ক্রেডিট কাডের্ সুদহারের তথ্য দেয়নি ২৫ ব্যাংক

সংশ্লিষ্ট কমর্কতার্রা জানান, আর তাগাদাপত্র পাঠানো হবে না। এরই মধ্যে দুবার পাঠানো হয়েছে। পূজার ছুটির পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে

প্রকাশ | ১৯ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
ক্রেডিট কাডের্ আগ্রাসীভাবে বেপরোয়া সুদ আদায়কারী ব্যাংকগুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে দুই দফা চিঠি পাঠালেও এখনো তথ্য দেয়নি ২৫ ব্যাংক। বাকি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ১৮ ব্যাংকের সুদহার অনেক বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ক্রেডিট কাডর্ ঋণের সুদের হার জানতে চেয়ে প্রথম ধাপে (২৮ জুন) পাঠানো চিঠির কোনো উত্তর না পেয়ে দ্বিতীয় ধাপে (১৪ আগস্ট) পুনরায় তাগাদাপত্র পাঠানো হয়। কিন্তু এখনো পযর্ন্ত ২৫ ব্যাংক ক্রেডিট কাডর্ সুদের কোনো তথ্য জানায়নি। পূবালী, রূপালী, অগ্রণী, বেসিক, বিডিবিএল, সীমান্ত, শাহজালাল, বিকেবি, আল আরাফা, ফারমাসর্, ফাস্টর্ সিকিউরিটি, আইসিবি, এনআরবি গেøাবাল, ইউনিয়ন, উত্তরা, আল ফালাহ, সিটি এনএ, হাবিব, এইচএসবিসি, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচারাল, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, উরি ব্যাংকসহ আরও কয়টি ব্যাংক ক্রেডিট কাডর্ ঋণ সুদহারের কোনো তথ্য জানায়নি। ৩২ ব্যাংক তথ্য দিলেও ১৮ ব্যাংকের ক্রেডিট কাডের্ও সুদহার অনেক বেশি। এদের মধ্যে জনতা, ঢাকা, ইস্টানর্, এক্সিম, মিডল্যান্ড, মধুমতি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, ন্যাশনাল, এনসিসি, এনআরবিসি, প্রাইম, স্ট্যান্ডাডর্, ইউসিবি, কমাশির্য়াল ব্যাংক অব সিলোন এবং আরও কয়েকটি ব্যাংক গ্রাহকদের কাছ থেকে চড়া সুদ আদায় করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগে খেঁাজ নিয়ে জানা যায়, প্রথমবার চিঠি পাঠানোর পর এক্সিম ব্যাংক, ফারমাসর্ ব্যাংক, এনআরবি গেøাবাল ব্যাংক, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচারাল ব্যাংক ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়াসহ আরও কয়েকটি ব্যাংক উত্তর না করলেও দ্বিতীয় তাগাদাপত্রের সাড়া দিয়েছে এসব ব্যাংক। তাদের এসব পাঠানো উত্তর এখন বাংলাদেশ বাংকে জমা রয়েছে। পূজার ছুটির পর এগুলো বিস্তারিত পড়া হবে। কোন ব্যাংক ক্রেডিট কাডের্র ওপর কী পরিমাণ সুদ বেশি নিচ্ছে এবং কেন নিচ্ছে এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কমর্কতার্রা এ প্রসঙ্গে জানান, আর তাগাদাপত্র পাঠানো হবে না। এরই মধ্যে দুবার পাঠানো হয়েছে। পূজার ছুটির পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়া ব্যাংক সুদের হার এক অঙ্কে রাখার ব্যাপারটি মাথায় রেখে সব বাণিজ্যিক বাংকে নিদের্শনা দেয়া হবে বলে জানান তিনি। উল্লেখ্য, ‘ইলেক্ট্রনিক মানি’ খ্যাত ক্রেডিট কাডর্ বতর্মান আধুনিক জীবনের গুরুত্বপূণর্ অনুষঙ্গ হয়ে দঁাড়িয়েছে। দ্রæত আর সহজ লেনদেনের সুবিধা ছাড়াও এ কাডর্ দিয়ে বাকিতে জিনিসপত্র কেনা যায়। তাছাড়া নানান লোভনীয় অফার যেমন ‘ক্যাশ ব্যাক অফার’, ‘স্পেশাল ডিসকাউন্ট’, প্লেনের টিকিট কাটতে বিশেষ মূল্যছাড়, এমনকি দেশের বাইরেও রয়েছে এর হরেক আকষর্ণ। কিন্তু এগুলোকে এখন প্রলোভনের ফঁাদে ফেলে চড়া সুদ আদায় করার কৌশল বলে মনে করছেন ক্রেডিট কাডর্ ব্যবহারকারীরা। ভুক্তভোগীরা বলছেন, ক্রেডিট কাডের্ ব্যাংকগুলো ইচ্ছেমতো সুদ নিচ্ছে; যা বিশ্বের অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী ক্রেডিট কাডের্র সুদের ওপরে যে সীমা নিধার্রণ করে দেয়া হয়েছে এগুলো মানা হচ্ছে না। এ অবস্থায় ক্রেডিট কাডের্র সুদহারের লাগাম টেনে ধরতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুস্পষ্ট নিদের্শনা বা গাইডলাইন থাকা দরকার। বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইন অনুযায়ী কোনো ব্যাংকের অন্য ঋণের মধ্যে সবোর্চ্চ সুদের চেয়ে ৫ শতাংশ বেশি হতে পারবে এসব কাডের্র সুদ হার। কিন্তু এ নীতিমালা অমান্য করে ব্যাংকগুলো তাদের ইচ্ছামাফিক সুদ ও অন্যান্য ফি আদায় করছে যা গ্রাহকদের জন্য আতঙ্কের বিষয়। জানা গেছে, বতর্মান ব্যাংকগুলো ক্রেডিট কাডের্ ১৬ থেকে ৩৬ শতাংশ হারে সুদ নেয়ার কথা বললেও নিচ্ছে ৩০ থেকে ১৪০ শতাংশ পযর্ন্ত।