নিয়োগ ইসু্য

রাবিতে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ

প্রকাশ | ০৭ মে ২০২১, ০০:০০

রাজশাহী অফিস
বৃহস্পতিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রম্নপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে -যাযাদি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রম্নপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত কয়েকদিন ধরে চলা অস্থিরতার মধ্যে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করলে রাবি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ও কর্মচারীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। সময় পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ঘটনায় দুই কর্মকর্তাসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ভিসির বিদায় বেলায় বাণিজ্যের মাধ্যচোকরি নেওয়ার চেষ্টা চলছে- এমন খবরে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা দুপুর ১২টার দিকে চাকরিপ্রত্যাশী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। সময় মহানগর ছাত্রলীগ সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আব্দুলস্নাহ আল মামুন ও সেকশন অফিসার মাসুদের ওপরও হামলা চালানো হয়। পরে রাবি ছাত্রলীগ এগিয়ে এলে তাদের ওপরও হামলা চালানো হয়। সময় রাবি ছাত্রলীগ সংগঠিত হয়ে ধাওয়া করলে মহানগর ছাত্রলীগের সাথে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে মহানগর ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা পালিয়ে যান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাবি ভিসি আব্দুস সোবহানের মেয়াদের শেষ দিন বৃহস্পতিবার। তিনি চাকরিপ্রত্যাশী ১২৫ জন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীকে নিয়োগ দিয়েছেন বলে গুজব ছড়িয়ে পড়লে মহানগর ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে হামলা করে। ঘটনার পরে রাবি ছাত্রলীগ ও কর্মচারীরা ভিসির ভবনের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকেন। ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সুলতানুল ইসলাটিপু বলেন, 'আমরা জানতে পেরেছি উপাচার্য অবৈধভাবে ১২২ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন। এতে মতনৈক্য হওয়ায় উভয় পক্ষের সংঘর্ষ হয়।' নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাবলেন, 'নিষেধাজ্ঞা থাকা অবৈধ নিয়োগ সংক্রান্ত কোনো বিষয়ের সাথে আমার সম্পর্ক নেই। নিয়োগ হয়েছে কি না সেটাও আমার জানা নেই।' এদিকে, দুপুর আড়াইটার দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে ক্যাম্পাস ছেড়েছেন উপাচার্য প্রফেসর এআব্দুস সোবহান। শেষ মুহূর্তে কোনো নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কিনা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে 'পরে জানতে পারবেন' বলেন উপাচার্য। এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় হাউজিং সোসাইটিতে (বিহাস) বসবাস করবেন বলে জানিয়ে সব প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান উপাচার্য। তবে উপাচার্য তার শেষ কর্মদিবসে ৮৫ জনকে এডহক ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়েছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, উপাচার্য এআব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত বছর ডিসেম্বরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের নিয়োগ স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়। বৃহস্পতিবার উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে অবৈধ নিয়োগের আশঙ্কায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থি দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকসহ চাকরিপ্রার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মীরা লাগাতার আন্দোলন করে আসছিল। গত ৪ উেপাচার্যের শেষ সিন্ডিকেট মিটিংকে কেন্দ্র করে শিক্ষকরা স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের কাছে লাঞ্ছিত হন। সময় এক ছাত্রলীগ কর্মী শিক্ষকদের প্রকাশ্যে গুলি করে মারার হুমকি দেওয়া হয়।