করোনার কারণে এবারও হচ্ছে না বৈসাবি উৎসব

প্রকাশ | ১২ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০

খাগড়াছড়ি ও রাজস্থলী (রাঙামাটি) প্রতিনিধি
পার্বত্য চট্টগ্রাবেসবাসরত পাহাড়ি সম্প্রদায়ের অন্যতসামাজিক উৎসব বৈসাবি। ১৯৮৫ সাল থেকে খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান জেলায় বসবাসরত চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের উদ্যোগে উৎসব পালন করে আসছে তারা। পাহাড়ে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বড় তিনটি সম্প্রদায় বৈসাবি উৎসব পালন করে থাকে। ত্রিপুরাদের বৈসু, মারমাদের সাংগ্রাই আর চাকমাদের বিঝু- তিন উৎসবের আদ্যাক্ষর নিয়ে বৈসাবি উৎসবের নামকরণ করা হয়েছে। গত বছরের মতো বছরেও বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে হচ্ছে না পাহাড়ের প্রাণের উৎসব। ১২ এপ্রিল ভোরে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে পাহাড়ে শুরু হয় উৎসব। ১২ এপ্রিল শুরু হয়ে বৈসাবি উৎসব চলে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত, তবে কোথাও কোথাও উৎসব সপ্তাহ ধরে চলে। সারাদেশে একই নিয়পেহেলা বৈশাখ উদযাপিত হলেও পাহাড়ে ভিন্ন আমেজে আর উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হয় বৈসাবি। স্থানীয় বাঙালিরাও একাকার হয়ে মিশে যায় বৈচিত্র্যময় উৎসবে। বছর বৈসাবি উৎসবকে ঘিরে পাহাড়ে নেই উৎসবের আমেজ। থাকছে না বিভিন্ন সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণে বৈসাবি উৎসবের শোভাযাত্রা আর খাগড়াছড়ির পানখাইয়াপাড়ার বটতলায় বর্ণিল জলকেলি উৎসব। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য পার্থ ত্রিপুরা জুয়েল, বলেন, করোনার কারণে গত বছর উৎসব পালন করতে পারিনি। বছরও করোনা পিছু ছাড়েনি। তবে মুহূর্তে উৎসব পালনের চেয়ে নিজেদের বেঁচে থাকাটাই জরুরি। তাই বছরও বৈসাবি উৎসবের কোনো আনুষ্ঠানিকতা থাকছে না। এদিকে আমাদের রাজস্থলী (রাঙ্গামাটি) প্রতিনিধি জানান, করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে এবারও রাজস্থলী উপজেলায় হচ্ছে না প্রাণের বৈসাবি উৎসব। প্রতিবছর এপ্রিলের প্রথসপ্তাহ থেকে এই উৎসব উদযাপনে ব্যস্ত থাকত পাহাড়ি জনগোষ্ঠী। প্রতিটি এলাকায় হতো বর্ণিল এই উৎসবের আয়োজন। ঐতিহ্যবাহী ঘিলা খেলা, গ্যাংঘুলি গানের আসর, র?্যালি পাচন ও পিঠা পায়েস রান্না, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজনে মুখরিত থাকত পাহাড়ের প্রতিটি অঞ্চল। মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে গত বছরের মতো এবারও উৎসবের বর্ণিল আয়োজন বাদ দিয়ে একান্ত ঘরোয়াভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে এই উৎসব পালন করবেন পাহাড়ে বসবাসরত জনগণ। রাজস্থলী উপজেলা সাংগ্রাই উৎসব কমিটির সভাপতি জানান, আমাদের সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন ছিল, কিন্তু করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়া সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জনসমাগএড়াতে আমরা এই বছর আমাদের উৎসব বড় পরিসরে না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তবে বিহারে বিহারে আমরা স্বাস্থ্য বিধি মেনে স্বল্প পরিসরে পূজা দেব এবং পরিবার পরিজন নিয়ে ঘরে বসে এই উৎসব পালন করব। মারমা সাংস্কৃতিক সংঘের সাধারণ সম্পাদক উথোয়াইচিং মারমা জানান, সাংগ্রাঁই তাদের প্রাণের উৎসব। এই উৎসবকে ঘিরে কত প্রস্তুতি থাকত তাদের, কিন্তু করোনার কারণে তারা বছরও এই মহাআনন্দ উৎসব থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।