টিভি মালিকদের প্রধানমন্ত্রী

সামাজিক দায়িত্ব পালন করুন

প্রকাশ | ১১ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার তার কাযার্লয়ে অসুস্থ রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী মিতা হক, আলোকচিত্র সাংবাদিক জালাল উদ্দিন হায়দারের পরিবারসহ ৬ জনের হাতে আথির্ক অনুদানের চেক তুলে দেন Ñফোকাস বাংলা
সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালনে বেসরকারি টেলিভিশন স্টেশনগুলোর প্রতি আহŸান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেসরকারি টেলিভিশন স্টেশনগুলোর মালিকদের অ্যাটকোর পরিচালকরা সাক্ষাৎ করতে গেলে তাদের উদ্দেশে এই আহŸান রাখেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘লাভের দিকটা যেমন দেখছে, সমাজের প্রতিও তাদের দায়িত্ব রয়েছে। সমাজের প্রতি দায়িত্বটাই সব থেকে গুরুত্বপূণর্।’ অ্যাটকোর পরিচালকরা বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কাযার্লয়ে গিয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা সদ্যপ্রণীত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রতি সমথর্ন জানিয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানান। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিভিন্ন ধারা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খবর্ করবে দাবি করে এর বিরোধিতা করছে সাংবাদিক ও অধিকারকমীর্রা। অ্যাটকোর নেতারা অনলাইন প্রচার মাধ্যমগুলোকে জবাবদিহির মধ্যে আনতে প্রধানমন্ত্রীকে আহŸান জানান। প্রধানমন্ত্রী সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা চাই, সমাজের যেন অশুভ কাজ না হয়। সমাজটা যেন সুন্দরভাবে গড়ে উঠতে পারে। সমাজটাকে যেন আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। সংস্কৃতিচচার্টা যেন আরও বিকশিত হয়।’ সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরতেও বেসরকারি টেলিভিশন মালিকদের প্রতি আহŸান জানান প্রধানমন্ত্রী। ‘খাদ্য উৎপাদন, কৃষি উৎপাদন, আমাদের সমাজকে আরও কীভাবে উন্নত করা যায়। যত বেশি প্রচার করে যাচ্ছি, মানুষের মাঝে পরিবতর্নটা ততো হচ্ছে। সেদিকগুলোকে নজর দেয়ার জন্য আমি অনুরোধ জানাব।’ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ যেন দেশের নাগরিকদের কোনো ক্ষতির কারণ না হতে পারে, সে দিকে সরকারের নজরদারি থাকার কথাও মনে করিয়ে দেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘জঙ্গিবাদ আর সন্ত্রাস বিশ্বব্যাপী একটা সমস্যা। আমাদের দেশে এখন পযর্ন্ত আমরা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি। সারাক্ষণ আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। যেন কোনোভাবে মানুষের ক্ষতি করতে না পারে।’ আথর্-সামাজিক উন্নয়নের কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এত টেলিভিশন চ্যানেল চলত না, যদি না আথর্-সামাজিক উন্নতি না হতো। গ্রামে এখন টেলিভিশন আছে। আথির্ক স্বচ্ছলতা আসছে বলেই আপনারা এতগুলো চ্যানেল চালাতে পারছেন।’ সপ্তম জাতীয় সংসদ নিবার্চনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর বাংলাদেশে প্রথম বেসরকারি টিভি একুশে টেলিভিশনের অনুমতি দেয়া হয়। শেখ হাসিনা বলেন, ‘এর আগে যারা ক্ষমতায় ছিল, বেসরকারি খাতে রেডিও দেবে, টেলিভিশন দেবে, এই চিন্তা কারও ছিল না। তখন রেডিও আর টিভিটা ছিল ক্ষমতা দখলের একটা মাধ্যম। একটা মাত্র চ্যানেল ছিল বিটিভি।’ বেসরকারি টেলিভিশন অনুমতি দিতে গিয়ে ‘অনেক বাধা’ পাওয়ার কথাও জানান শেখ হাসিনা। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর থেকে ৪১টি টেলিভিশনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩০টি চ্যানেল সম্প্রচারে রয়েছে। ‘৩০টি প্রাইভেট টেলিভিশন চলছে, এটা কম না,’ বলেন শেখ হাসিনা। সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এমনি এমনি হয় না; সময় দিতে হয়, কাজ করতে হয়, চিন্তা করতে হয়, কাযর্কর করার জন্য ব্যবস্থা নিতে হয়।’ সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগে উন্নয়ন নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষকে কিন্তু এটা চিন্তা করতে হবে; সব কিছু সরকারের ওপর নিভর্রশীল হলে হবে না। নিজেরা কতটুকু কী করতে পারলাম। নিজেরা কী করতে পারি। যে এলাকায় বসবাস করি; সে এলাকার জন্য কতটুকু করতে পারি, এলাকার মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারি; সে চিন্তাটাও মানুষের মধ্যে থাকতে হবে।’ এ ক্ষেত্রে তরুণ প্রজন্মের সক্রিয়তা প্রত্যাশা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে; আমরা নিজেদের কাজ নিজেরা করি, নিজেরা করব এবং নিজেরা করার মতো দক্ষতাও আমরা অজর্ন করব। সরকারের মুখাপেক্ষী হয়ে না, আমরা নিজেরাই নিজেদের দেশের উন্নয়ন করব।’