রোহিঙ্গাদের উচিত এখন নিজ দেশে ফিরে যাওয়া -প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ | ০১ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মঙ্গলবার গণভবনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭২ সালের একটি দুর্লভ আলোকচিত্র উপহার দেন ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী -পিবিএ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'মানবিক কারণে আমরা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু তারা এখন সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি করছে। কিন্তু তাদের উচিত এখন নিজ দেশে ফিরে যাওয়া।' বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে বিদায়ী সাক্ষাৎ করতে গেলে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় জাতিসংঘ রোহিঙ্গা ইসু্যতে বাংলাদেশকে অব্যাহত সমর্থন দিয়ে যাবে বলে জানান মিয়া সেপ্পো। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। বৈঠকে তারা কোভিড-১৯, জলবায়ু পরিবর্তন এবং নারীর ক্ষমতায়ন নিয়েও আলোচনা করেন। নারীর ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার প্রত্যেক সরকারি চাকরিতে বিশেষ করে সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি এবং সামাজিক-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে। জলবায়ু প্রসঙ্গে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পরিবেশ রক্ষায় সরকারের পাশাপাশি তার দল ও সহযোগী সংগঠনগুলোও বিপুলসংখ্যক বৃক্ষরোপণ অভিযান পরিচালনা করছে। শেখ হাসিনা বলেন, যেসব এনজিও বাংলাদেশে কাজ করছে সেসব এনজিও রোহিঙ্গাদের জন্য তাদের নিজ দেশেও কাজ করতে পারে। মিয়া সেপ্পো বাংলাদেশে তার অবস্থানের জন্য সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, সরকারের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক ছিল। অ্যাম্বাসেডর এট লার্জ মো. জিয়াউদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ডক্টর আহমেদ কায়কাউস এ সময় উপস্থিত ছিলেন। আখাউড়া-আগরতলা রেল রুট চালুর ওপর গুরুত্বারোপ বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে আখাউড়া-আগরতলা রেল রুট পুনরায় চালু করার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'আমাদের যোগাযোগ বাড়াতে হবে। আখাউড়া-আগরতলা রেল রুটের সব কিছুই (প্রয়োজনীয় স্থাপনা) সেখানে রয়েছে। এখন শুধুমাত্র তা পুনরায় চালু করতে হবে।' ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাৎ করতে গেলে এ কথা বলেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক নতুন মাত্রা লাভ করেছে। দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা, বাণিজ্য ও পর্যটন খাতে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। বৈঠকে দোরাইস্বামী প্রধানমন্ত্রীকে জানান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিজয় দিবস উদযাপনে যোগদান করতে ভারতের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সফর করবেন। দোরাইস্বামী বলেন, 'এটি একটি বিশেষ বছর এবং বছরটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ কারণ ভারতের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী একই বছরে বাংলাদেশ সফর করেছেন।' কোভিড-১৯-এর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুই দেশকেই মারাত্মক ভাইরাস মোকাবিলায় সতর্ক থাকতে হবে। ভারতীয় হাইকমিশনার তাদের কোভিড-১৯ মোকাবিলার খারাপ সময়ে চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করে সাহায্য করার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর একটি অত্যন্ত দুর্লভ আলোকচিত্র হস্তান্তর করেন। আলোকচিত্রটিতে ১৯৭২ সালে শেখ মুজিবুর রহমানকে একজন নিরাপত্তা সদস্যকে তার সঙ্গে দুপুরের আহারের জন্য তার বাড়িতে নিতে দেখা যায়। পাশাপাশি তিনি কিছু সংবাদপত্রের ক্লিপিংস এবং অডিও ও ভিডিও সম্বলিত একটি পেনড্রাইভও হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে পাকিস্তানের দখলদার বাহিনীর হাতে বন্দিদশায় তার ভয়াবহ দিনগুলোর কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, কিন্তু ভারত যখন বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় তখন তা তাদের জন্য মহান বার্তা ছিল। এ সময় অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মো. জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ডক্টর আহমদ কায়কাউস এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনার বিনয় জর্জ উপস্থিত ছিলেন। জয়িতা টাওয়ার প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন আজ বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রাঙ্গণে নির্মিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মু্যরাল উদ্বোধন ও ধানমন্ডিতে জয়িতা টাওয়ার নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার সকাল ১০টায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হবেন তিনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, জাতির পিতার স্মৃতি সংরক্ষণ এবং নতুন প্রজন্মের কাছে তার অবদান তুলে ধরতে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রাঙ্গণে নির্মিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের টাইলস মু্যরাল নির্মাণ করা হয়েছে। মু্যরালটির উচ্চতা ১৪ ফুট ৬ ইঞ্চি ও প্রস্থ ১০ ফুট ৬ ইঞ্চি। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, রাজধানীর ধানমন্ডির ২৭ নম্বর (পুরাতন) রোডে এক বিঘা জমির ওপর ১৬৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে বার তলাবিশিষ্ট জয়িতা টাওয়ার। দেশের নারী উদ্যোক্তাদের জয়িতা ব্র্যান্ডের আওতায় নানামুখী ব্যবসার উদ্যোগে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে অত্যাধুনিক ভৌত অবকাঠামো সুবিধা সম্বলিত জয়িতা টাওয়ার নির্মাণ করা হচ্ছে।