বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

জলবায়ু পরিবর্তন রোধে প্রতিশ্রম্নতি রক্ষার দাবি

ম বিশেষ প্রতিনিধি
  ১৪ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০

গত পাঁচ বছরে এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি) বাংলাদেশে জ্বালানি খাতে ৬৭ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে যা তাদের মোট বিনিয়োগের ২৭ শতাংশ। অথচ নবায়নযোগ্য বা পরিচ্ছন্ন জ্বালানিতে এআইআইবি এক টাকাও বিনিয়োগ করেনি যা তাদের সামাজিক ও পরিবেশগত প্রতিশ্রম্নতির পুরোপুরি বিপরীত। তাই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রতিশ্রম্নতি রক্ষার দাবি জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা

বুধবার বিকালে বাংলাদেশের বৈদেশিক দেনা-বিষয়ক কর্মজোট, উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন), ম্যানিলাভিত্তিক এনজিও ফোরাম অন এডিবি, ডাচ্‌ প্রতিষ্ঠান রিকোর্স এবং বার্লিনভিত্তিক উর্গেওয়াল্ড যৌথভাবে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

সম্প্রতি এআইআইবি'র বাংলাদেশে বিনিয়োগ বিষয়ে প্রকাশিত 'জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ, বিপর্যয়কর ভবিষ্যৎ' শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যায় জ্বালানি খাতে এআইআইবি'র বিনিয়োগ শুধু বিপর্যয়কর নয়, বরং বিতর্কিতও বটে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত পাঁচ বছরে জ্বালানি খাতে এআইআইবি'র বিনিয়াগ প্রতি বছর ২৩ শতাংশ হারে বেড়ে ৬৭০ মিলিয়ন ডলার (পাঁচ হাজার ৭২৮ কোটি টাকা) দাঁড়িয়েছে। এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে জলবায়ু-বান্ধব অর্থনীতি গড়ে তোলার জন্য কোনো টাকা ব্যয় করা হয়নি।

রিকোর্সের প্রচারাভিযান ব্যবস্থাপক পেট্রা শেল বলেন, এআইআইবি'র অন্যতম শেয়ারহোল্ডার যুক্তরাজ্য জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ না করার ঘোষণা দিয়েছে। অপরদিকে, এআইআইবি বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে কোনো অর্থ ব্যয় করেনি। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলার দিক দিয়ে এটা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। জীবাশ্ম জ্বালানিতে এআইআইবি'র বিনিয়োগ এক্ষুনি বন্ধ করা উচিত। প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভোলা কম্বাইন্ড সাইকেল বিদু্যৎকেন্দ্র সম্পর্কে বলা হয়েছে, বিদু্যৎ উৎপাদন শুরু হলেও স্থানীয় জনগণ এখনো জমির দাম বুঝে পাননি।

গবেষণাটির অন্যতম গবেষক তানিয়া লি রবার্টস-ডেভিস বলেন, 'এ প্রতিবেদন কয়েকটি রুঢ় সত্য সামনে এনেছে। একদিকে, স্থানীয় জনগণের চাহিদা পূরণ করতে পারে এমন সমাজভিত্তিক নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে এআইআইবি'র কোনো বিনিয়োগ নেই; অন্যদিকে, 'ভবিষ্যতের অবকাঠামো'র নামে জনগণের মতামত উপেক্ষা করে যে বিনিয়োগ করা হচ্ছে তা স্থানীয় জনসাধারণের জীবন-জীবিকা শেষ করে দিচ্ছে এবং দুর্নীতিকে উৎসাহিত করছে।

কনজু্যমার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা প্রফেসর শামসুল আলম বলেন, চট্টগ্রাম এলাকায় বিদু্যৎ সঞ্চালন লাইনে অর্থায়নের মাধ্যমে এআইআইবি নিজের নীতিমালাই ভঙ্গ করেছে। কয়লা খাতে বিনিয়োগ না করার শপথ নিয়েও ব্যাংকটি কয়লা-বিদু্যৎকেন্দ্রে সংযোগ করে এমন সঞ্চালন লাইন তৈরি করছে।

উর্গেওয়াল্ডের নোরা সাউসমিকাত বলেন, এআইআইবিতে চীনের সর্বোচ্চ শেয়ার থাকলেও এশিয়ার বাইরে জার্মানি এ ব্যাংকের সর্ববৃহৎ শেয়ার হোল্ডার। সময়মতো তথ্য সরবরাহ, জনসাধারণের ক্ষতি নিরসন এবং পরিবেশ রক্ষায় এআইআইবিকে বাধ্য করায় এ দুটি দেশের ভূমিকা রাখা উচিত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে