শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
আজ কালীগঞ্জ গণহত্যা দিবস

১৩৬ বাঙালিকে নির্মমভাবে হত্যা করে হানাদার বাহিনী

ম কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি
  ০১ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০
বিজয় এসেছে বিজয় আসবেই। আজ থেকে শুরু হচ্ছে মহান বিজয় দিবসের মাস, বাঙালি জাতির বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় মাস। ছবিটি মঙ্গলবার নওগাঁ বিজয় স্মৃতিস্তম্ভ থেকে তোলা -পিবিএ

আজ ১ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ের এইদিনে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের খলাপাড়া গ্রামে অবস্থিত ন্যাশনাল জুট মিলের ভিতর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও মুক্তিযোদ্ধা সহযোগীসহ ১৩৬ জন বীর বাঙালিকে লাইনে দাঁড় করিয়ে পাক হানাদার বাহিনী ব্রাশ ফায়ার করে নির্মমভাবে হত্যা করে। সেই থেকে প্রতি বছর ১ ডিসেম্বর এলে ওই শহীদদের স্মরণে গণহত্যা দিবস পালিত হয়। দিবসটি উপলক্ষে আজ বিকেলে শহীদদের গণকবরে উপজেলা প্রশাসন, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে এবং শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া কামনা করা হবে।

কালীগঞ্জ উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. মোস্তফা মিয়া জানান, ১৯৭১ সালের ১ ডিসেম্বর কালীগঞ্জ ন্যাশনাল জুট মিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা সকালের নাস্তা খেতে বসার মুহূর্তে পশ্চিম পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পার্শ্ববর্তী ঘোড়াশাল ক্যাম্প থেকে নদী পার হয়ে মিলের ভিতর ঢুকে মুক্তিযোদ্ধাদের খুঁজতে থাকে। ওইদিন সকাল থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত ন্যাশনাল জুট মিলের নিরীহ বাঙালি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এক লাইনে দাঁড় করিয়ে হানাদার বাহিনীরা গুলি করে নির্মম গণহত্যা চালায়। পাক বাহিনী গণহত্যা চালিয়ে দক্ষিণ দিকের দেয়াল ভেঙে মিল ত্যাগ করে। ৩/৪ দিন নিরীহ বাঙালিদের মৃতদেহ মিলের সুপারি বাগানে পড়ে থাকে। পাক বাহিনীর ভয়ে এলাকার কেউ মিলের ভেতরের লাশগুলো উদ্ধার করতে এগিয়ে আসতে সাহস পায়নি। ফলে মৃতদেহগুলো শেয়াল-শকুনের খাদ্যে পরিণত হয়। দেশ স্বাধীন হলে এলাকাবাসী মিলের ভিতর গিয়ে ১৩৬ জনের মৃতদেহ বিকৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। পরে ন্যাশনাল জুট মিলের দক্ষিণ পাশে বিকৃত মৃতদেহের ১০৬ জনকে গণকবরে সমাহিত করা হয়। বাকি মৃতদেহ স্বজনরা নিয়ে যায়।

মিল কর্তৃপক্ষ গণহত্যার শিকার শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে 'শহীদদের স্মরণে ১৯৭১' নামক একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করেন। শহীদদের গণকবরের পাশে একটি পাকা মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতি বছর ১ ডিসেম্বর এলে ১৩৬ জন শহীদের গণকবরে উপজেলা প্রশাসন, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে এবং শহীদদের আত্মার মাগফেরাত করে দোয়া কামনা করে।

\হ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে