ফুলবাড়ীতে করোনা কেড়েছে ৩০ ভাগ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন

প্রকাশ | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

মো. রজব আলী, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় হারিয়ে গেছে দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন। দীর্ঘ ১৮ মাস বন্ধ থাকার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরতে পারেনি এই শিক্ষার্থীরা। বালিকারা হয়েছে গৃহবধূ, বালকরা হয়েছে হোটেল রেস্তোরাঁসহ দোকানের কর্মচারী। দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা বিভিন্ন বিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদ্যালয় শুরু হলেও গড়ে ৩০ ভাগ শিক্ষার্থী অনুপস্থিত রয়েছে। শহরের বিদ্যালয়গুলোতে এই সংখ্যা কম হলেও গ্রামাঞ্চলের বিদ্যালয়গুলোতে অনুপস্থিতির সংখ্যা অনেক বড়। অনুপস্থিত এই শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের। এদিকে অনুপস্থিতির হার প্রাথমিকে কম হলেও মাধ্যমিকে অনেক বেশি। কয়েকজন শিক্ষক বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রতিটি শিক্ষার্থী উপবৃত্তি পাওয়ার কারণে প্রাথমিকে ঝরেপড়ার হার কম। কিন্তু ৫ম শ্রেণি পাস করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গন্ডি পেরিয়ে গেলে, উপবৃত্তির টাকা পাওয়া বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষাজীবন হারিয়ে ফেলে দরিদ্র ও নিম্নবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা। এর পরেও মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে উঠেছে করোনাভাইরাস। শিক্ষকরা জানান, ২০২০ সালে যারা ৫ম শ্রেণির অধ্যায় শেষ করে ২০২১ সালে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে; কিন্তু বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় তাদের বিদ্যালয়ে যাওয়া হয়নি। দরিদ্র পরিবারের অভিভাবকরা মেয়ে শিক্ষার্থীদের বিয়ে দিয়েছে, আর বালকদের কাজে দিয়েছে। ফলে এখন বিদ্যালয় খুললেও তাদের আর বিদ্যালয়ে আসা হচ্ছে না। \হফুলবাড়ী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী বলেন, বিদ্যালয় খোলার ১৫ দিনের বেশি হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ৫ম শ্রেণির ৫ জন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসেনি। এদের মধ্যে ৩ জন বালিকা ও ২ জন বালক। একই অবস্থা ফুলবাড়ী বাংলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের, সেখানে ৫ম শ্রেণির ১৪ জন শিক্ষার্থী প্রথম দিন থেকে অনুপস্থিত। এদের মধ্যে ১০ জন বালিকা। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাসিনা ভূঁইয়া বলেন, অনুপস্থিত থাকা শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ফিরে আনার জন্য শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।