একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন

আওয়ামী লীগে আলাউদ্দিন বিএনপিতে মোশাররফ

পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙাবালী)

প্রকাশ | ১৩ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

চঞ্চল সাহা, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনে পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনে সম্ভাব্য প্রাথীের্দর যোগ্যতা, সততা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। ইতোমধ্যে সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের বিবরণী তুলে ধরে নৌকা প্রতীকে ভোট প্রাথর্না করা হচ্ছে। এ আসনটি কলাপাড়া উপজেলার দুটি পৌরসভাসহ ১৪টি ইউনিয়ন ও রাঙ্গাবালী উপজেলার পঁাচটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। কলাপাড়া এবং কুয়াকাটা এ দুটি পৌরসভাসহ ১৪টি ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৬৮ হাজার ৫৩৪। অপরদিকে, রাঙ্গাবালী উপজেলার পঁাচটি ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ৭৪ হাজার ৮১৭ জন। এ আসনটিতে আ’লীগের অন্তত ২২ জন এবং বিএনপি থেকে তিনজন ও ইসলামী ঐক্যজোট থেকে একজন প্রাথীর্র নাম শোনা গেলেও জাতীয় পাটির্ থেকে এখনো পযর্ন্ত কোনো প্রাথীর্র নাম শোনা যাচ্ছে না। তবে স্বাধীনতার পর থেকে এ আসনটি আ’লীগের দখলে রয়েছে। সে হিসেবে এবারও আ’লীগ প্রাথীর্র এ আসন থেকে পাস করার সম্ভাবনা থাকলেও এলাকার মানুষ প্রাথীর্র পরিবতর্ন চান। এ আসনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আলাউদ্দিন আহামেদ কলাপাড়া উপজেলার দুটি পৌরসভা এবং রাঙ্গাবালী উপজেলার পঁাচটি ইউনিয়নে ব্যাপক গণসংযোগ করছেন। সৎ, আদশর্বান এ নেতার প্রতি মানুষের ভালোবাসারও কমতি নেই। দক্ষ এ রাজনীতিবিধ কলাপাড়া উপজেলা আ’লীগের দু-দুবার সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন, তখন ওই আসনে দলীয় কোন্দলের লেশমাত্র ছিল না। পরবতীর্কালে আমেরিকায় অবস্থানকালীন মেট্রো ওয়াশিংটন আ’লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বতর্মানে ওয়াশিংটন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা। ছাত্র রাজনীতি থেকে এলাকায় ছাত্রলীগের অগ্রণী ভ‚মিকায় ছিলেন আলাউদ্দিন আহামেদ। ’৫২-এর ভাষা আন্দোলনের পর কলাপাড়ায় প্রথম শহীদ মিনার স্থাপনে তার ভ‚মিকা ছিল অন্যতম। ’৭৫-পরবতীর্ রাজনৈতিক সংকটে এলাকায় আওয়ামী লীগের হাল ধরে রেখেছেন এ নেতা। কলাপাড়া সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আস্থার মানুষ আলাউদ্দিন আহামেদ। দেশের বিভিন্ন সংকটকালীন আলাউদ্দিন আহামেদকে কাছে পেয়েছে তারা। সৎ, নিভীর্ক, জননন্দিত নেতা আলাউদ্দিন আহামেদ দলের বাইরে ভোট আনতে সক্ষম। সে হিসেবে একাদশ সংসদ নিবার্চনে তাকেই প্রাথীর্ হিসেবে পেতে চান এলাকার মানুষ। অপরদিকে, সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আলহাজ মাহবুবুর রহমান তালুকদার এমপি এ আসন থেকে পুনরায় মনোনয়ন পেতে আগ্রহী। তবে এলাকায় তার কোনো দৃশ্যমান গণসংযোগ নেই। এ ছাড়া পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন এলাকায় কতিপয় ছাত্রলীগ নামধারী নেতার জমি দখল, সালিশ বাণিজ্যসহ তার বিরুদ্ধে দুনীির্ত দমন কমিশনের মামলা থাকায় ভোটের রাজনীতিতে তিনি অনেকটা পিছিয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া কলাপাড়ায় তিনজন বিএনপি নেতাকে আ’লীগে যোগদান করিয়ে তিনি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। এসব বিএনপি নেতা জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন কলাপাড়ার বিভিন্ন সভা-সমাবেশে জাতির জনকের সমালোচনাÑ এমনকি বতর্মান প্রধানমন্ত্রীর কট্টর সমালোচনা করতেন। প্রকৃত আওয়ামী লীগের নেতাদের কোণঠাসা করে হাইব্রিড আওয়ামী লীগের নেতা তৈরি করায় দলের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বতর্মানে মাহবুবুর রহমানের পাশে রয়েছেন তার কাছ থেকে পাওয়া সুবিধাভোগীরাই। এ ছাড়া মাহবুবুর রহমান তালুকদার কলাপাড়ার একসময় তুখোড় জামায়াত নেতা, তার ভগ্নিপতি মো. মজিবর রহমানকে আওয়ামী লীগের নেতা তৈরি করেছেন। ওই মজিবর রহমানও এখন অনেক অথির্বত্তের মালিক। অন্যদিকে, বিএনপি থেকে বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক ও কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি এবিএম মোশাররফ হোসেনের মনোনয়ন অনেকটা নিশ্চিত। এ আসন থেকে নবম জাতীয় সংসদ নিবার্চনে অংশগ্রহণ করে সম্মানজনক ভোটও পেয়েছিলেন তিনি। এ আসনে বিএনপির অপর একটি গ্রæপ থাকলেও তা মোশাররফপন্থিরা কেউ আমলে নিচ্ছেন না। সে হিসেবে এবিএম মোশাররফ হোসেনের কোনো বিকল্প নেই বলে তার অনুসারীরা মনে করছেন। তবে বিএনপি এ আসনে এখনো পযর্ন্ত কোনো প্রকার গণসংযোগ করছে না। এ আসন থেকে বিএনপির অপর এক প্রাথীর্ সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি একসময় উপজেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। এলাকায় একক ভোটে এগিয়ে ছিলেন তিনি। বতর্মানে দলে তার আগের মতো সক্রিয় অবস্থান না থাকায় ভোটের রাজনীতিতে তিনিও অনেকটা পিছিয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া আ’লীগ ও বিএনপিতে আরও অন্তত ২৫ জন সম্ভাব্য প্রাথীর্ রয়েছেন, যাদের কোনো গণসংযোগ এখনো দেখা যাচ্ছে না।