সংবাদ সম্মেলনে কাদের

নিবার্চনকালীন মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত ২৬ অক্টোবর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগের দিন এক সংবাদ সম্মেলনে ইংগিত দেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনকে সামনে রেখে এবার মন্ত্রিসভার আকারে বড় পরিবতর্ন নাও হতে পারে

প্রকাশ | ২৪ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
মঙ্গলবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের Ñবিডিনিউজ
এবারের নিবার্চনকালীন সরকার কেমন হবে সে বিষয়ে আগামী ২৬ অক্টোবর আওয়ামী লীগের যৌথ সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সেতুমন্ত্রী এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘সব সিদ্ধান্ত হবে আগামী ২৬ অক্টোবর, সেদিন সন্ধ্যায় দলের ওয়াকির্ং কমিটি, উপদেষ্টা কমিটি ও পালাের্মন্টারি কমিটির যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হবে।’ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগের দিন এক সংবাদ সম্মেলনে ইংগিত দেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন সামনে রেখে এবার মন্ত্রিসভার আকারে বড় কোনো পরিবতর্ন নাও আনা হতে পারে। এ বিষয়ে কাদের বলেন, ‘নেত্রীর সবের্শষ ভাবনায় যৌক্তিকতা আছে। মন্ত্রিসভার সাইজ বড়-ছোট ব্যাপার নয়, প্রতিবেশী দেশ ভারতেও একই অবস্থা।’ নিবার্চনকালীন সরকার নিয়ে স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা এখন সংবিধানে নেই। বতর্মান ব্যবস্থায় ভোটের আগে সংসদ ভেঙে দেয়ার প্রয়োজন হয় না, তবে তিন মাসের ক্ষণ গণনা শুরু হলে সংসদের স্বাভাবিক কাযর্ক্রম বন্ধ থাকে। দশম জাতীয় সংসদ নিবার্চনের আগে ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার অধীনে অপেক্ষাকৃত ছোট একটি মন্ত্রিসভা গঠন করেন; যার নাম দেয়া হয় ‘সবর্দলীয় সরকার’। ওই মন্ত্রিসভায় আওয়ামী লীগের শরিক দলগুলোর নেতাদের নেয়া হয়। স্বল্প পরিসরের ওই মন্ত্রিসভা সরকারের দৈনন্দিন কাযর্ক্রম পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে। বিএনপিকে সেই ‘সবর্দলীয়’ সরকারে যোগ দেয়ার আহ্বান জানানো হলেও তারা প্রত্যাখ্যান করে। পরে তারা দশম সংসদ নিবার্চনও বজর্ন করে। সোমবার গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এবারের নিবার্চনকালীন মন্ত্রিসভা নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নিবার্চনে আসতে চাইছিল না বলে তিনি মন্ত্রিসভা পুনগর্ঠন করে তাতে তখনকার বিরোধী দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তখন তারা আসল না। বিরোধী দলে অন্য যারা ছিল, তাদের নিয়ে তিনি মন্ত্রিসভা গঠন করেন। সেই মন্ত্রিসভা ছোট আকারে করা হয়েছে। গতবারের সঙ্গে এবারের পরিস্থিতির পাথর্ক্য বোঝাতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দশম সংসদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পরও তিনি প্রতিনিধিত্বশীল সব দলের প্রতিনিধি নিয়েই সরকার গঠন করেছেন। যেহেতু সব দলের প্রতিনিধি আছে, এখন জানেন না এটা খুব প্রয়োজন আছে কিনা। শেখ হাসিনা বলেন, মন্ত্রিসভা ছোট করা হলে একজনকে কয়েকটা মন্ত্রণালয় চালাতে হবে। সেক্ষেত্রে কোনো কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ দুই তিন মাসের জন্য থমকে যেতে পারে। এ বিষয়গুলোও ভাবতে হবে। সচিবালয়ের সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গতবার আমাদের দেশে বিষয়টা ভিন্ন ছিল, মন্ত্রিসভার সাইজ ছোট হয়ে গিয়েছিল, ভিন্ন প্রেক্ষাপট ছিল, বিএনপিন নিবার্চনে অংশ গ্রহণের বিষয় ছিল, পালাের্মন্টে ছিল। এবার সাইজ ছোট হলেও দুই-একজন যুক্ত হতে পারে, এ অবস্থায় থাকলেও দুই একজন যুক্ত হতে পারে।’ কোন দল থেকে নতুন মন্ত্রি আসতে পারে জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘রুলিং পাটির্ থেকে আসতে পারে, মেইন অপজিশন পাটির্ থেকেও আসতে পারে। সম্ভবত মেইন অপজিশন পাটির্ থেকে আসতে পারে। আমার ধারণা থেকে বলছি, গ্যারান্টি দিয়ে বলছি না।’ নিবার্চন সামনে রেখে বিরোধীরা যখন এক জোট হচ্ছে, তখন মহাজোট সম্প্রসারণের কোনো উদ্যোগ আছে কিনা তা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কাছে জানতে চান সাংবাদিকরা। উত্তরে কাদের বলেন, ‘ড. কামাল তার অবস্থান ব্যক্ত করেছেন, মেরুকরণটা কোথায় গিয়ে ঠেকেÑ এখন তো অনেকগুলো জোট হয়ে গেছে। জোটের মেলা দেখতি পাচ্ছি, জোট তারকাদের মেলা দেখতে পাচ্ছি। জনতার কতটা সমথর্ন আছে এটি বিষয় নয়, আমি নেতা আমার সিল-প্যাড থাকলেও তো দল।’ আগামী কয়েক দিনের ভেতরে অনেক কিছুই স্পষ্ট হবে মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘কাউকে কটাক্ষ করছি না, তাদের আরও মেলা সামনের দিকে দেখতে পাবেন। এগুলো দেখেই সামনের দিনে চিন্তাভাবনা করব। আমাদের ১৪ দলীয় জোট অনেক আগে থেকেই সক্রিয়, জাতীয় পাটির্র সাথেও সমঝোতা আছে। ‘বিএনপি নিবার্চন না করলে জাতীয় পাটির্ তো আবার ৩০০ আসনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করবে। তখন আমাদের তো আর জোট করার প্রশ্ন আসে না। মেরুকরণটা কোথায় গিয়ে দঁাড়ায় তার ওপর নিভর্র করবে অ্যালায়ান্সের সমীকরণ কীভাবে করতে হবে।’