‘বন্দি জীবনের’ আক্ষেপ শেখ হাসিনার

প্রকাশ | ১৯ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

বিডিনিউজ
সরকারপ্রধান হিসেবে নিরাপত্তার ঘেরাটোপে থাকা জীবনে পুরনো সময় নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বৃহস্পতিবার জেদ্দায় এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করতে গিয়ে সরকারপ্রধান না থাকা অবস্থায় সৌদি আরব ভ্রমণের কথা মনে করে এই আক্ষেপ প্রকাশ করেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই জেদ্দায় এমনও দিন গেছে, তিনটা জায়গায় সভা করেছি। আগের মতো যে মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াতাম, সে সুযোগটা আর এখন হচ্ছে না।’ জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের চ্যান্সারি ভবনের ভিত্তিফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে একথা বলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। তিনি বলেন, ‘এখন একটা প্রটোকলের বেড়াজাল, সিকিউরিটির বন্দি জীবন; এই হয়ে গেছে আমার সমস্যা।’ সরকারপ্রধান হিসেবে কাজের চাপের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সময়ও কম, ‘অনেক অল্প সময়ে অনেক কাজ করতে হচ্ছে। ইচ্ছা থাকলেও জেদ্দায় সবার সঙ্গে কথা বলতে না পারার আক্ষেপ প্রকাশ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, সব থেকে দুঃখ সকলের সাথে সাক্ষাত হলো না। এখানে যারা কয়েকজন উপস্থিত আছেন.. আমার অতি চেনা মুখ। যখন আমরা এসেছি, ওমরাহ করেছি, সবসময় আমাদের সাথে সাথে থেকেছেন, সহযোগিতা করেছেন; সেই কথাগুলো সবসময় মনে পড়ে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপস্থিতিতে এই অনুষ্ঠানে নয় বছরের বেশি সময় সরকার প্রধানের দায়িত্ব পালন করে আসা শেখ হাসিনা বলেন, এখন সময় এত কম! আর, তাছাড়া এই সরকারে থাকলে যে সমস্যাটা হয়ে যায়, সেটা আপনারা বোঝেন। “প্রটোকল, সিকিউরিটি, হাবিজাবি, অনেক কিছু দিয়ে.. মনে হয়, যেন একটা কারাগারে বন্দি।” দেশের অথর্নীতিতে প্রবাসীদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রার অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রেমিটেন্স আমাদের অথৈর্নতিক উন্নয়নের চাবিকাঠি। আমরা প্রবাসীদের সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা নিয়েছি। বিদেশে কাজ করতে যাওয়া বাংলাদেশিদের সংশ্লিষ্ট দেশের আইন মেনে চলার অনুরোধ করেন শেখ হাসিনা। যথাযথ প্রশিক্ষণ গ্রহণ না করে বিদেশে কাজ করতে এসে বিপদের সম্মুখীন হওয়ার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুঃখের বিষয় এটাই; এই যে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি, মহিলা যারা আসে তাদের জন্য, অনেকেই ট্রেনিং করেন না ঠিক মতো। দু’পয়সা খরচা করেই একখানা সাটিির্ফকেট নিয়ে নেয়। আর, বিদেশে এসে বিপদে পড়ে যায়। এখানে অনেকে আছেন; তারা এই কথাটা পৌঁছে দেবেন। ট্রেনিংটা তারই কল্যাণে। তা না হলেই তারা অত্যাচারিত হয়, নিযাির্তত হয়। অনেকেই ট্রেনিং ফঁাকি দিয়ে চলে এসে বিপদে পড়ে। এটা যেন কেউ না করে। কেউ যেন দালালদের খপ্পরে পড়ে বিদেশে না আসে সেজন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকা রাখার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকের অঞ্চলে এই তথ্যটা দিয়ে দেওয়া উচিত; যে দালালদের খপ্পরে পড়ে, সব বিক্রি করে, ফঁাকি দিয়ে কেউ যেন বাইরে আসতে চেষ্টা না করে। আসলেই বিপদে পড়ে যায়। এই ব্যাপারে প্রবাসীরাই সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারেন। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সব রকম সহযোগিতা করে যাচ্ছি।