সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নয়াপল্টনে পুলিশের ওপর হামলা পরিকল্পিত

প্রকাশ | ১৫ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
সংঘষর্ চলাকালে পুলিশের গাড়িতে বিএনপির বিক্ষুব্ধ নেতাকমীের্দর হামলা ও ভাঙচুর Ñযাযাদি
নিবার্চন বানচালের জন্য নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কাযার্লয়ের সামনে পুলিশের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা ও গাড়ি পোড়ানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বুধবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ দাবি করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মনে করি এটা পরিকল্পিতভাবে হয়েছে। যখন দেশ একটি সুন্দর নিবার্চনের দিকে যাচ্ছে, নিবার্চন কমিশন যখন সিডিউল ঘোষণা করেছে, মানুষ যখন একটা সুষ্ঠু নিবার্চনের অপেক্ষায় রয়েছে, সেই সময়ে এটি পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে।’ আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমরা মনে করি নাশকতা তৈরি করে, ধূম্রজাল সৃষ্টি করে নিবার্চন বানচালের একটা অপচেষ্টা এটা। পুলিশের ওপর হঠাৎ আক্রমণ সেটাই মনে করিয়ে দেয়।’ ‘এ ঘটনাটা অত্যন্ত দুঃখজনক। সবাই যখন নিবার্চনের জন্য উন্মুখ, তখনই এ ঘটনা ঘটল। স্পষ্টতই প্রতীয়মান যে এটা উদ্দেশ্যমূলক, এটা নিবার্চনকে বানচাল করার ষড়যন্ত্র।’ মন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে ১৩ পুলিশ ও তিন আনসার সদস্য আহত হয়েছেন। তারা হাসপাতালে ভতির্ রয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশের দুটি নতুন গাড়ি তারা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। একটি এপিসি (আমার্ডর্ পাসোের্নল ক্যারিয়ার-সঁাজোয়া যান) ভেহিক্যাল সেখানে ছিল, সেই এপিসি ভেহিক্যালেও তারা আগুন ধরানোর চেষ্টা করে। পুলিশ সক্রিয় থাকায় এপিসি ভেহিক্যালটা রক্ষা পায়।’ তিনি বলেন, ‘এ ঘটনা যারা ঘটিয়েছে, ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নয়াপল্টনে বিএনপির দুই মনোনয়ন প্রাথীর্ মিজার্ আব্বাস ও মেজর আকতার আসছিলেন মনোনয়ন পেপার সাবমিট করতে। এ সময় উত্তেজনা দেখা দেয়, উত্তেজনার একপযাের্য় নিজেদের মধ্যে হাতাহাতি-মারামারি হয়। পুলিশ আগে থেকেই বলেছিল যে, সেখানকার (নয়াপল্টনের) দুটি রাস্তার একটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত রাখতে। তারা সম্পূণর্ রাস্তা বন্ধ করে এ দুই গ্রæপ ও অন্যান্য গ্রæপরা এসে অবস্থান করছিল।’ ‘পুলিশ খেয়াল করে ওখানে উত্তেজনা সৃষ্টি ও ধাক্কাধাক্কি ও অসহিষ্ণু পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এরপর দঁাড়িয়ে থাকা পুলিশের ওপরে তারা ইট পাটকেল ছেঁাড়া শুরু করে। যখন পুলিশ বলছিল, দুই রাস্তার একটি খুলে দেয়ার জন্য। সেই সময় একটা ধাক্কাধাক্কি ও পুলিশের ওপর আক্রমণ আপনারা সবাই লক্ষ্য করেছেন।’ ধানমÐিতেও আওয়ামী লীগ অফিসে মনোনয়নপ্রাথীের্দর কারণে রাস্তায় যান চলাচলে বিঘœ ঘটছে, নয়াপল্টনে কেন নেতাকমীের্দর সরিয়ে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হলোÑএ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এ রাস্তাটি গুরুত্বপূণর্, আর ধানমÐিরটা বাইলেন, একটা রেসিডেন্সিয়াল এলাকায় ঢোকার জন্য সেই রাস্তা। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী সেই রাস্তাটিও খালি রাখতে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে।’ বিএনপির মহাসচিব ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দুভার্গ্যজনকভাবে বিএনপি নেতাকমীের্দর ওপর হামলা চালিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এ ধরনের পরিস্থিতি করে সরকার নিবার্চনী পরিবেশ নষ্ট করছে।’ মিজার্ ফখরুলের এ বক্তব্যের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভিডিও ফুটেজে যা আছে, সাধারণ মানুষ যা দেখেছে- আমি সেটারই বণর্না করেছি। বিএনপি নেতা কী বলেছেন সেগুলোকে আমরা চ্যালেঞ্জ করতে চাই না। আমাদের পুলিশ তাদের (বিএনপি) নিরাপত্তা দেয়ার জন্যই সেখানে অবস্থান করছিল। তারা (পুলিশ) আগেভাগে কিছুই করেনি। দুই নেতা যখন ঢুকলেন তখনই এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।’ ‘পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করেছে, পুলিশ মার খেয়েছে। পুলিশের মারমুখী আচরণ ছিল না। মারমুখী আচরণ থাকলে ১৬ পুলিশ আহত হতো না। আমরা মনে করি পুলিশ অত্যন্ত ধৈযের্র সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছে এবং আহত হয়েছে’Ñবলেন আসাদুজ্জামান খান। নিবার্চনের আগে এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ তৈরি আছে বলেও মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার কোনো রাজনৈতিক মামলা রুজু করেনি, ভাঙচুর কিংবা বাধা প্রদান কিংবা ভয়ভীতি প্রদশর্ন কিংবা আইসিটি অ্যাক্টের মামলা এখানে হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি জোট প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার সময় একটা লিস্টও দিয়েছে। সেই লিস্টটা আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি, যদি তাদের কথার সত্যতা আমরা পাই তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আমরা অলরেডি কাজ শুরু করেছি।’