রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার শঙ্কা

পুঁজিবাজারে বিদেশিদের শেয়ার বিক্রির হিড়িক

অক্টোবরে ২৮২ কোটি ৯০ লাখ ৯৭ হাজার ৪৫৩ টাকা শেয়ার কেনার বিপরীতে ৪৮৪ কোটি ১৮ লাখ ৯১ হাজার ৭৭৫ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছেন তারা

প্রকাশ | ১২ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
একমাস যেতে না যেতেই পুঁজিবাজারে আবারও প্রবাসী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রিতে ‘হিড়িক’ লেগেছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নিবার্চনকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার শঙ্কায় বিদেশিরা শেয়ার বিক্রি করে নগদ অথর্ হাতে নিয়ে নিচ্ছেন। ফলে সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় অক্টোবরে শেয়ার বিক্রির প্রবণতা বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য মতে, টানা ছয় মাস পর সেপ্টেম্বর মাসে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীরা ২১২ কোটি ৩৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি বিপরীতে ২৪৭ কোটি সাড়ে ৫০ লাখ টাকার শেয়ার কিনেছিল। কিন্তু অক্টোবরে এসে সেই দৃশ্য পাল্টে গেছে। এ মাসে উল্টো ২৮২ কোটি ৯০ লাখ ৯৭ হাজার ৪৫৩ টাকা শেয়ার কেনার বিপরীতে ৪৮৪ কোটি ১৮ লাখ ৯১ হাজার ৭৭৫ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছেন তারা। যা সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় ২৭২ কোটি বেশি। যা গত মাসের চেয়ে আড়াই গুণ বেশি। আর শেয়ার বিক্রির কারণে এ মাসে লেনদেন ৩০৭ কোটি ২৫ লাখ ৩৪ হাজার ৩৫৮ টাকা বেড়ে দঁাড়িয়েছে ৭৬৭ কোটি ৯ লাখ ৮৯ হাজার ২২৯ টাকায়। এর আগের মাসে লেনদেন হয়েছিল ৪৫৯ কোটি ৮৪ লাখ ৫৪ হাজার ৮৭১ টাকার। তার আগের আগস্ট মাসে বিনিয়োগকারীদের লেনদেন হয়েছিল ৩৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৩ হাজার ২০৭ টাকা। সেই মাসে বিদেশিরা ১৮১ কোটি ৭৬ লাখ ৫০ হাজার ৪২৩ টাকার শেয়ার বিক্রির বিপরীতে শেয়ার কিনেছিলেন ১৭৬ কোটি ১ লাখ ৮০ হাজার ১৮৪ টাকার। তারও আগের মাস জুলাইয়ে বিদেশিরা শেয়ার কিনেছেন ৪১২ কোটি ৪ লাখ ১৯ হাজার ৪৫১ টাকার। তার বিপরীতে বিক্রি করেছেন ৪৪৪ কোটি ৭৪ লাখ ৮২ হাজার ৮১৩ টাকার। তারও আগের মাস জুনে ৪৪৬ কোটি ৫৭ লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৮ টাকার শেয়ার বিক্রির বিপরীতে ৬৫৩ কোটি ২৯ লাখ ৩ হাজার ৯৬০ টাকার শেয়ার কিনেছিলেন তারা। একইভাবে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে শেয়ার বিক্রি করে আসছেন বিদেশিরা। ফলে ক্রমাগতভাবে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও। আর লেনদেন কমায় মুনাফাবঞ্চিত হয়েছে ব্রোকারেজ হাউজ। পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় বঞ্চিত হয়েছে সরকার। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দরপতনে পুঁজি হারানোর ভয়ে বিদেশিদের কেউ কেউ শেয়ার বিক্রি করে বাজার ছেড়েছেন। আবার কেউ কেউ বাজার পযের্বক্ষণ করেছিলেন। ডিএসইতে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে চীনা কনসোটির্য়ামের অথর্ ও আইসিবি ২ হাজার কোটি টাকার ফান্ড পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ শুরু হওয়ার পর থেকে বিদেশিদের মধ্যে আস্থা একটু বাড়ছে। ফলে আগামীতে বাজারে বিদেশিদের বিনিয়োগ বাড়াবে বলে প্রত্যাশা করেন তারা। এ বিষয়ে সাবেক তত্ত¡াবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ড. এবি মিজার্ আজিজুল ইসলাম বলেন, জাতীয় নিবার্চনকে সামনে রেখে এখনো পুঁজিবাজারের বিনিয়োগ নিয়ে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দো-টানা অবস্থা রয়েছে। তবে চীনা জোট ডিএসইতে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে অংশগ্রহণ করার পর থেকে তাদের মধ্যে আস্থা একটু বেড়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, নতুন সরকার গঠনের পর বিনিয়োগ বাড়বে।