আজকের যায়যায়দিন

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৩ জনের মৃতু্য হয়েছে। এর মধ্যে ৬ জনের করোনা পজেটিভ ছিল। বাকিরা উপসর্গ নিয়ে মারা যান। মৃতদের মধ্যে ১২ জন পুরুষ ও একজন মহিলা বলে জানান হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী।

তিনি জানান, শনিবার সকাল ৬টা থেকে রোববার সকাল ৬টার মধ্যে বিভিন্ন সময় ১৩ জন মারা যান। এদের মধ্যে রাজশাহীর দুই, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছয়, নওগাঁর তিন, নাটোর ও কুষ্টিয়ার একজন করে। মারা যাওয়া করোনা শনাক্তদের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জে পাঁচ ও নওগাঁর একজন।

শামীম ইয়াজদানী বলেন, মৃতদের মধ্যে ছয়জনের বয়স ৬০ বছরের ওপর এবং দুইজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। বাকিদের বয়স ৩১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে।

তিনি বলেন, এ নিয়ে গত ১৩ দিনে (১ জুন সকাল ৬টা থেকে ১৩ জুন সকাল ৬টা পর্যন্ত) এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ১২৫ জন। এর মধ্যে ৭০ জনই মারা গেছেন করোনা শনাক্ত হওয়ার পর। বাকিরা উপসর্গ নিয়ে মারা যান।

গরমে বিদু্যতের চাহিদা বাড়ছে উৎপাদনে অনিশ্চয়তা

পরিচালক বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন ৪২ জন। ছুটি নিয়েছেন ৩৫ জন। ২৭১ বেডের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছেন ২৯৪ জন। অতিরিক্ত রোগীদের বিকল্পভাবে বেড বাড়িয়ে চিকিৎসা

দেওয়া

হচ্ছে।

নতুন ভর্তি রোগীদের মধ্যে রাজশাহীর ২৭, চাঁপাইনবাগঞ্জের সাত, নাটোরের তিন ও নওগাঁর পাঁচজন রয়েছেন। ভর্তি ২৯৪ জনের মধ্যে রাজশাহীর ১৩০, চাঁপাইয়ের ১০৮, নাটোরের ১৪, নওগাঁর ২৮, পাবনার চার ও কুষ্টিয়ার একজন রয়েছেন। হাসপাতালের আইসিইউতে আছেন ১৮ জন।

একদিনে সংক্রমণ বেড়েছে ১৬%

টানা তৃতীয় দিন কমার পর রাজশাহী আবারও বেড়েছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। শনিবার দুইটি ল্যাবে করোনার 'নতুন হটস্পট' রাজশাহী জেলার ৩৪১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ১৮৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে।

শনিবার রাতে প্রকাশিত দুটি পিসিআর ল্যাবের নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে এতে দেখা যায়, আগের দিনের চেয়ে ১৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেড়ে করোনা শনাক্তের হার হয়েছে ৫৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ। যা আগের দিন শুক্রবার ছিল ৩৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ৩৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং গত বুধবার শনাক্তের হার ছিল ৪১ দশমিক ৮৪ শতাংশ।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক শামীম ইয়াজদানী জানান, শনিবার রাজশাহীর দুটি ল্যাবে চার জেলার মোট ৬৫৩ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা পজেটি এসেছে ২৩০ জনের।

তিনি জানান, রাজশাহী জেলার ৩৪১ নমুনা পরীক্ষ করে ১৮৩ জনের করোনা পজেটিভ আসে। এ ছাড়া নাটোরের ১৫০ নমুনা পরীক্ষায় ১৯, নওগাঁর চার নমুনার মধ্যে ২ জন এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১৫৮ নমুনা পরীক্ষায় ২৬ জনের করোনা পজেটিভ আসে।

লকডাউন চলছে

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে রাজশাহীতে সাতদিনের 'সর্বাত্মক লকডাউনের' তৃতীয় দিন চলছে। শুক্রবার বিকেল থেকে এই লকডাউন শুরু হয়। চলবে আগামী ১৭ জুন মধ্য রাত পর্যন্ত।

লকডাউনের তৃতীয় দিন সকাল থেকেই রাজশাহী নগরীর রাস্তাঘাট ফাঁকা রয়েছে। দোকানপাটও বন্ধ রয়েছে। তবে কিছু মানুষকে হেঁটে যেতে দেখা গেছে।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, মহানগরীতে জরুরি সেবা পরিবহণ ও ওষুধের দোকানপাট খোলা ছাড়া সব বন্ধ রয়েছে। নগরীর সবকয়টি প্রবেশমুখে চেকপোস্ট বসিয়ে শক্তভাবে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। বিনাকারণে কাউকেই শহরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এ ছাড়া নগরজুড়ে রয়েছে পুলিশি টহল।