শালস্নায় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা

'প্রশাসন চাইলেই ঘটনা ঠেকাতে পারত'

প্রকাশ | ০৮ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
প্রশাসন চাইলেই সুনামগঞ্জের শালস্নায় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঠেকাতে পারত বলে দাবি করেছেন নাগরিক প্রতিনিধিদল। বুধবার সুনামগঞ্জের শালস্নায় নোয়াগাঁও সরেজমিন পরিদর্শনোত্তর ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিনিধিদলের পক্ষে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন নাগরিক প্রতিনিধিদলের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. রোবায়েত ফেরদৌস। ধর্মীয় উন্মাদনা ছড়িয়ে একটি শ্রেণি মানুষের অন্তরে সাম্প্রদায়িকতা ছড়ানোর চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে দাবি করে অধ্যাপক ড. রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, 'প্রশাসন চাইলেই বোধ হয় এ ঘটনা রোধ করা যেত। কারণ ঘটনার আগের দিন স্থানীয়ভাবে তারা মিটিং-মিছিল করেছে। পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসন তা জানত।' রোবায়েত ফেরদৌস আরও বলেন, 'ঘটনার আগে গ্রামের মসজিদে কিছুক্ষণ পর পর মাইকিং করে সেখানে আক্রমণের জন্য লোকজন জড়ো করা হয়। ফলে হাজারো মানুষের আক্রমণের মুখে গ্রাম ছেড়ে পলায়ন করেন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। এই সুযোগে হেফাজত নেতার অনুসারীরা গ্রামে প্রবেশ করে বাড়িঘর তছনছ করে, লুটপাট চালায়। ২৬-২৭ মার্চ নাগরিক প্রতিনিধিদের একটি দল সুনামগঞ্জের শালস্নায় সরেজমিনে পরিদর্শনে যান। এই নাগরিক প্রতিনিধিদলে ছিলেন সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রোবায়েত ফেরদৌস, নাগরিক উদ্যোগের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন ও জাসদের কেন্দ্রীয় নেত্রী তনিমা সিদ্দিকী, প্রবীণ কৃষকনেতা অমর চাঁদ দাস, উন্নয়ন সংস্থা এএলআরডি সহকারী প্রকল্প সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট রফিক আহমেদ সিরাজী, আইইডির সহসমন্বয়কারী হরেন্দ্র নাথ সিং, আদিবাসী ফোরামের তথ্য ও প্রচার সম্পাদক দীপায়ন খীসা, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পারভেজ হাসেমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মী। সংবাদ সম্মেলনে কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, 'রাজনৈতিক দলের মদদ ছাড়া এই সাম্প্রদায়িক শক্তির বেড়ে ওঠা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, সব রাজনৈতিক দল ও সরকারকে এই সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মদদ দেওয়া বন্ধ করতে হবে।' এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা, মাঠ প্রশাসনের যেসব কর্মকর্তা এ ঘটনা রুখতে ব্যর্থ হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ, আক্রান্তদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও ঘরবাড়ি পুনর্র্নিমাণসহ প্রতিনিধিদল আট দফা সুপারিশ করেছে এ সময়।