সা ক্ষা ৎ কা র

উত্তরণের পথে ফারমাসর্ ব্যাংক

মো. এহসান খসরু চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ফারমাসর্ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। এর আগে তিনি প্রিমিয়ার ব্যাংকের পরিচালনা পষের্দর কনসালট্যান্ট ছিলেন। তিনি ১৯৮৩ সালে ন্যাশনাল ব্যাংকে কমর্জীবন শুরু করেন। ব্যাংকিং কমর্জীবনে তিনি ইস্টানর্ ব্যাংক, সিটি ব্যাংক এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে প্রাইম ব্যাংকের মুনাফা ও সুনাম বৃদ্ধিতে ভ‚মিকা রেখেছেন। ২০০৭ সালে ইস্টানর্ ব্যাংকের আগে তিনি আমেরিকান এক্সপ্রেস ব্যাংক, রয়েল ব্যাংক অব কানাডা এবং ব্যাংক অব মনট্রিলে কাজ করেছেন। দীঘর্ তিন দশকের অভিজ্ঞতার আলোকে চৌকস এই ব্যাংকার ফারমাসের্র বতর্মান চ্যালেঞ্জ ও করণীয় সম্পকের্ কথা বলেছেন যায়যায়দিনের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সিনিয়র রিপোটার্র আহমেদ তোফায়েল

প্রকাশ | ২২ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ফারমাসর্ ব্যাংকের এমডি ও সিইও মো. এহসান খসরু Ñযাযাদি
যাযাদি : প্রথমে জানতে চাই, ফারমাসর্ ব্যাংকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন কিনা ? এহসান খসরু : এ প্রশ্নের উত্তর দিতে গেলে আমাকে পেছনে ফিরে যেতে হবে। এ বছরের ৭ জানুয়ারি আমি ফারমাসর্ ব্যাংকে যোগদান করি। পষর্দ আমাকে এই পদে অফার করার আগে অনেক এমডিকে বলেছেন। কিন্তু তারা কেউই রাজি হননি। আমাকে বলার পর আমিও তিন-চার মাস সময় নিয়েছি। ওই অবস্থায় আমি পষের্দর সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ করে জানতে চাইলাম, ব্যংকের আসল অবস্থান কোথায়। বুঝতে পারলাম অবস্থান কোথাও নেই। এটা পুরোপুরি একটা বিপযর্স্ত ব্যাংক হয়ে গেছে। মানুষের আস্থা একেবারে শূন্যের কোঠায়। পত্রিকায় মারাত্মক নেতিবাচক রিপোটর্ দেখছিলাম। এসব বিষয় মাথায় নিয়ে ভাবছিলাম আমার তো অভিজ্ঞতার ঝুড়ি অনেক বড়। এত অভিজ্ঞতা কিন্তু অনেকের নেই। ব্যাংক খাত থেকে অনেক কিছু পেয়েছি। এখন আমার দেয়ার পালা। এ ব্যাপারে আত্মবিশ্বাস অনেক বেশি ছিল। যা হোক, এই ব্যাংকটি ডাউনট্রেন্ডে ছিল। সেটা মাথায় না নিয়েই চিন্তা করলাম, এর দায়িত্ব আমি নেব। কারণ, অনেকেই বলেছিলেন, ব্যাংকটি বন্ধ হয়ে যাক, মরে যাক। এখন বন্ধ হয়ে যাওয়ার একটি ব্যাংকের দায়িত্ব নেয়া মানে হচ্ছে দেড় লাখ গ্রাহকের দায়িত্ব নেয়া। এটা অনেক বড় একটি কাজ। ওই সময় শাখাগুলো ভাঙচুর হচ্ছিল। ম্যানেজাররা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হচ্ছিলেন। এমন একটি পরিস্থিতি থেকে ব্যাংকের ঘুরে দঁাড়ানো দুই-একদিনে সম্ভব নয়। আমার প্রতিজ্ঞা ছিল, এটাকে দঁাড় করাবই। আসার পরে দেখলাম, ব্যাংকের কোনো মূলধন নেই। কাগজ-কলমে ঠিকই আছে, কিন্তু বাস্তবে নেই। ভল্টগুলো খালি। বাংলাদেশ ব্যাংকেও সিআরআর, এসএলআর কিছুই ছিল না। এই অবস্থায় কিভাবে মূলধন জোগান দেয়া যায়, সেটাই ছিল আমার বড় চ্যালেঞ্জ। আমি তখন পষের্দর সঙ্গে বসলাম। সহযোগী হিসেবে আমরা বাইরের দেশের ব্যাংক আনতে পারতাম। কিন্তু স্থানীয় ব্যাংক আনলাম এই কারণে যে, ব্যাংকের নগদ অথের্র প্রবাহ ঠিক রাখা দরকার। আমি কেমন আছি, সেটা বলতে গেলে বলা দরকার পষের্দ এখন সোনালী, জনতা, রূপালী, অগ্রণী এবং আইসিবির এমডি বসেন। তাদের চিন্তার ধরন আর আমার চিন্তার ধরন একই। ফলে বেশি বলতে হয় না। আমি যে ভাষায় কথা বলি, তারা তা বোঝেন। সে কারণে অনেক সহজে কাজ হয়ে যাচ্ছে। ৯ জন পরিচালকের সবাই বিভিন্ন আথির্ক প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংকের প্রতিনিধি পৃষ্ঠা ১৫ কলাম ১ হিসেবে এসেছেন। সেই কারণে কোনো ইন্টারফেয়ার নেই। ম্যানেজমেন্টকে সম্পূণর্ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। যে জন্য ব্যাংকটিকে ৮-৯ মাসে একটি অবস্থানে আনতে পেরেছি। যদি ব্যক্তি হস্তক্ষেপ থাকত, তা হলে আমরা পারতাম না। আমাদের চলে যেতে হতো। বতর্মানে করপোরেট সুশাসনের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এই ব্যাংকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে আমি মনে করি। যাযাদি : বতর্মানে ব্যাংকের সাবির্ক সূচকের কি অবস্থা? এহসান খসরু : বতর্মান পরিচালনা পষের্দর মেয়াদ আট মাসের বেশি হয়েছে। ব্যাংকিং সূচকের অনেকগুলো দিক আছে। প্রথমত এ ধরনের একটি রিপিয়ারিং বা পুননির্মার্ণ ব্যাংকের সূচক কোনগুলো, সেটি হলো গুরুত্বপূণর্। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাহিদামত সব সূচক সচল হতে সময় লাগবে। যেমন ধরেন, ২০১৭ সালে ব্যাংক যেভাবে চলছিল, তাতেও মুনাফা হয়। কিন্তু এরপর ব্যাংকটি মুনাফা করতে পারিনি। কারণ, অনেক বিষয়ে গলদ ছিল। ঋণের তথ্য স্বচ্ছ ছিল না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রতিবেদন পাঠানোর বিষয়ে ত্রæটি ছিল। এখন প্রথম স্টেজের কাজ হচ্ছে, খারাপ দিকগুলো সামনে আনা। খারাপ ঋণের তথ্য সামনে আনা। আমরা সেটা করেছি। ২০১৭ সালের যে ব্যালেন্সশিট করেছি, সেটি লোকসানের ব্যালেন্সশিট। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, ব্যাংক লোকসান করলে গ্রাহকের আস্থা থাকবে কিনা। গ্রাহক সাধারণত ব্যাংকের নগদ অথের্র প্রবাহ দেখে পরিস্থিতি মূল্যায়ন করেন। প্রয়োজনে টাকা তুলতে পারছে কিনা সেটাই তার কাছে বড় বিষয়। আর ব্যালেন্সশিটের বিষয়টি শেয়ারহোল্ডারদের। তবে এই ব্যাংক প্রথম থেকেই লক্ষচ্যুত হয়েছিল। সরকারি বড় বড় তহবিলের জোগান থাকায় প্রথমে কেউ পরিস্থিতি বুঝতে পারেনি। বোঝা গেল যখন প্রকৃত চিত্র বাইরে আসল। অনেকেই বলে, সাংবাদিকরা ব্যাংকটিকে ডুবিয়ে দিয়েছে। কিন্তু আমি সাংবাদিকদের এ জন্য ধন্যবাদ জানাব। কারণ, ওই সময় তারা সঠিক চিত্র তুলে না ধরলে গ্রাহকরা থমকে দঁাড়াতেন না। টাকা আসতেই থাকত। এক সময় হয়ত ব্যাংকটি ২০ হাজার কোটি টাকার ব্যাংক হয়ে যেত। তখন কিন্তু কোনো ফমুর্লাতেই ব্যাংকটিকে বঁাচানো যেত না। এখন আমি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে প্রস্তাব দিলাম নগদ অথের্র প্রবাহ ঠিক রাখতে হবে। ব্যাংকে টাকা আসছে এবং যাচ্ছে এটি প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে গ্রাহকের আস্থা ফিরবে। এখন ব্যাংকের মূলধন এসেছে ৭১৫ কোটি টাকা। বন্ডেরও ১০০ কোটি টাকা এসেছে। আরও আসবে। আমানত আসছে তারও বেশি। এই মুহ‚তের্ আমানত এবং রিকভারি মিলিয়ে এক হাজার কোটি টাকার বেশি এসেছে। যাযাদি : আপনি কি মনে করেন গ্রাহকের আস্থার সংকট দূর হয়েছে ? এহসান খসরু : জি, আমি মনে করি গ্রাহকের আস্থা অনেকটা ফিরে এসেছে। কারণ, আমরা নগদ অথের্র প্রবাহ ঠিক রেখেছি। ক্লায়েন্ট এখন কুলডাউন আছে। তারা টাকা পাচ্ছেন। এ মাসের প্রথম থেকে কাউন্টার থেকে কোনো গ্রাহক টাকা ছাড়া ফেরত যাচ্ছেন না। এটা আমাদের একটি অজর্ন। সূচকের জায়গায় ক্যাশ ফ্লো খুবই পজেটিভ। নিয়মিত নগদ টাকা আসছে। বিভিন্ন ক্যাম্পেইন চলছে। তাতে আমানত আসছে। রিকভারির জন্য বিশেষ ক্যাম্পেইন চলছে। রিসিডিউলিং, রিকভারি এবং আমানত সবই ইতিবাচক অগ্রগতি হচ্ছে। যেসব সূচকে বেড়ে ওঠা বাকি তার মধ্যে এসএলআর, এনপিএল রেশিও। একটি ব্যাংক পুনগর্ঠন করতে গেলে প্রকৃত এনপিএল বের করে আনতে হয়। আমাদের প্রফেশনাল অডিট চলছে। শেষ হলে প্রকৃত চিত্র পাব। এই রেশিওটা খুবই হাই। এই মুহ‚তের্ এনপিএল আমাদের মূল কনসানর্ নয়। আমরা ক্যাশ ফ্লো ঠিক করার চেষ্টা করছি। এরপর ব্যালেন্সসিটে মনোযোগ দিব। লোকসান কমাতে হলে বেশ কিছু কাজ করতে হবে। অনেক জায়গায় অফিস ভাড়া অনেক বেশি। ইতোমধ্যে ২৭টি জায়গায় কম ভাড়ায় অফিস নিচ্ছি। আমাদের ঋণ দেয়া এ বছরের জানুয়ারি থেকে বন্ধ রয়েছে। ডিসেম্বর পযর্ন্ত নগদ টাকার প্রবাহ ঠিক থাকলে আমরা ঋণ বিতরণে যাব। তবে ডিপিএসের বিপরীতে ঋণ চালু রয়েছে। সামনে এসএমই ঋণের দিকে যাব। যাযাদি : ব্যাংকের নাম পরিবতের্নর কথা শোনা যাচ্ছে। নাম পরিবতর্ন করলেই কি ইমেজ পুনরুদ্ধার করা সম্ভাব হবে? এহসান খসরু : শুধু নাম পরিবতর্ন করে যদি সমস্যার সমাধান করা যেত, তাহলে এ বছরের জানুয়ারিতেই আমি সেটা করতাম। আমার কথা হলো, ফারমাসর্ ব্যাংকের নাম পরিবতর্ন করে রূপসা বা রূপসী যাই হোক না কেন, ক্লায়েন্টকে টাকা না দিতে পারলে, এলসির বিল পরিশোধ না করতে পারলে সেটাও মুখ থুবড়ে পড়বে। তবে, জানুয়ারি থেকে নাম পরিবতের্নর বিভিন্ন মাধ্যম থেকে দাবি আছে। আমরা মনে করি, লোকজন এই ব্যাংকটির নাম সহ্য করতে পারছেন না। বিভিন্ন জায়গায় গ্রাহক সমাবেশ করে দেখেছি, সবাই নাম পরিবতের্নর পক্ষে। তবে নাম পরিবতের্নর আগে নিশ্চিত করতে চাই, ক্লিয়ারিংয়ে কোনো চেক ফেরত যাবে না। কাউন্টার থেকে একজন গ্রাহকও টাকা ছাড়া যাবেন না। এটা হলো প্রধান। আমরা কমিটমেন্ট এবং ইথিকাল ব্যাংকিং নিয়ে আসতে চাই। পাশাপাশি মানবিক ব্যাংকিং। নাম পরিবতের্নর সঙ্গে কিন্তু মানবিক বিষয়টি জড়িত। আমরা ক্লায়েন্টের সঙ্গে মানবিক আচারণ করি না। কমর্কতাের্দর প্রয়োজনীয় ছুটি দেই না। তাদের সুযোগ-সুবিধা দেই না। আমরা এখন এই বিষয়টির দিকে নজর দিচ্ছি। কারও ক্যান্সারের মত দুরারোগ্য ব্যাধি হলে তার চিকিৎসার জন্য তিন কোটি টাকা খরচ হলেও আমরা দিব। অনেক কমর্কতার্র ছেলেমেয়েরা টাকার অভাবে ইংরেজি মাধ্যম থেকে বাংলা মাধ্যমে লেখাপড়া করছে। আমরা তাদের সহায়তা করব। আমরা যদি এই মানবিক, ইথিক্যাল এবং কমিটমেন্ট ব্যাংকিং চালু করতে পারি, তাহলে নাম পরিবতের্নর চিন্তা করা যায়। সাভির্স ব্রান্ডিং না করে শুধু নাম পরিবতর্ন করলেই কোনো কাজ হবে না। ইতোমধ্যে আন্তজাির্তক বাজারে প্রায় ৬০ শতাংশ বকেয়া পেমেন্ট করেছি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, কোনো কারণেই আন্তজাির্তক পেমেন্ট আটকে রাখা যাবে না। জানুয়ারির আগে ৩০ মিলিয়ন টাকা রেমিট্যান্স আসবে। সেই অনুযায়ী ডিপাটের্মন্টকে ঠিক করেছি। তিন মাস নিজেদের পরিবতর্ন হতে হবে নাম পরিবতের্নর আগে। আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি। যাযাদি : বতর্মান সময় ফারমাসর্ ব্যাংকের শক্তিটা কোথায়? কেন গ্রাহকরা এই ব্যাংকের সঙ্গে থাকবেন? এহসান খসরু : প্রথমত, এক সময় দুবর্ল ব্যবস্থাপনার জন্য ব্যাংকটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে গিয়েছিল। কারণ, করপোরেট সুশাসন ছিল না। আমি মনে করি, ব্যবস্থাপনা কতৃর্পক্ষ যদি ভীত হয়ে পষের্দর সব অনুরোধ রাখতে থাকে, আইন-কানুনের বালাই না থাকে, তাহলে কিন্তু গ্রাহকরা এক সময় সেটা টের পাবেই। যেটা অতীতে হয়েছে। বতর্মানে ব্যাংকটিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ম্যানেজমেন্ট ভালোভাবে কাজ করতে পারছে । আমরা যোগ্য লোক নিয়ে একটি উচ্চপযাের্য়র ম্যানেজমেন্ট টিম করেছি। করপোরেট সুশাসন নিশ্চিত করেছি। গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিচ্ছি। এক সময় রেমিট্যান্সের টাকা দিতে পারিনি। আমরা রেমিট্যান্সের সব টাকা পরিশোধ করেছি। সবের্শষ এক কোটি ৯০ লাখ টাকা বাকি ছিল, তাও দিয়ে দিয়েছি। প্রতিদিন রেমিট্যান্সের টাকা পেঁৗছে দিচ্ছি। এসব হচ্ছে আমাদের শক্তি। সব সমস্যা কাটিয়ে এখন আমরা উত্তরণের গতি পথে আছি। যাযাদি : শক্তির জায়গাটা তো বললেন। দুবর্লতার জায়গাটা কি বলবেন? এহসান খসরু : দুবর্লতার জায়গায়টা হলো অদক্ষ জনবল। অতীতে খুবই দুবর্ল জনবল নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। যারা গত চার বছরে টপকে অনেক ওপরে উঠে গেছে। আমরা এই মাসের ১৫ তারিখ থেকে ট্রেনিং একাডেমি চালু করেছি। সেখানে ট্রেনিং দেয়া শুরু করেছি। যদি অদক্ষ জনবল দক্ষ না হয়, তাহলে দুবর্ল ব্যাংক দুবর্লই থেকে যাবে। আমরা নতুন জনবল নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। এই দুবর্লতা আশা করছি কেটে যাবে। এ ছাড়া আরেকটি দুবর্লতা আছে ফারমাসর্ভীতি। অনেকের মধ্যেই এখনো ব্যাংক নিয়ে ভীতি রয়েছে। ফলে বাইর থেকে ভালো কমর্কতার্-কমর্চারীদের অফার করলেও তারা আসতে রাজি হয় না। এটা একটা বড় দুবর্লতা। তবে এখন সেটির উন্নতি হচ্ছে। ভালো লোকজন আসছে। যাযাদি : ঋণ বিতরণ কবে নাগাদ শুরু করবেন? এহসান খসরু : আমাদের বন্ডের পুরো টাকাটা চলে আসলে শুরু করতে পারব। একটি বিদেশি ব্যাংক ৫০০ কোটি টাকার বন্ড কেনার বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে। আশা করছি, ২০১৯ সালের প্রথম বা দ্বিতীয় প্রান্তিক থেকে ঋণ বিতরণ শুরু করত পারব। যাযাদি : এখন আপনাদের এনপিএল কত শতাংশ? এহসান খসরু : আমাদের খেলাপি ঋণ মোট ঋণের প্রায় ৩০ শতাংশ। টাকার অংকে ১৫০০ কোটি টাকা। এনপিএল এরই মধ্যে আদায় করা হচ্ছে। আমাদের এখন কোনো কাজ নেই। কাজ একটাই, আমানত সংগ্রহ আর ঋণের কিস্তি আদায় করা। যাযাদি : খেলাপি ঋণ কত আদায় করেছেন? এহসান খসরু : খেলাপি ঋণ ৪০০ কোটি টাকার মত আদায় হয়েছে। এটা এক টাকাও হওয়ার কথা না। কে আসবে টাকা ফেরত দিতে। আমরা আইনের সহায়তা নিয়েছি। নিয়ন্ত্রক সংস্থার সহায়তা নিয়ে চাপ সৃষ্টি করেছি। এজেন্সিও নিয়োগ দিয়েছি। যাযাদি : আপনার ব্যাংকের এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ কি? এহসান খসরু: আমার ব্যাংকের প্রধান চ্যালেঞ্জ ব্যালেন্সশিট ঠিক করা। দুই বছর লাগতে পারে। ফারমাসর্ সেবাভিত্তিক ব্যাংক হবে। ঋণের চেয়ে সেবা দেয়ার বিষয়ে আমরা এগিয়ে থাকব। টেকনোলজি বেইজড ব্যাংক করব। এ বিষয়ে আমার অভিজ্ঞতা রয়েছে। যাযাদি : ব্যাংক খাতের চ্যালেঞ্জ কি দেখছেন? এহসান খসরু: এ ক্ষেত্রে আমি মনে করি, এই খাত নিয়ে যারা কমেন্ট করেন, তারাই বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, অনেককেই বলতে শুনি, ফারমাসর্ নিজেরা ডুবেছে আবার অন্য ব্যাংককেও ডুবাবে। আসলে ডুবতে না ঘুরতে বসেছে, সেটাই দেখার বিষয়। বাংলাদেশ ব্যাংক যে তথ্য দেয়, সেটা সব থেকে বড় বিশ্লেষণ। এরপর আর কারও বিশ্লেষণের দরকার পড়ে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র বিভিন্ন সময় কথা বলছেন। সাংবাদিকরা বিশ্লেষণ করছেন। প্রত্যেকটার একটি গাইডলাইন থাকা দরকার। এখন আমরা ঘুরতে না ডুবতে বসেছি, সেটা না জেনে ঢালাওভাবে মন্তব্য করা ঠিক হচ্ছে না। আর বলতে গেলে বেশি বলা হয়ে যায়। যারা এ ধরনের মন্তব্য করেন, তারাও তো এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তারাও যে এই খাতের খুব বড় চারিত্রিক পরিবতর্ন এনেছেন, সেটা বলা যাবে না। আমাকে চার মাস সময় দেন, এরপর আপনারা লিখতে পারবেন। আমরা রাস্তায় এসে গেছি, বাকি চার মাসে আমরা সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারব। যাযাদি : এমডি হিসেবে ফারমাসের্ক কোন উচ্চতায় দেখতে চান? এহসান খসরু : আমি দেশের সব থেকে নিরাপদ ও বড় ব্যাংক হিসেবে দেখতে চাই। শুধু আকারের দিক থেকে বড় হবÑ এটা নয়। নিরাপত্তা এবং ব্যালেন্সশিটের দিক থেকেও বড় হতে চাই। যাযাদি : সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ এহসান খসরু : যায়যায়দিনকেও ধন্যবাদ