শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

চিত্রার চরে মিনি সুন্দরবন

পংকজ মন্ডল, চিতলমারী (বাগেরহাট)
  ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০
বাগেরহাটের চিতলমারীতে চিত্রার চরে মিনি সুন্দরবন -যাযাদি

বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্যতম অংশ ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের মতো বাগেরহাটের চিতলমারীতে চিত্রার চরে একটি মিনি সুন্দরবন গড়ে উঠেছে। বহমান চিত্রা নদীর দুই কুলঘেঁষে এ সুন্দরবনকে ঘিরে সম্ভাবনার দ্বার খুলবে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞ মহলের। এ বনের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে বলেও মনে করছেন অনেকে। পাশাপাশি পরিবেশের জন্য এটি এখন আশীর্বাদস্বরূপ বলে মনে করা হচ্ছে। এ বনকে যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানিয়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষ।

এক সময়ের খরস্রোতা চিত্রা নদীর বিস্তীর্ণ চর ও আশপাশে নদীর দুই পাড়ে ১৫ থেকে ২০টি গ্রামজুড়ে গড়ে উঠেছে এই বন। উপজেলার রায়গ্রাম, শুড়িগাতী, খিলিগাতী, করাতের দিয়া, ডুমুরিয়া, আরুলিয়া, খড়িয়াসহ প্রায় ১৫ থেকে ২০টি গ্রাম মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে এখন বনাঞ্চলে পরিণত হয়েছে।

এখানকার অধিকাংশ বাড়ির আঙিনাসহ আশপাশে আবাদি-অনাবাদি জমিতেও এখন গোলপাতা, কেওড়া, সুন্দরীসহ নানা প্রজাতির গাছ প্রাকৃৃতিকভাবে বেড়ে উঠছে। এ ছাড়া নদীর দুই কূলজুড়ে বিস্তীর্ণ চর এলাকায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে গাছের সংখ্যা। বাঘ-হরিণের দেখা না মিললেও সুন্দরবনের নানা ধরনের বন্যপ্রাণীর দেখা মিলছে এখানে। ঠিক যেন সুন্দরবনেরই একটা অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। মেছো বাঘ, বাঘডাসা, খাটাশ, বিষধর সাপ, তক্ষক, বনবিড়াল, শিয়াল, গুঁইসাপসহ বিপন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণীর বিচরণভূমিতে পরিণত হয়েছে এলাকাটি।

মাছরাঙা, ঘুঘু, শালিক, টিয়া, পানকৌড়ি, বক, দোয়েল, ঘড়িয়াল, টুনটুনিসহ প্রায় অর্ধশত প্রজাতির পাখির দেখা মিলছে এখানে। এসব পাখির কলকাকলিতে বন এখন মুখরিত। এ ছাড়া সুন্দরী, গোলপাতা, কেওড়াসহ নানা প্রজাতির গাছ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুন্দরবনের অসংখ্য প্রজাতির উদ্ভিদ জন্মেছে এখানে।

এতে গ্রামবাসীর মধ্যে আশার আলো দেখা দিয়েছে। সুন্দরবনের মূল ভূখন্ড

থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার উত্তরে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের সীমান্তঘেঁষে বয়ে যাওয়া চিত্রা নদীর দুই পাড়ে গড়ে ওঠা এ মিনি সুন্দরবন এখন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।

স্থানীয় হরেন্দ্রনাথ বাড়ৈ জানান, চিত্রার চরে মিনি সুন্দরবনের পাশেই তার বাড়ি। এখানে অসংখ্য প্রাণী ও পাখিদের আশ্রয়স্থল গড়ে উঠেছে। ঘুম ভাঙে পাখির কলকাকলিতে। এখানে অজস্র পাখি আশ্রয় নিয়েছে। পাশাপাশি সুন্দরবনের অসংখ্য গাছ ও উদ্ভিদ জন্মেছে এলাকাটিতে।

এ ব্যাপারে বাগেরহাট জেলা বন বিভাগের ষাটগম্বুজ এসএসএনটিসি ও চিতলমারী উপজেলা বন কমর্কতা চিন্ময় মধু বলেন, 'মিনি সুন্দরবনটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি। সরকারিভাবে এ বনের সব ধরনের প্রতিবেদন স্থানীয় এমপি, বন বিভাগের সচিব এবং বাগেরহাটের জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে