ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় প্রতি ওয়ার্ডে কমিটি গঠনের নির্দেশনা

প্রকাশ | ২৫ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০

ম যাযাদি রিপোর্ট
ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি গঠন করার নির্দেশনা দিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, যারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ধর্মের মধ্যে বিভেদ ও উগ্রবাদ তৈরি করে দেশে অশান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে, তাদের শক্ত হাতে মোকাবিলা করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারসহ তৃণমূল নেতাকর্মী, সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিসহ সব ধর্মের মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করে প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি গঠন করতে হবে। সমাজের মধ্যে কারা বিভিন্ন অপকর্ম, অপপ্রচার চালায় তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় এ কমিটি কাজ করবে। এছাড়া সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে ও সম্প্রীতি বজায় রাখার দাবিতে রোববারও বিভিন্ন সংগঠনের কর্মসূচি অব্যাহত ছিল। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)। প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে মতবিনিময় সভা থেকে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় ৮ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামী পার্টি। অন্যদিকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টে চলমান ঘটনার প্রকৃত রহস্য উন্মোচনে ৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্র, যুব, শ্রমিক ও পেশাজীবী অধিকার পরিষদের সমন্বয়ক এবং ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর। রোববার সচিবালয় থেকে স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে অনলাইনে আয়োজিত মতবিনিময় সভা থেকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি গঠন করার নির্দেশনা দেন। ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষার দায়িত্ব স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিতে হবে উলেস্নখ করে মন্ত্রী বলেন, মানুষের কল্যাণের জন্য ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখা স্থানীয় সরকারে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। হিন্দু-মুসলিমকে মুখোমুখি করে কেউ যাতে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে। মসজিদ-মন্দিরসহ অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতে নজর রাখতে হবে, যাতে কেউ সুযোগ না নিতে পারে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সব সিটি করপোরেশনের মেয়র, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক, ডিডিএলজি, জেলা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র এবং বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অনলাইনে যুক্ত ছিলেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান বিএমএ'র সবাইকে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)। দেশের বিভিন্ন এলাকায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয় ও বাসস্থানে সাম্প্রতিক হামলা, ভাঙচুর, হত্যা ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ আহ্বান জানানো হয়। মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী চক্র সুকৌশলে দেশের কয়েকটি জেলায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয় ও আবাসস্থলে হামলা, ভাঙচুর, হত্যা ও অগ্নিসংযোগ চালিয়ে দেশের মানুষের হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করছে। ক্ষমতা দখলের পাঁয়তারা করছে। জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও আমরা এ ষড়যন্ত্রকারীদের অপচেষ্টাকে রুখে দেব। মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএমএ মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক ডা. মোহা. শেখ শহীদ উলস্নাহ প্রমুখ। ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির ৮ দফা দাবি কুমিলস্নায় ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় সকল ধর্মীয় উপাসনালয়ে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন বাধ্যতামূলক করাসহ ৮ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামী পার্টি। রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠক থেকে দাবিগুলো জানানো হয়। তাদের অন্যান্য দাবির মধ্যে আছে, অনতিবিলম্বে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী ও এর সঙ্গে জড়িত বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী এবং তাদের দোসরদের গ্রেপ্তারের আওতায় আনতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিতে হবে। যারা গুজব ছড়াচ্ছে তাদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় এনে যথাযোগ্য শাস্তি প্রদান করতে হবে দেশের জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে ইত্যাদি। গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির চেয়ারম্যান মাওলানা মো. ইসমাইল হোসাইন, পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মো. ওমর ফারুক, কাজী মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম, হাফেজ কারী মাওলানা আব্দুল মান্নান, মাওলানা মো. তাহেরুল ইসলাম প্রমুখ।