বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, 'ইসি গঠনে আইন পাস করার কোনো এখতিয়ার নেই এ সংসদের। কারণ এই সংসদ জনগণের দ্বারা নির্বাচিত কোনো সংসদ নয়। নির্বাচন কমিশনের এই আইন মানি না। এই আইন শুধু বিএনপির কাছে নয়, দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়, গ্রহণীয় হতে পারে না। আর যে আইন মানুষ গ্রহণ করে না- এটা কোনো আইনই নয়, সেটাকে কেউ মানবে না। তাই এই আইন প্রত্যাখ্যান করছি।'
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপির যৌথ উদ্যোগে 'বাকশাল :গণতন্ত্র হত্যার কালো দিবস' পালন উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়।
নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে দলের অবস্থান তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'আমরা শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাব না, প্রশ্নই উঠে না। আমরা আরেকবার বাকশালে ঢুকতে চাই না। তাই অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। তারা সব রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে নির্বাচন কমিশন গঠন করবে এবং তাদের পরিচালনায় সেই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের প্রতিনিধিরা নির্বাচিত হবেন। তারা ঠিক করবেন কীভাবে দেশ চলবে, কীভাবে দেশ চলবে না।'
সংসদে 'তড়িঘড়ি করে' আইন পাসের সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'বাকশাল গঠিত হয়েছিল সংসদে মাত্র ১১ মিনিটে। একইভাবে নির্বাচন কমিশন আইন পাস হয়েছে। আওয়ামী লীগ সেদিনও বাকশাল করেছিল নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টায়, আজকেও তারা একটা নির্বাচন কমিশন আইন তৈরি করলেন সেই আশায়। কিন্তু তারা ভুলে গেছেন, বাকশাল করেও শেষ রক্ষা হয়নি, এই নির্বাচন কমিশন আইন করেও তাদের শেষ রক্ষা হবে না।'
চাঁদপুরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির ঘনিষ্ঠদের দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত চেয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'দেশে চতুর্দিকে লুটপাট চলছে। এই বিষয়টার সুষ্ঠু তদন্ত করে জনগণের সামনে প্রকাশ করা হোক। জমির দাম ২০ গুণ বাড়িয়ে ৩৬৫ কোটি টাকা লুট করা হয়েছে। চরম অনিয়ম হচ্ছে।'
সভায় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, 'আওয়ামী লীগের কপাল ভালো। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আপাতত আন্দোলন কিছুটা স্থিমিত হয়েছে। জনগণ রাজপথে অলরেডি নেমে গেছে। জনতার স্রোতে ১৪৪ ধারা ভেঙে যাচ্ছে। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ একটু কমলে দেখবেন আন্দোলন কাকে বলে।'
স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে দেশের অবস্থান স্পষ্ট হয়ে গেছে। তারপর সরকারের দিক থেকে বলা হয় বিএনপি লবিস্ট নিয়োগ করেছে। বিএনপিকে লবিস্ট নিয়োগ করার দরকার নেই। দেশের ১৬-১৭ কোটি মানুষই তো লবিস্ট। যারা খুন, গুম হচ্ছে তাদের মায়ের কান্না-চিৎকার বিশ্ববাসীর কানে যায়।
মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উলস্নাহ আমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আমিনুল হকের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, জহির উদ্দিন স্বপন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।