দেশে স্থিতিশীলতার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানো জরুরি :ফখরুল

প্রকাশ | ২৯ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০

ম যাযাদি রিপোর্ট
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, 'সরকার যদি দেশে সত্যিকার অর্থে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায় তাহলে খালেদা জিয়াকেই দরকার হবে। অন্যথায় কেউ এখানে শান্তি-স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পারবে না। এই শান্তি-স্থিতিশীলতার প্রয়োজনেই খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠাতে হবে।' রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দ্রম্নত বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে দাবি জানাচ্ছে। কিন্তু মাথাই আসে না- সমস্যাটা কোথায়? কেন আইনের কথা বলছেন? আইন তো ভুল দেখাচ্ছেন। অতএব তাকে পাঠিয়ে দিন।' খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, 'খালেদা জিয়া অসুস্থ, অত্যন্ত অসুস্থ, গুরুতর অসুস্থ। প্রতিদিন চিকিৎসকরা তার জীবন রক্ষার জন্য পরিশ্রম করছেন। কিন্তু সরকার একটি মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে এখন চিকিৎসাতেও বাধা দিচ্ছে।' মির্জা ফখরুল বলেন, 'আইন দেখায়, ৪০১ ধারার আইন। আইন মানি। ওই আইনেই তো পরিষ্কার করে বলা আছে যে, শুধুমাত্র সরকারই পারে খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠাতে। বহু উদাহরণ আছে। জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব যখন বন্দি ছিলেন, যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়েছিল তখন জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় খরচে চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে পাঠিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের নেতা নাসিমকে জেল থেকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছিল চিকিৎসার জন্য। পাকিস্তানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের সাজা হয়েছিল, তাকে চিকিৎসার জন্য ইংল্যান্ডে পাঠানো হয়েছিল। আজকে মিথ্যা কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে আইনের কথা বলছে আওয়ামী লীগ সরকার।' শিক্ষার্থীদের চলমান হাফ পাসে দাবিতে চলমান আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, 'শিক্ষার্থীদের হাফ পাশ দিতে হবে, না হলে এই গণবিরোধী সরকারকে বিদায় নিতে হবে। কারণ, দেশে এখন লেখাপড়া করতে খরচ অনেক বেশি। তাদের মা-বাবারা যারা নিম্নবিত্ত মধ্যবিত্ত তারা সংসারের খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। একদিকে চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে, শিক্ষার খরচ বেড়েছে। এর মধ্যে বাসের ভাড়া অনেকগুণ বেড়েছে। সব মিলিয়ে একটা বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে।' উন্নয়নের নামে লুটপাট হচ্ছে উলেস্নখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে এই সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ। এমন ব্যর্থ হয়েছে, তারা চুরি ছাড়া কিছু করে নাই। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার দৈন্যদশা। করোনার সময় দেখেছেন, হাসপাতালে সিট নাই, অক্সিজেন নাই, ডাক্তার নাই ওষুধ নাই। মেট্রোরেল বানাচ্ছে? সেটার জন্য ঢাকা শহর দশ বছর ধরে খোঁড়াখুঁড়ি করে রেখেছে। এখনে কাজ হয়নি। ব্যয় বেড়েছে দশগুণ। দশহাজার কোটি টাকা ব্যয়ের পদ্মা সেতুতে চলিস্নশ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। ভাঙ্গা থেকে মাওয়া প্রতি কিলোমিটারে খরচ হয়েছে ২০০ কোটি টাকা। যা যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানিতেও চিন্তা করা যায় না।' স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, সাদরেজ জামানের যৌথ সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উলস্নাহ আমান, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, সেলিমুজ্জামান সেলিম, যুব দলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের গোলাম সারোয়ার, বিথিকা বিনতে হোসাইন, আনু মো. শাহিন, জামিল হাসান, এমদাদুল হক, ইয়াসীন আলী, এসএম জিলানী, ফখরুল ইসলাম রবিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।