বাজারদর

বাজারে ভোজ্যতেলের উত্তাপ মুরগি ও সবজি আগের মতোই

প্রকাশ | ২২ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
সপ্তাহ ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে চড়া দামেই স্থিতিশীল রয়েছে অধিকাংশ ভোগ্যপণ্য। এর মধ্যে নতুন করে উত্তাপ বাড়িয়েছে ভোজ্যতেল। ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে নতুন মূল্য নির্ধারণে সরকার সময় নিলেও ইতিমধ্যে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। এদিকে রেকর্ড মৃল্যবৃদ্ধির পর ফের ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবে ক্ষোভ জানিয়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খোলা ও ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল নির্ধারিত মূল্যেও চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে। সপ্তাহ ব্যবধানে খোলা সয়াবিন প্রতি লিটারে প্রায় ৪-৫ টাকা বেড়ে এদিন বিক্রি হয়েছে ১৫৫ টাকার ওপরে। অন্যদিকে ৫ লিটারের বোতলে প্রায় ২০-২৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৮০০ টাকার ওপরে। পাইকারি পর্যায়ে বাড়তি দাম ও চাহিদা অনুপাতে তেলের সরবরাহ না থাকায় দাম বেড়েছে বলে জানান খুচরা বিক্রেতারা। কারওয়ান বাজারের তেলের পাইকারি ব্যবসায়ীদের তথ্যানুযায়ী এ সপ্তাহে পাইকারিতে প্রতিমণ সয়াবিন হয়েছে ৫ হাজার ৭৫০ টাকা দরে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৫ হাজার ২০০ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহ ব্যবধানে প্রতিমণ সয়াবিনের দাম বেড়েছে প্রায় ৪০০ টাকা। কারওয়ান বাজারের ভোজ্যতেল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান 'জোয়াদ অয়েলের' ম্যানেজার আলমগীর হোসেন বলেন, মূলত বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম আরেক দফা বৃদ্ধির ফলে দেশের বাজারে দাম বাড়তির দিকে রয়েছে। এ অবস্থায় নতুন দাম নির্ধারণ করা না হলে খুচরা পর্যায়ে দামে অস্থিরতা বজায় থাকবে। তিনি জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে বিশেষ করে মালয়েশিয়াতে প্রতি টন পাম অয়েল বিক্রি হচ্ছে ৫২০০ রিঙ্গিতে। যা গত দুই সপ্তাহ আগে মাত্র ৪৮০০ রিঙ্গিতে বিক্রি হয়েছে। এছাড়াও পশ্চিমা বাজারে দেড় সপ্তাহ ব্যবধানে প্রতি টন সয়াবিন প্রায় ৩০০ ডলার বেড়ে এ সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১৫০০ ডলার করে। এ কারণেই দেশের বাজারে গত দুই সপ্তাহ দাম বাড়তি রয়েছে। ওই ব্যবসায়ী বলেন, এই সপ্তাহে প্রতি মণ সয়াবিন আমদানিতে প্রায় ১৪৮০ ডলার দিতে হয়েছে। এছাড়াও রিফাইনড খরচসহ অন্যান্য খরচ যোগ করে দেশের বাজারে এক টন সয়াবিনে খরচ পড়ে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এ হিসেবে প্রতি মণ সয়াবিনের ক্রয়মূল্য দাঁড়ায় ৫ হাজার টাকার ওপরে। কিন্তু আমরা প্রতি মণ সয়াবিন বিক্রি করছি মাত্র ৫ হাজার ৫৭০ টাকা দরে। অর্থাৎ বুকিং দরের চেয়ে মাত্র ৫৭০ টাকা বেশি। এই লাভে প্রতিষ্ঠান চালানো কঠিন। তাই অনেকেই আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন। যার প্রভাব খুচরা পর্যায়ে পড়ছে। এদিকে রাজধানীর বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ সত্ত্বেও চড়াই রয়েছে মৌসুমি সবজির দাম। তবে সরবরাহ বৃদ্ধিতে কমেছে পেঁয়াজের দাম। পেঁয়াজ প্রতি কেজিতে অন্তত ১০ টাকা কমে বিক্রি হয়েছে ৩০-৩৫ টাকা দরে। অন্যদিকে অপরিবর্তিত রয়েছে শিম- ফুলকপিসহ অধিকাংশ সবজির দাম। এদিন বাজারগুলোতে মাঝারি আকারের ফুলকপির পিস বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকার ওপরে। সাধারণ শিম বিক্রি হয়েছে ৪০-৫০ টাকা এবং বিচিযুক্ত শিম বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকার ওপরে। এ সপ্তাহে শসার দাম কমে প্রতি কেজি ৪০ টাকা দরে বিক্রি হলেও চড়া দামেই স্থিতিশীল রয়েছে করোলস্না, বরবটি, কচুরলতি, বেগুন ও লাউসহ অন্যান্য সবজি। বাজারে এসব সবজির কেজি বিক্রি হয়েছে ৫০-৭০ টাকা দরে। এছাড়াও কিছুটা কমেছে টমেটো ও আলুর দাম আর অপরিবর্তিত রয়েছে শালগম, মুলা, মিষ্টি কুমড়া, কাঁচা কলাসহ বিভিন্ন শাকের দাম। এসব সবজির কেজি বিক্রি হয়েছে ২৫-৪০ টাকার মধ্যে। অন্যদিকে বাজারগুলোতে অপরিবর্তিত রয়েছে ব্রয়লার, সোনালি মুরগি ও ডিমের দাম। এদিন ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হয়েছে ১৬০ টাকা দরে এবং সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হয়েছে ২৫০-২৬০ টাকা দরে। আর প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হয়ে ১১০ টাকা করে। তবে রাজধানীর বাজারগুলোতে অপরিবর্তিত রয়েছে অধিকাংশ মাছের দাম। এদিন আকারভেদে রুই মাছের কেজি বিক্রি হয়েছে ২৮০ থেকে ৪০০ টাকা দরে। কাতল ও কার্প জাতীয় মাছের কেজি বিক্রি হয়েছে ২৫০-৩৫০ টাকা দরে। শিং মাছের কেজি বিক্রি হয়েছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায় আর শোল মাছের কেজি বিক্রি হয়েছে ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকায়। এছাড়াও তেলাপিয়া, পাঙাস ও কৈ মাছের কেজি বিক্রি হয়েছে যথারীতি ১৬০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে। অন্যদিকে চড়া দামেই বিক্রি হয়েছে প্রায় সব ধরনের দেশি ও নদী-নালার মাছ। প্রতি কেজি বোয়াল আকারভেদে বিক্রি হয়েছে ৪৫০-৬৫০ টাকায়, আইড় মাছের কেজি বিক্রি হয়েছে ৫০০ টাকায়, বাইলা মাছের কেজি বিক্রি হয়েছে ৮০০ টাকায় এবং টেংরা ও বাপদা মাছের কেজি বিক্রি হয়েছে ৩৫০-৪০০ টাকা কেজি দরে।। এছাড়ও কোড়াল ও চিংড়িসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছের কেজি বিক্রি হয়েছে ৭০০ টাকার ওপরে। দেশি বড় চিংড়ি বিক্রি হয়ে ৬৫০-৭৫০ টাকা এবং হরিণা, বাগদা ও গলদা আকারভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা দরে।