একাধিক মৃতু্যও থামাতে পারেনি পেটে করে ইয়াবা পাচার

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পেটের ভেতরে বহন করে আনা সাড়ে পাঁচ হাজার ইয়াবাসহ রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে মাদক কারবারি চক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছের্ যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্(যাব)

প্রকাশ | ২১ মে ২০২১, ০০:০০

ম যাযাদি রিপোর্ট
মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ পেট। দেহের এ অংশে মানুষের জীবন বাঁচিয়ে রাখতে জরুরি বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের পাশাপাশি বিশেষ স্থান জুড়ে থাকে পাকস্থলী। যেখানে মানুষের গ্রহণ করা খাদ্য ও পানীয় থেকে নানা জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেহের প্রয়োজনীয় শক্তির যোগান দেয়া হয়। দেহের এমন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকেও এখন ব্যবহার করা হচ্ছে ভয়ংকর মাদক পাচারে। সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করার পর কঠোর অভিযানেও বন্ধ করা যাচ্ছে না মাদক পাচার। পাচারকারীরা প্রতিদিনই কৌশল পাল্টাচ্ছে। দেশে বর্তমানে বেশি ব্যবহৃত মাদকের তালিকার সবচেয়ে উপরে আছে ইয়াবা। বিভিন্ন পন্থায় মাদককারবারীরা পাচার করছে নিষিদ্ধ এই ট্যাবলেট। টাকার বিনিময়ে ইয়াবা পাচারে ব্যবহার করছেন নিজের পেটকেও। বিশেষ কায়দায় ছোট পলিথিনের পুঁটলি তৈরি করে মুখ দিয়ে গিলে পাকস্থলীতে করে ইয়াবা বহন করছেন তারা। এতে করে পুঁটলি ফেটে ইয়াবা গলে একাধিক পাচারকারীর মৃতু্য হলেও কমেনি এমন ভয়ঙ্কর পদ্ধতিতে ইয়াবা পাচার। মঙ্গলবার সন্ধ্যায়ও পেটের ভেতরে বহন করে আনা সাড়ে পাঁচ হাজার ইয়াবাসহ রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে মাদক কারবারি চক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছের্ যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্(যাব)। আটককৃতরা হলেন- মো. মামুন মলিস্নক (৩৮) ও দীপ্ত হালদার ওরফে দীপ (২৫)। বৃহস্পতিবার দুপুরের্ যাব-২-এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এএসপি আবদুলস্নাহ আল মামুন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কলেজ গেটের মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ার এলাকায় অবস্থান নিয়ে সন্দেহভাজন দুই মাদক কারবারিকে আটক করের্ যাবের একটি দল। তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাদক বহনের বিষয়টি অস্বীকার করলেও তাদের আচার-আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের পর তারা ইয়াবার কথা স্বীকার করে। তারা বিশেষ কায়দায় ছোট পলিথিনের পুঁটলি তৈরি করে মুখ দিয়ে গিলে পাকস্থলীতে ইয়াবা বহন করছিল। এএসপি আবদুলস্নাহ আল মামুন আরও বলেন, প্রথমে তাদের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক এক্স-রে করে তাদের পেটের ভেতরে বাহ্যিক বস্তুর অস্তিত্ব দেখতে পায়। কর্তব্যরত চিকিৎসকের চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র ও পরামর্শ অনুযায়ী তাদেরকে মঙ্গলবার থেকে পরদিন বুধবার পর্যন্ত জরুরি বিভাগের তত্ত্বাবধানে পর্যায়ক্রমে পায়ুপথ দিয়ে মামুন মলিস্নকের পেট থেকে ৭৫টি ও দীপ্ত হালদারের পেট থেকে ৩৫টি পুঁটলি বের করা হয়। ১১০টি পুঁটলি থেকে সর্বমোট ৫৫৫০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীকালে জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরও জানায়, দুজনে মিলে দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তবর্তী জেলা থেকে মাদক পরিবহণ করে নিয়ে এসে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করত। মাদক পরিবহণের ক্ষেত্রে প্রায়ই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়াতে তারা নিত্য-নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করত।