মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

শিশুদের বয়সসীমা ১৮ নিয়ে ভাবনার সময় এসেছে -স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ম যাযাদি রিপোর্ট
  ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

শিশুদের বয়সসীমা ১৮ নিয়ে ভাবনার সময় এসেছে বলে মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, দেশে ১৮ বছরের নিচে সবাইকে শিশু হিসেবে বিবেচনা করার বিষয়টি নিয়ে এখন চিন্তা-ভাবনার সময় এসেছে। আন্তর্জাতিক একটি আইনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ায় সমন্বয় করে এটি করা হয়েছে। কিন্তু এর ফলে কিশোর অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বেগ পেতে হচ্ছে, তাই বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবনার সময় এসেছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মধুবাগে বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান কমপেস্নক্স অডিটরিয়ামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কিশোর অপরাধ দমনে জনসচেতনতামূলক কর্মকান্ডের আওতায় 'সবার হোক একটাই পণ, কিশোর অপরাধ করব দমন' শীর্ষক টিভিসি উদ্বোধন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করের্ যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্(যাব)।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমি যখন এসএসসি পাস করেছি, তখন আমার বয়স ছিল ১৫ বছর। বর্তমানে যারা নিয়মিত পড়াশোনা করে, ১৮ বছর বয়সে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যায়। আমাদের মনে হয়, ১৮ বছরের এই সময়সীমা চিন্তা ভাবনা করার সময় এসেছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, সমাজের শাসন যদি সুপ্রতিষ্ঠিত করতে না পারি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যতই কড়াকড়ি হোক; আমরা হারিয়ে যাব। তাই সময় থাকতে সন্তানকে উপযুক্ত শিক্ষা দিন, তাদের সঙ্গে কথা বলুন। সন্তানরা কোথায় যাচ্ছে, কি করছে, খেয়াল করুন। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে। তবে আপনি যদি আপনার সন্তানের প্রতি খেয়াল না রাখেন, তাহলে এটি আমরা কখনোই পারব না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ডক্টর বেনজীর আহমেদ বলেন, একসময় আট বছর পর্যন্ত বয়সিদের শিশু ধরা হতো। কিন্তু পরবর্তী সময় কিশোর আইন হালনাগাদ করা হয়েছে, এখন ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত শিশু ধরা হয়। এর ফলে কিশোর অপরাধের বিরুদ্ধে যেভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, সেভাবে হচ্ছে না।

তিনি বলেন, 'তাদের ক্ষেত্রে বিচার পদ্ধতি, গ্রেপ্তার পদ্ধতি সবকিছুই আলাদা। তাদের গ্রেপ্তারের সঙ্গে সঙ্গে প্রবেশন অফিসারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু প্রবেশন অফিসাররা কাজ করেন সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায়, আর আমরা কাজ করি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতায়। আমরা তাদের সঙ্গে সমন্বয়ের চেষ্টা করে যাচ্ছি। এ ছাড়া, প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রবেশন অফিসার না থাকার বিষয়টিও রয়েছে। বললেই সেই সংখ্যক কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে দেওয়া যায় না, এটি দীর্ঘমেয়াদি একটা প্রক্রিয়া। কিশোর অপরাধীদের গ্রেপ্তারের পর জেলে পাঠানো যাবে না, সংশোধনাগারে পাঠাতে হয়। সেই সংশোধনাগারের সংখ্যাও পর্যাপ্ত নয়। যেসব গ্যাপ রয়েছে, সেগুলো পূর্ণ করতে কাজ করতে হবে। নয়ত বাড়বাড়ন্ত কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করা কঠোর হয়ে যাবে।'

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন বলেন, কারা কিশোরদের অপরাধী বানাচ্ছে, তাদের হাতে কারা মাদক তুলে দিচ্ছে, তাদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। অপরাধ শুধু নিয়ন্ত্রণ না, প্রতিরোধ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমাদের সমাজ বিজ্ঞানীদের এগিয়ে আসতে হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে র?্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুলস্নাহ আল-মামুন বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে ছোটদের সঙ্গে বড়রাও থাকে। ছোট-বড় মিলে বিরোধ হয়, পরে আলাদা গ্রম্নপ সৃষ্টি হয়। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মারামারির মতো ঘটনা ঘটে। কিশোর অপরাধ দমনে সচেতনতা কার্যক্রম শুরু হয়েছে মানে এই নয়, আভিযানিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে। যদি কেউ সচেতনতার মাধ্যমে সুপথে না আসে, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা চলমান থাকবে।

র্

যাবের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (এডিজি-অপারেশন্স) কর্নেল কে এম আজাদ বলেন, কিশোর গ্যাং নামে অপসংস্কৃতি রোধে গ্যাং কালচারের সঙ্গে জড়িত অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এতে গ্যাং কালচার অনুসরণ করা কিশোররা নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। তবে এটাকে এই মুহূর্তে শেষ বলা যায় না। কিশোর গ্যাং দমনের্ যাব বস্তুুনিষ্ঠ পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।

এই স্বাধীন বাংলাদেশে কিশোর গ্যাংয়ের অস্তিত্ব থাকবে না বলে জানান তিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে