জুমাতুল বিদায় করোনা মুক্তির দোয়া

প্রকাশ | ০৮ মে ২০২১, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
শুক্রবার যথাযথ মর্যাদায় জুমাতুল বিদা আদায় করেন ধর্মপ্রাণ মুসলিস্নরা। এ সময় করোনা সংক্রমণ থেকে মুক্তির জন্য মহান আলস্নাহতায়ালার কাছে দোয়া চান তারা। ছবিটি বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ থেকে তোলা -স্টার মেইল
যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা শুক্রবার জুমাতুল বিদা পালন করেছেন। সারাদেশের মসজিদগুলোয় রমজান মাসের শেষ জুমায় অংশ নিয়েছেন বিপুলসংখ্যক মুসলিস্ন। নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাতে তারা মহান আলস্নাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা ও রহমত কামনা করে করোনা মহামারি থেকে মুক্তি চেয়েছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় কর্তৃপক্ষের নানা উদ্যোগে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম মুসলিস্ন দেখা গেছে। মুসলিস্নদের মধ্যে মাস্ক ব্যবহার, দূরত্ব রক্ষার বিষয়টি লক্ষণীয় ছিল। বায়তুল মোকাররমে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান। এছাড়া এ সময় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সব পরিচালক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারণ মুসলিস্নরা উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় এই মসজিদে জুমার নামাজ পড়ে এক মুসলিস্ন জানান, জুমাতুল বিদার নামাজের পর মোনাজাতে দেশ ও জাতির সুরক্ষা কামনা করে মোনাজাত করা হয়েছে। করোনাভাইরাস থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করা হয়েছে সৃষ্টিকর্তার কাছে। জাতীয় মসজিদ ছাড়াও ঢাকার কলাবাগান, পান্থপথ, আজিমপুর, মিরপুর, বাড্ডা, বনশ্রী, সেগুনবাগিচা এলাকার বিভিন্ন মসজিদের মুসলিস্নরা জানান, জুমার নামাজের পর মোনাজাতে নানা প্রসঙ্গে সৃষ্টিকর্তার সাহায্য প্রার্থনা করা হয়। রমজানের শেষ শুক্রবার খুতবায় বিদায় জানানো হয় আত্মশুদ্ধি ও সংযমের এ মাসকে। সে সঙ্গে খতিবরা জুমার খুতবায় আলোচনা করেন রমজানের তাৎপর্য ও কোরআন নাজিলসহ ইসলামী জীবনযাপন সম্পর্কে। খুতবা শেষে রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাসের শেষ শুক্রবারে জুমার নামাজ আদায়ে এক কাতারে দাঁড়িয়ে পড়েন মুসলিস্নরা। চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামেও দিনটি ইবাদত-বন্দেগি ও জিকির-আসকারের মাধ্যমে পালন করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। জুমার নামাজ শেষে মহান আলস্নাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা ও রহমত কামনা করেন মুসলিস্নরা। নগরের জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ, আন্দরকিলস্না শাহী জামে মসজিদ, নবাব ওয়ালি বেগ খাঁ জামে মসজিদ, শেখ বাহার উলস্নাহ শাহী জামে মসজিদ, চন্দনপুরা জামে মসজিদসহ বিভিন্ন মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন মুসলিস্নরা। খুতবায় রমজান মাসের ফজিলত ও ইবাদতের গুরুত্ব ব্যাখ্যাসহ বিশেষ দোয়া করা হয়। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ এবং মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করার পাশাপাশি করোনা মহামারি থেকে সবাইকে রক্ষার জন্য দোয়া করা হয়। খুলনা : খুলনার প্রায় সব মসজিদেই ছিল মুসলিস্নদের ভিড়। জুমাতুল বিদাকে কেন্দ্র করে নামাজ শুরুর আগেই সব মসজিদ কানায় কানায় ভরে যায়। মসজিদের ভেতরে ঠাঁই না হওয়ায় অনেকে বাইরে নামাজ আদায় করেন। বায়তুন-নূর মসজিদ কমপেস্নক্সে, খুলনা আলিয়া মাদ্রাসা মসজিদ, টাউন জামে মসজিদ, বায়তুশ শরফ জামে মসজিদ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, সরকারি বিএল কলেজ জামে মসজিদ, নিরালা তাবলিগ মসজিদ, আল-হেরা জামে মসজিদ, মতি মসজিদ, বাংলাদেশ ব্যাংক কোয়াটার জামে মসজিদ, ময়লাপোতা বায়তুল আমান জামে মসজিদসহ নগরী ও জেলার উপজেলা পর্যায়ের মসজিদগুলোতে সবচেয়ে বেশি ভিড় ছিল। জুমা শেষে আলস্নাহর দরবারে ক্ষমা ও রহমত কামনা করেন মুসলিস্নরা। মসজিদের ইমাম ও খতিবরা করোনার সংক্রমণ থেকে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মানুষের সুরক্ষা, অসুস্থদের দ্রম্নত আরোগ্য লাভ, মহামারি পরিস্থিতির দ্রম্নত উন্নতি এবং দেশ ও জাতির সার্বিক কল্যাণ কামনা করে নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন। রাজশাহী : ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে ও ইহকাল এবং পরকালের মুক্তি কামনায় শুক্রবার রাজশাহীতে পবিত্র জুমাতুল বিদার নামাজ আদায় হয়েছে। করোনা সংক্রমণ রোধে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে জুমাতুল বিদা পালন করেন ধর্মপ্রাণ মুসলিস্নরা। জুমার আজানের পর রাজশাহী কেন্দ্রীয় শাহ্‌ মখদুম (রহ.) দরগা মসজিদ, সাহেব বাজার বড় মসজিদ ও হেতম খাঁ মসজিদসহ নগরের সব মসজিদে নামাজে বাড়তি ভিড় লক্ষ্য করা যায়। নামাজ শুরুর আগেই সব মসজিদ মুসলিস্নতে পরিপূর্ণ ছিল। মসজিদ ছাড়িয়ে সড়কে বিস্তৃত হয় জুমার নামাজ। ধর্মপ্রাণ মুসলিস্নরা প্রচন্ড রোদ-গরম উপেক্ষা করে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আলস্নাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় জুমার দুই রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে রাজশাহীসহ গোটা দেশ ও জাতির সুখ, সমৃদ্ধি, কল্যাণ ও মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও শান্তি এবং কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। নামাজ আদায়ের পর মহানগরীর গৌরহাঙ্গা, টিকাপাড়া, কাদিরগঞ্জ, হেতম খাঁসহ বিভিন্ন কবরস্থানে বাবা-মা ও আত্মীয়-স্বজনের কবর জিয়ারত করতে সাধারণ মানুষের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়।