বিক্ষোভ, ¯েøাগান

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন স্থগিত

জাতিসংঘের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তজাির্তক দাতাসংস্থা রাখাইনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিরোধিতা করে বলছে, সেখানে রোহিঙ্গাদের জন্য এখনো নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা হয়নি

প্রকাশ | ১৬ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
প্রত্যাবাসনের বিরোধিতা করে মিয়ানমার সীমান্তের কাছে কক্সবাজারের উঁচিপ্রাং শরণাথীর্ শিবিরে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ করেন রোহিঙ্গারা Ñসংগৃহীত
মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের রাখাইনে ফিরে না যাওয়ার দাবিতে কক্সবাজারে শরণাথীর্ শিবিরে বিক্ষোভ করেছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা। রোহিঙ্গাদের এই বিক্ষোভের পর প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুটি সূত্রের বরাত দিয়ে বাতার্সংস্থা রয়টাসর্ বলছে, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়েছে। গত অক্টোবরে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম দফায় দুই হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে রাখাইনে প্রত্যাবাসন শুরুর কথা ছিল বৃহস্পতিবার। কিন্তু তখন থেকেই এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার শুরু হওয়া নিয়ে ব্যাপক সন্দেহ দেখা দেয়। জাতিসংঘের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তজাির্তক দাতাসংস্থা রাখাইনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিরোধিতা করে বলছে, সেখানে রোহিঙ্গাদের জন্য এখনো নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা হয়নি। বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি রাখাইনে ব্যাপক সহিংসতার শিকার রোহিঙ্গারাও মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার বিরোধিতা করে আসছে। মিয়ানমার সীমান্তের কাছে কক্সবাজারের উঁচিপ্রাং শরণাথীর্ শিবিরে গতকাল বিক্ষোভ করেন হাজার হাজার রোহিঙ্গা। এ সময় ‘না, না, আমরা ফেরত যাব না’ বলে ¯েøাগান দিতেও দেখা যায় তাদের। অনেকের হাতে প্ল্যাকাডের্ দেখা যায়, আমরা ন্যায়বিচার চাই, নাগরিকত্ব ছাড়া আমরা কখনোই মিয়ানমারে ফিরে যাব না। এর আগে, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্তত তিনজন রয়টাসের্ক বলেছে, প্রথম দফায় তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গাদের কেউই রাখাইনে ফিরতে রাজি না হওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে প্রত্যাবাসন শুরু হয়নি। ওই সূত্রের একজন বলেন, ‘কেউই ফিরে যেতে চায় না।’ বৃহস্পতিবার প্রথম দফায় দুই হাজার ২০০ জন রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানোর কথা ছিল। এদিকে, মিয়ানমারের কমর্কতার্রা বলেছেন, তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে প্রস্তুত ছিলেন। তবে বাংলাদেশ বলছে, জোরপূবর্ক কাউকে ফেরত পাঠানো হবে না। তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গারা আসলেই মিয়ানমারে ফিরতে চায় কি-না তা নিশ্চিত করার জন্য জাতিসংঘের শরণাথীির্বষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের প্রতি আহŸান জানিয়েছে ঢাকা। বিষয়টি স্পশর্কাতর হওয়ায় নাম প্রকাশ না করার শতের্ ওই সূত্র বলছে, কেউই রাখাইনে ফিরতে রাজি নয়; এমন তথ্য জানাতে সীমান্তে মিয়ানমারের সংশ্লিষ্ট কমর্কতাের্দর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বাংলাদেশের কমর্কতার্রা। তবে এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত বেশ কিছু ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সীমান্তের ওপারে একটি অভ্যথর্না কেন্দ্রে অপেক্ষা করছেন মিয়ানমারের কমর্কতার্রা। গত বছরের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের রাখাইনে দেশটির রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী। রক্তাক্ত ওই অভিযানের মুখে প্রায় সাত লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা সেখানে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা, ধষর্ণ, অগ্নিসংযোগসহ নৃশংস অভিযানের অভিযোগ করেছেন। তবে দেশটির সেনাবাহিনী রাখাইনে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান পরিচালনা করছে বলে দাবি করে আসছে। একই সঙ্গে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আনা সব ধরনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।