গবেষণার তথ্য

চট্টগ্রামে ১১ করোনা রোগীর ৮ জনের ওমিক্রন শনাক্ত

প্রকাশ | ২২ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
চট্টগ্রামে দুটি হাসপাতালে চালানো এক গবেষণায় ১১ জন করানা আক্রান্তের নমুনা থেকে ভাইরাসের জেনোম সিকোয়েন্স করে ৮ জনেরই ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। বন্দরনগরীর দুটি হাসপাতালে এই গবেষণা চালানো হয়। গবেষণার নেতৃত্বে থাকা ডক্টর আদনান মান্নান বলেন, গত ১ নভেম্বর থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংগ্রহ করা নমুনার জেনোম সিকোয়েন্সে দেখা গিয়েছিল, সবগুলো সংক্রমণই ছিল ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের। সেখানে নবজাতক \হথেকে ৮০ বছরের বৃদ্ধও ছিল। কিন্তু ২৫ ডিসেম্বরের পর চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল এবং নগরীর মা ও শিশু হাসপাতাল থেকে নেওয়া ১১ জনের নমুনায় ৮ জনের ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে দুজন রোগী এ ভাইরাসের সাম্প্রতিকতম ধরন 'বিএ২' বা 'স্টেলথ ওমিক্রন' ধরনে সংক্রমিত হয়েছে, যা জানুয়ারির শুরু থেকে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস ও হিউস্টন, ভারত, ওমান ও চীনে শনাক্ত হচ্ছে। চট্টগ্রামে এই প্রথম 'বিএ২' শনাক্তের তথ্য এল। অবশ্য নতুন এই ধরনটি খুব বেশি বিপদজনক নয় বলে গবেষকরা জানিয়েছেন। ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে নিয়মিত চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল এবং মা ও শিশু হাসপাতালের রোগীদের জিনোম সিকোয়েন্স করা হচ্ছে জিনমিক সারভাইলেন্স প্রকল্পের আওতায়। এ প্রকল্পের গবেষক দলে আছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও চট্টগ্রামের চিকিৎসকরা। গত ২৫ ডিসেম্বরের পর থেকে জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সংগ্রহ করা এসব নমুনা বিশ্লেষণের তথ্য বৃহস্পতিবার জেনোম সিকোয়েন্সের আন্তর্জাতিক ডেটাবেজ জার্মানির গেস্নাবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটায় (জিআইএসএইড) প্রকাশিত হয়। গবেষক দলের নেতৃত্বে আছেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা. এইচ এম হামিদুলস্নাহ মেহেদী এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক ডক্টর আদনান মান্নান। গবেষক দলের সদস্যরা জানান, ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে গলাব্যথা ও গলার স্বর বিকৃত হয়ে যাওয়ার উপসর্গ দেখা যাচ্ছে সবচেয়ে বেশি। ৯০ শতাংশের মধ্যেই এ লক্ষণ হয়েছে। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা, মাথাব্যথা এবং জ্বর রয়েছে কারও কারও। যাদের তথ্য এ গবেষণায় এসেছে, তাদের সবার বয়স ২১ বছরের বেশি। শিশু বা কিশোর বয়সি কারও ওমিক্রনের সংক্রমণের তথ্য এখানে আসেনি। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা. এইচ এম হামিদুলস্নাহ মেহেদী বলেন, 'চট্টগ্রামে ওমিক্রনে আক্রান্তদের নিয়ে এত অল্প নমুনার বিশ্লেষণে কোনো উপসংহারে আসা সম্ভব নয়। আরও অন্তত কয়েকশ জেনোম সিকোয়েন্স করলে এর চরিত্র নিয়ে ধারণা পাওয়া যাবে।' প্রকল্পের সহ-পরিচালক হিসেবে আছেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা. আব্দুর রব মাসুম, মা ও শিশু হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সঞ্জয় বিশ্বাস এবং ডা. নাহিদ সুলতানা, আইসিডিডিআর, বির ভাইরোলজি বিভাগের বিজ্ঞানী ডক্টর মুস্তাফিজুর রহমান এবং ডক্টর মোহাম্মদ এনায়েত হোসেন। প্রকল্পের সহায়তা ও পৃষ্ঠপোষকতায় আছে কানাডার ডালহৌসি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরি অব ইমার্জিং ইনফেকশাস ডিজিজ এবং তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের দায়িত্বে আছেন অধ্যাপক ডেভিড কেলভিন এবং আব্দুলস্নাহ মাহমুদ আল রাফাত। এদিকে চট্টগ্রামের ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটির (সিভাসু) পরীক্ষাগারের কিটের মাধ্যমে করা পরীক্ষায় ১০টি নমুনার মধ্যে ৭টিতে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনটি শনাক্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। সিভাসুর উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ বলেন, 'কিটের মাধ্যমে পরীক্ষায় নমুনার ফলাফল নিয়ে নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে নমুনাগুলো ঢাকায় পাঠানো হবে। সেখান থেকে ফলাফল এলে তা জানানো হবে।'