেলেদের মানুষ করেছেন। কোনো পেশাই ছোট নয়। মৃৎশিল্পের পেশায় থেকেও স্বপ্ন পূরণ সম্ভব।