রোহিঙ্গাদের প্রথম দল ফেরত যাচ্ছে কাল, সম্মতি মিয়ানমারের

প্রকাশ | ১৩ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
আগামী বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটিকে প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে চূড়ান্তভাবে সম্মত হয়ে সম্মতিপত্র পাঠিয়েছে মিয়ানমার। সোমবার বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, গত সোমবার বিকালে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে একটি নোট ভাবাের্লর মাধ্যমে এ সম্মতি জানানো হয়। এর মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার আনুষ্ঠানিক কাযর্ক্রম শুরু করছে মিয়ানমার। উভয় দেশের পদক্ষেপ ও মিয়ানমারের চূড়ান্ত সম্মতি অনুযায়ী প্রথম ব্যাচে ৪৮৫টি পরিবারের ২ হাজার ২৬০ জন রোহিঙ্গা ফেরত যাবেন। এর আগে গত ৩ নভেম্বর রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বলতে গিয়ে পররাষ্ট্র সচিব জানিয়েছিলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য এখন পযর্ন্ত ভারত রাখাইনে ২৮৫টি বাড়ি তৈরি করে দিয়েছে এবং চীন একহাজার বাড়ি তৈরির সরঞ্জাম দিয়েছে। উল্লেখ্য, মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের মুসলমান রোহিঙ্গাদের ওপর গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে গণহত্যা, নিপীড়ন, সংঘবদ্ধ ধষর্ণ, বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়াসহ নানা ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ চালিয়ে আসছে দেশটির সেনাবাহিনী ও তাদের মদতপুষ্ট বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কয়েকটি গোষ্ঠী। ফলে ধারাবাহিকভাবে সাত লাখেরও বেশি আশ্রয়ের জন্য পালিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তে চলে আসে। বাংলাদেশ তাদের আশ্রয় দিলেও তাদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে আন্তজাির্তক সম্প্রদায়কে মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়াতে আহŸান জানায়। সারাবিশ্বে নিন্দিত এ ঘটনায় চরম সমালোচিত হয়ে চাপের মুখে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আলোচনায় সম্মত হয় মিয়ানমার। পরে তালিকা সরবরাহ ও যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার কথা বলে দেশটির সামরিকবাহিনীর সমথর্নপুষ্ট সরকার। সরকার তাতেও রাজি হলে রোহিঙ্গাদের তালিকা সরবরাহ করা হয়। এরপর যাচাই-বাছাই ও দ্বিপক্ষীয় আলোচনার জন্য উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও কমর্কতার্রা কয়েক দফায় বৈঠকে মিলিত হন। সবের্শষ গত ৩০ অক্টোবর মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থো ঢাকায় এসে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হকের সঙ্গে এ ব্যাপারে বৈঠক করেন। এরপর সাংবাদিকদের মিন্ট থো বলেন, ‘আমাদের দুইপক্ষেরই রাজনৈতিক সদিচ্ছা আছে এবং আমরা দুই পক্ষই দ্রæত প্রত্যাবাসন শুরু করতে চাই।’ রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা রাখাইনে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি। এর মধ্যে রয়েছে সেখানকার পুলিশ এবং জনগণকে সচেতন করা, যাতে রোহিঙ্গারা বৈষম্যের শিকার না হয়।’ বতর্মানে বাংলাদেশে সাড়ে দশ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণাথীর্ হিসেবে বসবাস করছে।