তিন মাস পর জামিন পেলেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম

প্রকাশ | ১৬ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
শহিদুল আলম
নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের সময় উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচারের অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় তিন মাস ধরে কারাগারে থাকা আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে জামিন দিয়েছে হাইকোটর্। তার জামিন প্রশ্নে এক মাস আগে অন্য একটি বেঞ্চের দেয়া রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি শেখ আবদুল আউয়ালও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবতীর্র হাইকোটর্ বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয়। আদালতে শহিদুল আলমের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সারা হোসেন ও জ্যেতিমর্য় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটনির্ জেনারেল মাহবুবে আলম। পরে সারা হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, জামিন পাওয়ায় শহিদুল আলমের মুক্তিতে আর কোনো বাধা থাকল না। ‘হাইকোটর্ থেকে আজ বলা হলো, যেহেতু উনাকে অনেকদিন ধরে আটকে রাখা হয়েছে, ১০২ দিন হয়ে গেছে এবং রিমান্ডে নেয়ার পরও কোথাও তিনি কখনো স্বীকার করেননি যে এরকম কোনো বক্তব্য তিনি দিয়েছেন; আজ উনাকে জামিন দেয়া হচ্ছে। এই আইনজীবী বলেন, শহিদুলের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়ার যে অভিযোগ আনা হয়েছে আর পুলিশ প্রমাণ হিসেবে যা দিয়েছে, সেগুলোর ‘মিল নেই’। ‘যেহেতু তিনি এই উপমহাদেশে এমনকি সারা বিশ্বের একজন নামকরা আলোকচিত্রী, এই বিষয়টাও আদালত বিবেচনায় নিয়েছেন। এই মুহূতের্ উনার মুক্তি পেতে বাধা নাই। সরকার যদি আবারও বিরোধিতা করে সেটা পরে দেখা যাবে।’ জামিন আদেশের পর শহীদুল আলমের স্ত্রী রেহনুমা আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি খুবই খুশি। বাংলাদেশের বিচারালয়ের ওপর আস্থা ফিরে পেয়েছি। এটা (জামিন) হওয়ারই কথা ছিল।’ অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী অ্যাটনির্ জেনারেল মো. আলী জিন্নাহ বলেন, এই জামিন আদেশের বিরুদ্ধে তারা আপিলে যাবেন। নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষাথীের্দর আন্দোলনের মধ্যে গত ৩ ও ৪ আগস্ট জিগাতলা এলাকায় সংঘষের্র বিষয়ে কথা বলতে বেশ কয়েকবার ফেসবুক লাইভে এসেছিলেন অধিকারকমীর্ শহিদুল। ওই আন্দোলনের বিষয়ে আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি সরকারের সমালোচনাও করেন। এরপর ৫ আগস্ট শহিদুল আলমকে তার বাসা থেকে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশ। পরদিন ‘উসকানিমূলক মিথ্যা’ প্রচারের অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলা করে তাকে আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে পাঠায়। ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েস শহিদুল আলমের জামিন আবেদন নাকচ করেন। এরপর ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি হাইকোটের্ জামিন আবেদন করলে ৩ অক্টোবর শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে গত ৭ অক্টোবর হাইকোটর্ শহিদুল আলমের জামিন প্রশ্নে রুল জারি করে। কেন জামিন দেয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। এক সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। সেই রুলের ওপর বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের হাইকোটর্ বেঞ্চে শুনানি শুরু হলেও গত ১ নভেম্বর মামলাটি ওই বেঞ্চের কাযর্তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়। এরপর সহিদুল আলমের আইনজীবীরা বিচারপতি শেখ আবদুল আউয়াল ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবতীর্র হাইকোটর্ বেঞ্চে গিয়ে নিজেদের পক্ষে আদেশ পেলেন।