দেশে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না :প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ | ০৪ আগস্ট ২০২১, ০০:০০ | আপডেট: ০৪ আগস্ট ২০২১, ০০:৪৪

ম যাযাদি ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার মুজিববর্ষ উপলক্ষে 'সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ঢাকায় নির্মিত পাঁচটি আবাসন প্রকল্প' এবং 'বস্তিবাসীর জন্য মিরপুরে ভাড়াভিত্তিক ৩০০টি ফ্ল্যাট' হস্তান্তর অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন -ফোকাস বাংলা

বস্তিবাসীর মধ্যে যারা গ্রামে ফিরে যাবেন সরকারের তরফ থেকে জমিসহ ঘর, ঋণ দেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনে তাদের ছয় মাসের খাবার বিনামূল্যে দেওয়া হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'যাদের ভিটামাটি আছে তাদেরও ঘর করে দেওয়া হবে, অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে। সেই ঘরে ফেরা কর্মসূচিটা আবার আমি ভালোভাবে চালু করব। বস্তিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে না থেকে নিজের গ্রামে ফিরে গেলে এই সুবিধাগুলো পাবেন। আমাদের লক্ষ্য একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না।' মঙ্গলবার মুজিববর্ষ উপলক্ষে 'সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ঢাকায় নির্মিত ২ হাজার ৪৭৪টি ফ্ল্যাট সংবলিত পাঁচটি আবাসন প্রকল্প' এবং 'মাদারীপুরে নির্মিত সমন্বিত অফিস ভবন উদ্বোধন' এবং 'জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের স্ব-অর্থায়নে বস্তিবাসীর জন্য মিরপুরে নির্মিত ভাড়াভিত্তিক ৩০০টি ফ্ল্যাট' হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বস্তিবাসীর মানবেতর জীবন লাঘবে তাদের আবাসন সমস্যা দূর করতে সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, 'আজকে অন্তত ৩শ'টা ফ্ল্যাট থেকে তিনটা পরিবারকে আমরা ফ্ল্যাট হস্তান্তর করতে যাচ্ছি এবং পর্যায়ক্রমিকভাবে আমরা এই ব্যবস্থাটা নেব। কিন্তু তাদের ভাড়া দিয়ে থাকতে হবে। যতদিন এই ঢাকায় থাকবে তারা ভাড়া দিয়ে থাকবে। আর যারা নিজের গ্রামে ফিরতে চান, যদি কারও জমি না থাকে জমিসহ আমরা ঘর দেব। আমাদের আশ্রয়ণ প্রকল্প ২-এর মাধ্যমে আমরা সেটা দিচ্ছি। সেই সঙ্গে ঋণ পাবেন এবং সেখানে কাজ করার সুযোগ পাবেন। প্রয়োজনে ছয় মাসের খাবার আমরা বিনামূল্যে দেব, যাতে ওই ছয় মাসের মধ্যে নিজে একটা কাজ করে চলতে পারেন।' প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেঁচে থাকলে এ দেশের মানুষ আরও আগেই সুন্দর জীবন পেত। দেশের প্রত্যেকটা মানুষ সুন্দর ও উন্নত জীবন পাবে- জাতির পিতা সে স্বপ্নই দেখতেন। আমাদের দুর্ভাগ্য, তাকে আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়ার ফলে সেটা পেলাম না। আমরা তার সেই কাজই করে যাচ্ছি। জাতির পিতার এই দেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না। পিছিয়ে থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতা তার জীবন উৎসর্গ করেছেন দেশের জন্য। তিনি সব সময় একটি কথাই বলতেন- 'আমার জীবনের একমাত্র কামনা বাংলাদেশের মানুষ অন্ন পাবে, বস্ত্র পাবে, তারা উন্নত জীবনের অধিকারী হবে।' এই বাংলাদেশের মানুষ রোগে-শোকে ছিল। শিক্ষার আলো পেত না। তাদের ভাগ্যোন্নয়ন করাই ছিল বঙ্গবন্ধুর মূল লক্ষ্য। এজন্য ছাত্রজীবন থেকেই বঙ্গবন্ধু সংগ্রাম করেছেন। রাষ্ট্রভাষা বাংলা ভাষার দাবি থেকে তিনি ধাপে ধাপে জাতিকে ?মুক্ত ও স্বাধীন করেছেন। আর এই দাবির সংগ্রামের মধ্যেই তাকে জেলে নিয়েছে, নির্যাতন করেছে, হত্যা করতে চেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিচারণ করে বলেন, 'সরকারি কর্মকর্তাদের দিয়ে আমরা কাজ করাব, তাদের ভালোমন্দও তো দেখতে হবে। আজিমপুর সরকারি কলোনিতে গ্যাস ছিল না, আমিই আব্বাকে বলে সে গ্যাসের লাইন করে দিয়েছিলাম। আমি সরকার গঠন করে উদ্যোগ নিয়েছিলাম, সবাইকে ফ্ল্যাট করে দেব। সুন্দর পরিবেশে থাকার ব্যবস্থা করে দেব, যাতে কর্মকর্তারা ভালোভাবে কাজ করতে পারে।' বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, প্রত্যেকটা মহকুমাকে জাতির পিতা জেলায় রূপান্তর করেন। জেলা গর্ভনর নিয়োগ দেন। যেন প্রত্যেকটা জায়গা পরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠতে পারে। পঁচাত্তরের পর এ পরিকল্পনা পরিবর্তন করে ফেলা হয়। এখন আমরা সে ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রথমে ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউনিয়ন কমপেস্নক্স করে দিয়েছি। যাতে এক জায়গা থেকে সব সেবা পাওয়া যায়। পরে উপজেলা কমপেস্নক্স ভবন করে দিয়েছি। এখন মাদারীপুরে জেলা কমপেস্নক্স করে দিলাম। এক ছাদের নিচে সব সরকারি সেবা পাবে মানুষ। সব জেলা ও উপজেলায় কমপেস্নক্স করে দিব। অফিসারদের থাকার জন্য ফ্ল্যাটও করে দেব। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র প্রান্তে এ সময় গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উলস্না খন্দকারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।