মেয়র আব্বাসের দুই অবৈধ ভবন ভেঙে দিয়েছে প্রশাসন

প্রকাশ | ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০

রাজশাহী অফিস
রাজশাহীর পবা উপজেলার কাটাখালী পৌরসভায় সরকারি খাল দখল করে মেয়র আব্বাস আলীর নির্মাণাধীন দুই ভবন ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন। শনিবার সকাল ৯টায় ভবন ভাঙা শুরু করা হয়। ভবন দুটি ভাঙায় নেতৃত্ব দেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ও পবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ এহসান উদ্দীন। তিনি বলেন, তারা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে এটা উচ্ছেদে চিঠি পেয়েছিলেন। পরে তারা মেয়রকে ৩০ দিন আগে উচ্ছেদের নোটিশ দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এরপর এটি আইন অনুযায়ী, ভাঙা হচ্ছে। শনিবার সকালে সরেজমিন দেখা গেছে, সকাল ৯টার মধ্যেই উচ্ছেদে চলে আসে জেলা প্রশাসন। এই খবরে কাটাখালী বাজারে মানুষের ভিড় জমে যায়। শ্রমিক ও বুলডোজার দিয়ে ভবন ভাঙা শুরু হয়। এর আগে গত ১০ অক্টোবর এ বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপের জন্য চিঠি দেয় স্থানীয় সরকার, পলস্নী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিটিতে বলা হয়, গত ২৭ সেপ্টেম্বর পত্রিকার সংবাদ প্রকাশের পর থেকে বিষয়টি তদন্ত করে মতামতসহ জরুরি ভিত্তিতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। চিঠি দেওয়ার প্রায় দুই মাস পর ভবনটি ভাঙা শুরু করল প্রশাসন। জলাবদ্ধতা নিরসনে বছরখানেক আগে কাটাখালী পৌরসভার ওপর দিয়ে যাওয়া খালটি ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ পুনঃখনন করে। গত এপ্রিলের দিকে কাটাখালীর মেয়র সরকারি এই খালের ওপর ভবন নির্মাণ শুরু করেন। ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে সরকারি খালের ব্রিজের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে খালের ওপর প্রায় এক হাজার ১৪৪ বর্গফুট জায়গাজুড়ে একটি তিনতলা ভবন নির্মাণ শুরু হয়। ১৯ জুলাই একতলার ছাদ ঢালাই সম্পন্ন হয়। ইতোমধ্যে দুইতলা ভবন উঠে গেছে। এই ভবনটি তিনতলা হওয়ার কথা। যেখানে দোকান হওয়ার কথা ২১টি। অন্যদিকে ব্রিজের উত্তর পাশে খালের ওপর আরেকটি ভবনের দুইতলা উঠে গেছে। এই ভবনে মোট ছয়টি দোকান নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। সরকারি খাল দখল করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ করেন পৌরসভার কয়েকজন কাউন্সিলর। এই অভিযোগের ভিত্তিতে গত আগস্ট মাসে পবা উপজেলার ভূমি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দেশ দেন। এরপর কয়েক দিন কাজ বন্ধ থাকলেও পরে আবার জোরেশোরে নির্মাণকাজ শুরু হয়। কিন্তু এসবের পরও ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু করেনি প্রশাসন। ভবনটি এমন সময় ভাঙা শুরু হলো যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মু্যরাল নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় মেয়র আব্বাস আলী কারাগারে। এ ছাড়া তিনি একই অভিযোগে পৌর আওয়ামী লীগ থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। তাকে আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য জেলা আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে কেন্দ্রে সুপারিশ পাঠিয়েছে।