শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য 'বোঝা' :প্রধানমন্ত্রী

যাযাদি ডেস্ক
  ১৮ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০

রোহিঙ্গা ও আটকেপড়া পাকিস্তানিরা বাংলাদেশের জন্য বোঝা উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'তারা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করছে।'

রোববার বাংলাদেশে নবনিযুক্ত নেদারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত অ্যান জিরার্ডভ্যান লিউয়েন গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পর এরই মধ্যে তিন বছর অতিবাহিত হয়েছে এবং তারা আমাদের জন্য একটি বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা কক্সবাজারে পরিবেশ ও বনসম্পদ ধ্বংস করছে।'

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ ব্যাপারে ব্রিফ করেন।

তিনি জানান, নেদারল্যান্ডের দূত রোহিঙ্গা ইসু্য সম্পর্কে বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে তিনি উদ্বাস্তু ও এনজিওকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তার কাছে মনে হয়েছে, রোহিঙ্গাদের নিজস্ব মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরিয়ে দেওয়ার এ সমস্যার সমাধান হতে পারে।

জার্মানির নতুন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎ :এদিকে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা এবং জ্বালানি ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে চায় জার্মানি। বাংলাদেশে জার্মানির নতুন রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোস্টার রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে তার দেশের এ আগ্রহের কথা প্রকাশ করেন।

পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ওই বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন তথ্য জানান। তিনি বলেন, 'রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ক্লাইমেট ও এনার্জি সেক্টরে আমরা সহযোগিতা করতে চাই।'

দুই দেশের 'চমৎকার' সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্ণ হওয়ার কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় তিনি 'অভিভূত'।

বাংলাদেশ 'সাফল্যের সঙ্গে' কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পেরেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে কোভিডে মৃতু্যহার কম।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাস মোকাবিলায় তার সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা বৈঠকে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত সবমিলিয়ে প্রায় ৬ কোটি ডোজ কোভিড টিকা দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে জার্মানির সহযোগিতার কথাও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন শেখ হাসিনা। বিশেষ করে, অনেক যুদ্ধশিশুকে সে সময় অনেক জার্মান পরিবার দত্তক নিয়েছে, সে কথা তিনি তুলে ধরেন।

নেপালের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ : ডাচ রাষ্ট্রদূতের পর গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নেপালের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত বংশীধর মিশ্রা।

সাক্ষাৎকালে নেপালের রাষ্ট্রদূত বলেন, 'যখনই নেপালে কোনো সংকট হয়েছে, বাংলাদেশ সঙ্গে সঙ্গে আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।'

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে চিকিৎসা সামগ্রী প্রদানসহ বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ নেপালকে যেই সহায়তা দিয়েছে, তার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদও জানান রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, 'আমাদের কৃষিক্ষেত্রে আরও সহযোগিতা দরকার। কারণ আমরা বাংলাদেশ থেকে শিখতে চাই।'

বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের যে জলবিদু্যৎ প্রকল্প রয়েছে, সেটা এগিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান বংশীধর মিশ্রা।

নেপাল থেকে অনেক শিক্ষার্থী বাংলাদেশে এসে লেখাপড়া করছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের অনেকেই এখন নেপাল সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন।

সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আঞ্চলিক বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নেপাল এই বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারে।

বাংলাদেশের হাঁড়িভাঙ্গা আম উপহার পেয়ে বংশীধর মিশ্রা তার দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নেপাল যে সহযোগিতা ও সমর্থন দিয়েছিল, তার কথাও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে