শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আক্রান্ত ও মৃতু্য নিয়ে সরকার মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে :ফখরুল

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৩ আগস্ট ২০২১, ০০:০০
আপডেট  : ০৩ আগস্ট ২০২১, ০০:১২
মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, করোনা সংক্রমণে 'আক্রান্ত ও মৃতু্যর' সংখ্যা নিয়ে সরকার জাতিকে মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে। শুধুমাত্র ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখা ও জনগণকে বিভ্রান্ত করা জন্য সরকার এই তথ্যগুলো দিয়ে প্রতারণা করছে। সোমবার লালমনিরহাট বিএনপির উদ্যোগে জেলার কোভিড-১৯ হেল্প সেন্টারের উদ্বোধন এবং করোনাভাইরাস সংক্রমণে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা প্রদান উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার করোনা মোকাবিলা করতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে এবং জনগণের জীবন নিয়ে তারা ছিনিমিনি খেলছে। এটা যেহেতু বৈশ্বিক মহামারি এবং ভয়াবহ একটি বিষয়, এটাকে মোকাবিলা করতে হবে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে। এজন্য বিএনপি প্রস্তাব দিয়েছিল একটি জাতীয় কমিটি গঠন করে জাতীয় বিশেষজ্ঞসহ জনগণকে সম্পৃক্ত করে এই করোনা মহামারিকে মোকাবিলা করার জন্য। তিনি বলেন, যে কোনা দুর্যোগ অথবা যে কোনো মহামারি পুরোটাই হয়ত নির্মূল করা যায় না, কোনোটারই সমাধান করা যায় না কিন্তু এটা অনেক সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে আয়ত্তে আনা যায় যদি দেশের মানুষকে সম্পৃক্ত করা হয়। আজকে যদি রাজনৈতিক দলগুলো সম্পৃক্ত হতো, এনজিওগুলো সম্পৃক্ত হতো, স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনগুলো সম্পৃক্ত হতে পারত তাহলে পরিস্থিতি এত মারাত্মক আকার ধারণ করত না। মির্জা ফখরুল বলেন, এখন পর্যন্ত সরকারের যে হিসাব তা এতটুকুও সঠিক নয়। তাদের হিসাবে ১২ লাখ ৬৪ হাজার ৩২৮ জন শনাক্ত হয়েছেন- এটা একদম ডাহা মিথ্যা কথা। মানুষজন টেস্টই তো করতে পারছেন না। তারা উপজেলা পর্যায়ে টেস্ট দেয় না। জেলা পর্যায়ে টেস্ট দেয়, সেখানে গিয়েও মানুষ টেস্ট করতে পারে না। ঢাকায় যে পরীক্ষার কেন্দ্রগুলো আছে সেখানেও দুই ঘণ্টা টেস্ট করা হয়। মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার বলছে, আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২০ হাজার ৯১৪ জন মারা গেছে। আমরা চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, পত্রিকাতেই আছে বাড়িতে মৃতু্যর সংখ্যা হচ্ছে ৬৫ ভাগ। তাহলে এই ২০ হাজার ৯১৪ জনের সঙ্গে ৬৫ ভাগ যোগ করলে এই সংখ্যা এক লাখের নিচে কখনোই না। তিনি বলেন, করোনা নিয়ে সরকারের নানা অসঙ্গতি রয়েছে। এই কথাটা বিএনপি বারবার বলে আসছে। সরকার প্রথমেই ভুল করেছে এবং সেটা জেনেশুনেই ভুল করেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকার জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে, এটা কোনো দায়িত্বশীল সরকার করতে পারে না। তিনি বলেন, এই সরকার তাদের বিত্তের জন্য, তাদের টিকে থাকার জন্য শুধুমাত্র আমলাদের ওপর নির্ভর করছে। দেশের অনেক জেলায় আইসিইউ বেড নেই, অক্সিজেন নেই। সরকার এসব নিয়েও মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে। 'বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সঙ্গে জিয়াউর রহমান সম্পৃক্ত' ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের এরকম বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ক্ষমতাসীনদের কাজ হচ্ছে সারাক্ষণ বিএনপিকে দোষারোপ করা, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে কীভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা যায় তার চেষ্টা করা, কীভাবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে খাটো করা যায় তার চেষ্টা করা, কীভাবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করা যায় সেই চেষ্টাই তারা করছে। অত্যন্ত সম্মানিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ডের বিষয়ে বিএনপি নেতা খালেদা জিয়া পার্লামেন্টে সব সময়ই নিন্দা জানিয়েছেন। বিএনপির কেউই কোনো হত্যাকান্ড সমর্থন করে না। এই হত্যাকান্ডের বিচার হয়েছে, বিচার করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। সেই বিচার করার পরে সব কিছু শেষ হয়ে গেছে। অথচ এখন শুরু করেছেন নতুন একটা গীতের গান, গীত গাওয়া, গান গাওয়া যে, জিয়াউর রহমান এটার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, কোথাও প্রমাণ করতে পারেনি, কেউ না। আজ পর্যন্ত কেউ এই কথা বলে নাই যে, জিয়াউর রহমান সম্পৃক্ত ছিলেন। জিয়াউর রহমান তো তখন ডেপুটি চিফ মার্শাল। সেনাবাহিনীর উপপ্রধান ছিলেন মাত্র। সেনাপ্রধান ছিলেন কে এম শফিউলস্নাহ। সেই শফিউলস্নাহ খন্দকার মোশতাককে স্যালুট করেছেন, এ কে খন্দকার স্যালুট করেছেন। খন্দকার মুশতাকের সঙ্গে পুরো ৩১ জনের মন্ত্রিসভা গিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের রক্তের ওপর দিয়ে হেঁটে গিয়ে মন্ত্রিত্বের শপথ নিয়েছেন। তিনি বলেন, এই হত্যাকান্ড আওয়ামী লীগ ঘটিয়েছে। অন্য কেউ তার সঙ্গে জড়িত ছিল না। যারা করেছে তারা সামরিক বাহিনীর লোক ছিল। সুতরাং নিজেদের অপকর্ম ঢাকার জন্য অন্যকে দোষারোপ করে লাভ নেই। ১৯৭২ সালের যে সংবিধান, সেই সংবিধান মতো কাজ করেন। জেলা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বাবলার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক বক্তব্য রাখেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে