বিএনপির নির্বাহী কমিটির সিরিজ বৈঠক

দাবি আদায়ে আন্দোলনের পক্ষে মত নেতাদের

প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক কর্মকৌশল ঠিক করতে নির্বাহী কমিটির নেতাদের সঙ্গে সিরিজ বৈঠক শুরু করেছে বিএনপি। মঙ্গলবার প্রথম দিনে ভাইস চেয়ারম্যান ও উপদেষ্টাদের নিয়ে হাইকমান্ডের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচনে দাবি আদায়ে দ্রম্নত সময়ের মধ্যে আন্দোলনে যাওয়ার পক্ষে অধিকাংশ নেতা মত দিয়েছেন। বিকাল চারটায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই বৈঠক শুরু হয়। লন্ডনপ্রবাসী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি এই সভায় সভাপতিত্ব করেন। মঞ্চে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ছিলেন। ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ ষষ্ঠ কাউন্সিলের পর খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গঠিত হয় ৫০২ সদস্যের নির্বাহী কমিটিতে ৩৫ ভাইস চেয়ারম্যান রয়েছেন। চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলে সদস্য সংখ্যা হচ্ছে ৭৪ জন। ঢাকার বাইরে থাকায় এবং অসুস্থতার কারণে অনেক নেতা সভায় উপস্থিত থাকতে পারেননি। বৈঠকে ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিলে ৬২ জন অংশ নেন। ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে শাহজাহান ওমর, হাফিজউদ্দিন আহমেদ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, মাহমুদুল হাসান, মীর নাসির উদ্দিন, বরকত উলস্নাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, শামসুজ্জামান দুদু, জয়নাল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, শওকত মাহমুদ প্রমুখ ছিলেন। উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্যদের মধ্যে মনিরুল হক চৌধুরী, মশিউর রহমান, আমানউলস্নাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, হাবিবুর রহমান হাবিব, লুতফর রহমান খান আজাদ, আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, ফজলুর রহমান, শাহজাহান মিয়া, সুকোমল বড়ুয়া, খন্দকার মুক্তাদির আহমেদ, এসএম ফজলুল হক, আবদুল হাই, ভিপি জয়নাল আবেদীন, গোলাম আকবর খন্দকার, অধ্যাপক শাহেদা রফিক, আফরোজা খানম রীতা, তাহসিনা রুশদীর লুনা, অধ্যাপক তাজমেরী এস ইসলাম, ইসমাইল জবিলস্নাহ, এরামুজ্জামান, তৈমুর আলম খন্দকার, মইনুল ইসলাম শান্ত, মাহবুবুর রহমান, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, আবদুল হাই শিকদার, আতাউর রহমান ঢালী, বোরহান উদ্দিন, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, নজমুল হক নান্নু প্রমুখ ছিলেন। এ ছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরের দায়িত্বে থাকা নেতাদের মধ্যে ছিলেন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ ও চেয়ারপারসন কার্যালয়ের এবিএম আবদুস সাত্তার ও রিয়াজ উদ্দিন নসু। বৈঠকের বিষয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, 'দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে আমাদের কী করণীয় সেসব বিষয়ে নেতাদের মতামত নিতে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে।' জানা গেছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপির কী করা উচিত, আন্দোলনের কর্মকৌশল কী হওয়া উচিত, মাঠ পর্যায়ের সংগঠনকে আরও সক্রিয় করতে কী করা প্রয়োজন ইত্যাদি বিষয়ে নেতাদের মতামত নেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। সূত্রমতে, বৈঠকে সরকার আগাম নির্বাচনের আভাস কেন দিচ্ছে সে বিষয়ে আলোচনা হয়। এ অবস্থায় বিএনপির করণীয় কী, এ বিষয়ে নেতারা তাদের মতামত তুলে ধরেন। বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা ও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েও অনেকে কথা বলেন। আন্দোলনের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়। অধিকাংশ নেতাই দ্রম্নত সময়ের মধ্যে নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচনের দাবি আদায়ে আন্দোলনে যাওয়ার পক্ষে মত দেন। নির্বাচন কমিশন গঠনের আগেই কঠোর আন্দোলন করার পরামর্শও দেন কেউ কেউ। হঠকারী কেন সিদ্ধান্ত নয়, সুপরিকল্পিতভাবে আন্দোলন করে দাবি আদায়ের কথাও বলেন নেতারা। আজ বুধবার সিরিজ বৈঠকের দ্বিতীয় দিনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক, সম্পাদক ও সহ-সম্পাদকরা থাকবেন। আর আগামীকাল বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠক করবেন তারেক রহমান। প্রসঙ্গত, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার আগে ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রম্নয়ারি দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সর্বশেষ বৈঠক হয়েছিল। তারেক রহমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার পর দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে এটি প্রথম সিরিজ বৈঠক।