খালাস চেয়ে হাইকোটের্ খালেদা জিয়ার আপিল

জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলা

প্রকাশ | ১৯ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুনীির্ত মামলায় সাত বছরের সাজা ও অথর্দÐের রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে হাইকোটের্ আপিল করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। রোববার হাইকোটের্র সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিলটি করেন খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী নওশাদ জমির। পরে নওশাদ জমির বলেন, আপিলে সাজার রায় বাতিল চেয়ে খালেদা জিয়াকে খালাসের আরজি জানানো হয়েছে। এতে আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করতে, অথর্দÐ স্থগিত ও খালেদার জিয়ার জামিনের আরজিও রয়েছে। শিগগিরই আপিল গ্রহণযোগ্যতার শুনানির জন্য হাইকোটের্ বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে। গত ২৯ অক্টোবর ওই মামলায় রায় ঘোষণা করেন পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান। রায়ে খালেদা জিয়া ছাড়া অপর তিন আসামিকেও সাত বছর করে কারাদÐ দেয়া হয়। প্রত্যেককে ১০ লাখ টাকা করে অথর্দÐ দেয়া হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলেন খালেদা জিয়া। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুনীির্ত, হত্যা, নাশকতা, রাষ্ট্রদ্রোহ, মানহানি, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিসহ মোট ৩৪টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট ও এতিমখানা ট্রাস্ট দুনীির্তর মামলায় রায় হয়েছে। ২৪টি যুক্তিতে আপিলটি করা হয়েছে বলে জানান আইনজীবী নওশাদ জমির। তিনি বলেন, জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট একটি ট্রাস্ট, এখানে সরকারের হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ নেই। কারণ এটি পরিচালিত হয় ১৮৮২ সালের ট্রাস্ট আইন দিয়ে। তাই ১৯৪৭ সালের দুনীির্ত প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। ওই ট্রাস্টে অথর্ দিয়েছেন বিএনপির দলীয় নেতা-কমীর্রা। তাই এখানে ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ নেই, কেননা আইনের ৫(২) ধারা অনুসারে ক্ষমতার অপব্যবহার হয়েছে বলে খালেদা জিয়াকে দÐ দেয়া হয়েছে। এই সাজা বাতিল চাওয়া হয়েছে। শিগগিরই আপিল গ্রহণযোগ্যতার শুনানির জন্য হাইকোটের্ বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে। দুনীির্ত দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুনীির্ত মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন খালেদা জিয়া। এই আপিল মোকাবিলায় আমরা সবার্ত্মক প্রস্তুত আছি।’ জিয়া দাতব্য ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ৮ আগস্ট তেজগঁাও থানায় মামলা করে দুদক। তদন্ত শেষে ২০১২ সালে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। ২০১৪ সালের ১৯ মাচর্ খালেদাসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। অপর তিন আসামি হলেনÑ খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের ব্যক্তিগত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও বিএনপির নেতা সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ব্যক্তিগত সহকারী সচিব মনিরুল ইসলাম। এদের মধ্যে হারিছ চৌধুরী পলাতক। অপর দুই আসামি জিয়াউল ও মনিরুল কারাগারে আছেন। এর আগে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুনীির্ত মামলায় দÐিত হন খালেদা জিয়া। গত ৮ ফেব্রæয়ারি ওই মামলায় রায় দেন বিচারিক আদালত। বিচারিক আদালতের রায়ে খালেদা জিয়ার পঁাচ বছরের কারাদÐ হয়। এর বিরুদ্ধে তিনি হাইকোটের্ আপিল করেন, যার ওপর শুনানি নিয়ে গত ৩০ অক্টোবর হাইকোটর্ রায় দেন। রায়ে খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদÐ দেয়া হয়। জিয়া এতিমখান ট্রাস্ট মামলায় রায়ের দিন অথার্ৎ গত ৮ ফেব্রæয়ারি থেকে খালেদা জিয়া নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন। বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দিতে নিদের্শনা চেয়ে এর আগে খালেদা জিয়ার করা রিট গত ৪ অক্টোবর কিছু নিদের্শনা ও পযের্বক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে আদেশ দেন হাইকোটর্। হাইকোটের্র আদেশের পর চিকিৎসার জন্য ৬ অক্টোবর তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নেয়া হয়। প্রায় এক মাস চিকিৎসার পর ৮ নভেম্বর বিএসএমএমইউ থেকে খালেদা জিয়াকে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারে ফিরিয়ে নেয়া হয়।