পীরগঞ্জে ৫শ' টাকার রেল টিকিট ১২শ' টাকা

কাউন্টারে নেই কিন্তু কালোবাজারে আছে

প্রকাশ | ১১ জুন ২০২১, ০০:০০

এন কে রানা, পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও)
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে সক্রিয় হয়ে উঠেছে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারিরা। কাউন্টার ও অনলাইনে টিকিট না মিললেও নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে আড়াই গুণ চড়া দামে ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে কালোবাজারিদের কাছ থেকে। ৫শ' টাকার টিকিট ১২শ' টাকায় কিনতে হচ্ছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ঢাকাগামী রেলযাত্রীরা। ক্ষোভ দেখা দিয়েছে রেলযাত্রীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যেও। যাত্রীদের অভিযোগ, স্টেশন মাস্টারের সহযোগিতায় সব টিকিট হাতিয়ে নিচ্ছে কালোবাজারি চক্রটি। অভিযোগ বিষয়ে জানতে স্টেশনে গিয়েও মাস্টার মুক্তারুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি। পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁও-পীরগঞ্জ-দিনাজপুর হয়ে ঢাকা রেলপথে প্রতিদিন তিনটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করছে। পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা দ্রম্নতজান এক্সপ্রেস সকাল ৯টা ১৮ মিনিটে, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস দুপুর ১.৩৫ মিনিটে, একতা এক্সপ্রেস রাত ১০টা ১৮ মিনিটে পীরগঞ্জ রেল স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। পীরগঞ্জ, রানীশংকৈল ও হরিপুর উপজেলার যাত্রীরা এ স্টেশন থেকেই ট্রেনে ওঠানামা করে। এ তিনটি উপজেলার যাত্রীদের জন্য এ স্টেশনে পঞ্চগড় এক্সপ্রেসের ২৪টি, দ্রম্নতযানের ১২টি এবং একতার ২২টি আসন বরাদ্দ রয়েছে। তবে করোনাকালীন বরাদ্দের অর্ধেক আসনে যাত্রী পরিবহণ করা হচ্ছে। রেল ভ্রমণ নিরাপদ ও আরামদায়ক হওয়ার কারণে এ স্টেশনে ট্রেনের টিকিট পেতে যাত্রীরা প্রতিনিয়ত হুমড়ি খেয়ে পড়েন। কিন্তু সাধারণ কোনো যাত্রীই স্টেশন কাউন্টার থেকে ঢাকা যাওয়ার নির্ধারিত আসনের টিকিট পান না। টিকিট নিতে গেলেই কাউন্টার থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় টিকিট নেই। তবে বাড়তি টাকা দিলে টিকিট কালোবাজারিদের মাধ্যমে পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে ৫শ' টাকার টিকিটের জন্য যাত্রীদের গুনতে হয় এক হাজার থেকে ১২শ' টাকা। অভিযোগ রয়েছে, এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা সরাসরি জড়িত। জগথা মহলস্নার বাবুল নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, তার বোন-ভগ্নিপতি ৬ জুন ট্রেনে ঢাকায় যাবেন। তিনটা টিকিট সংগ্রহের জন্য তিনি চার দিন অগে থেকেই স্টেশনে যোগাযোগ করেন। কিন্তু কাউন্টার থেকে কোনো টিকিট পাননি। পরে কালোবাজারিদের কাছ থেকে ৫শ' টাকার টিকিট ১২শ' টাকা করে কিনতে বাধ্য হন। ১২শ' টাকা করে কেনা তার তিনটি টিকিটের মধ্যে দুইটিই পীরগঞ্জ স্টেশন কাউন্টার থেকে ইসু্য করা। অপরটি অনলাইনে সংগৃহীত। নিজামউদ্দীন নামে এক যাত্রী জানান, 'ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য স্টেশন কাউন্টারে অনেকবার গেছি। একবারও টিকিট পাইনি।' সঞ্জয় রায় নামে আরেক জন জানান, 'কালোবাজারিরা একটি টিকিট চড়া দামে একাধিক যাত্রীর কাছে বিক্রি করছেন। এতে ট্রেনে বসার আসন নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে অনেককে, যা মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে।' এ বিষয়ে স্টেশন মাস্টার মুক্তারুল ইসলামের মতামত জানতে বুধবার দুপুরে স্টেশনে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার সেল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।