শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
সুদের হার ৯ থেকে নামিয়ে ৮ শতাংশ নির্ধারণ

বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে কৃষিঋণ নীতিমালা ঘোষণা

যাযাদি রিপোর্ট
  ৩০ জুলাই ২০২১, ০০:০০

করোনাভাইরাসের এ সময়ে চলতি অর্থবছর কৃষি খাতে ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরে নতুন নীতিমালা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত অর্থবছরের জন্য নির্ধারিত ২৬ হাজার ২৯২ কোটি টাকার তুলনায় যা ৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ বেশি। গত বছর বিতরণ করা হয়েছে ২৫ হাজার ৫১১ কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক এসব তথ্য জানিয়েছে।

কৃষি ও পলস্নীঋণের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনায় চলতি অর্থবছরে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকের জন্য ১১ হাজার ৪৫ কোটি টাকা এবং বেসরকারি ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকের জন্য ১৭ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা কৃষি ও পলস্নীঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কৃষিঋণের সুদের হার ৯ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮ শতাংশ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, গত অর্থবছরে ৩০ লাখ ৫৫ হাজার ১৬৬ জন কৃষিঋণ পেয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৬ লাখ নারী ঋণ পেয়েছেন ৯ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা।

করোনা মহামারির কারণে সৃষ্ট আর্থিক সংকট মোকাবিলা ও সরকারের কৃষি ও কৃষকবান্ধব নীতির সঙ্গে মিল রেখে দারিদ্র্য বিমোচন, ক্ষুধা মুক্তি ও গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নের জন্যে গ্রামাঞ্চলে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি অর্থবছরে কৃষি ও পলস্নীঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচি প্রণয়ন করেছে।

এ নীতিমালার উলেস্নখযোগ্য নতুন সংযোজিত বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রাণিসম্পদ খাতের পোল্ট্রি উপখাতের আওতায় সোনালি মুরগি পালনের জন্য ঋণ নিয়মাচার সংযোজন; প্রাণিসম্পদ খাতের পশুসম্পদ উপখাতের আওতায় মহিষ ও গাড়ল পালনের জন্যে ঋণ নিয়মাচার সংযোজন; ফসলভিত্তিক ঋণ নিয়মাচারে উলিস্নখিত একরপ্রতি ঋণসীমা কৃষকদের প্রকৃত চাহিদা ও বাস্তবতার নিরিখে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো বা কমানো; মাছ চাষের ঋণ নিয়মাচারে একরপ্রতি ঋণসীমা বৃদ্ধি করা; ব্যাংকের বিতরণকৃত ঋণের তদারকি আরও জোরদার করতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, মহামারিকালে আনুপাতিক হারে কৃষকরাই সবচেয়ে বেশি অর্থ পরিশোধ করেছেন। এ সময়ে ব্যাংকগুলো কৃষকদের যে পরিমাণ ঋণ দিয়েছে, তার চেয়েও বেশি ঋণ আদায় করেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকৃত কৃষকরা কখনই ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি হন না। এ কারণে ছাড় পেয়েও কৃষকরা ব্যাংকে ঋণের কিস্তি পরিশোধ বন্ধ করেননি। অন্যদিকে সুযোগ পেয়েই দেশের শিল্পদ্যোক্তারা ব্যাংকঋণের কিস্তি পরিশোধ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও বড় বড় শিল্প গ্রম্নপগুলো ব্যাংকের টাকা ফেরত দিচ্ছে না।

ব্যাংক এশিয়ার শীর্ষ নির্বাহী মো. আরফান আলী বলেন, কৃষক ও কৃষি হলো বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণ। মহামারির মধ্যে সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও অনেক বড় গ্রাহক ব্যাংকের ঋণের কিস্তি পরিশোধ করেননি। শিল্পপতিরা সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছেন। কিন্তু কৃষকরা সে সুযোগ নেননি। বরং বেশির ভাগ কৃষকই ব্যাংকের ঋণের কিস্তি যথাসময়ে পরিশোধ করেছেন। কৃষকরা যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তা আগামী দিনে ব্যাংকগুলোর ঋণ নীতিমালা প্রণয়নে ভূমিকা রাখবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অর্থবছরের শুরুতেই ব্যাংকগুলোকে কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কোনো ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হলে সমপরিমাণ অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের হিসাব থেকে কেটে রাখে। পরবর্তী বছরের লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে আগের ব্যর্থতার অংশটি জুড়ে দেওয়া হয়। এভাবেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে