শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

'নিজ খরচে নারীদের দুবাই পাচার করত চক্রটি'

ম যাযাদি ডেস্ক
  ০৪ আগস্ট ২০২১, ০০:০০

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) পরিচয়ের পর সহজ-সরল ও সুন্দরী নারীদের দুবাইয়ে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখাত একটি চক্র। রাজি হলে চক্রের সদস্যরাই নিজ খরচে পাসপোর্ট ও ভিসা করে নারীদের দুবাইয়ে নিয়ে যেত। এরপর সেসব নারীকে দিয়ে জোরপূর্বক অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করত চক্রটি।

এই চক্রের চার সদস্যকে আটক করেছের্ যাব-৩। আটককৃতরা হলেন- মোছা. শামীমা আক্তার (২১), শংকর বিশ্বাস (২৫), শেখ হানিফ মিয়া (২৮) ও মো. জুয়েল হোসাইন (২৯)। এ সময় তাদের কাছ থেকে মোবাইল ও কম্পিউটার জব্দ করা হয় বলেও জানিয়েছের্ যাব। তবে চক্রের মূলহোতা রয়েছে দুবাইয়ে। তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে আইনের আওতায় আনতেও কাজ করছের্ যাব।

মঙ্গলবারর্ যাব-৩ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বীণা রানী জানান, একজন ভুক্তভোগীর মায়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত রাজধানীর ডেমরা, কেরানীগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করা হয়েছে। গ্রেপ্তার শামীমা আক্তার ভিক্টিমের বান্ধবী। শামীমার সঙ্গে দুবাই প্রবাসী অপুর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বন্ধুত্ব ছিল। অপু চলতি বছরের ফেব্রম্নয়ারিতে দেশে বেড়াতে এলে ভিক্টিমকে দুবাই শপিংমলে ৫০ হাজার টাকা বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখান। সে প্রস্তাবে রাজি হলে অপু ভিক্টিমকে পরিবারের সদস্যদের কাছে বিষয়টি গোপন রাখতে বলে।'

এই কর্মকর্তা বলেন, 'শামীমা গোপনে ভিক্টিমের পাসপোর্ট তৈরি করে দেয়। এরপর অপু নারী পাচার চক্রের মূলহোতা দুবাই প্রবাসী মো. কামাল হোসাইনের (৩৮) মোবাইল নম্বর ভিক্টিমকে দেয়। কামাল ভিক্টিমকে রাজধানীর পল্টন মেসার্স মেহরাব এয়ার ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল এজেন্টের টিকিট ম্যানেজার শেখ হানিফ মিয়ার (২৮) কাছে পাসপোর্ট জমা দিতে বলে।'

তিনি বলেন, 'গ্রেপ্তার জুয়েল হোসাইন দুবাই প্রবাসী। তিনি শেখ হানিফ মিয়ার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। দুবাই প্রবাসী চক্রের মূলহোতা কামাল জুয়েলেরও ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ঘটনার সময় জুয়েল দুবাই ছিলেন। তিনি ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসেন। কামাল দুবাই থেকে জুয়েলের মাধ্যমে সুমাইয়ার দুবাই যাওয়ার খরচ বাবদ এক লাখ ৩০ হাজার টাকা হানিফের কাছে পাঠান। হানিফ ও তার কর্মচারী গ্রেপ্তার শংকর ভিক্টিমের তিন মাস মেয়াদি দুবাইয়ের টুরিস্ট ভিসা এবং বিমানের টিকিট করে দেন।'

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস বলেন, ভিক্টিম তার মা ও বোনকে কিছু না জানিয়ে গত ৩০ এপ্রিল রাতে দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা করেন। দুবাই বিমানবন্দরে পৌঁছলে কামাল তাকে বাসায় নিয়ে যান এবং তার পাসপোর্ট কেড়ে নেন। এরপর কামাল ভিক্টিমকে জোরপূর্বক অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করেন। তাতে রাজি না হলে তার ওপর চলে শারীরিক নির্যাতন। পরে ভিক্টিম তার মায়ের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করে তাকে উদ্ধারের আকুতি জানান। এরপর তার মা র?্যাব-৩ এ তার মেয়েকে উদ্ধারের জন্য অভিযোগ জানান। ভিক্টিম জানান, ওই চক্রের মূলহোতা কামাল ২২ বছর ধরে দুবাইয়ে বসবাস করেন। সুমাইয়া নামে দুবাইয়ে এক নারী সহযোগী রয়েছে কামালের।'

বীণা রানী দাস আরও বলেন, বর্তমানে সুমাইয়ার সঙ্গে তার মা যোগাযোগ করতে পারছেন না। গ্রেপ্তারকৃতদের নামে পল্টন থানায় মামলা করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে