সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের যমুনা দুর্গম চরাঞ্চলে কম শ্রম আর কম খরচে উৎপাদন ভালো হওয়ায় তিল চাষে ব্যাপক আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চাষিদের অর্থনৈতিক চাকা ঘুরে যাবে। গত কয়েক বছর ধরে চরাঞ্চলের চাষিরা তিলচাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, যমুনা চরের বেশ কয়েকটি গ্রামের দিগন্ত বিস্তৃত মাঠজুড়ে শোভা পাচ্ছে সবুজ চাদরে বিছানো তিল ক্ষেত। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর তিল চাষে যেন বিপস্নব ঘটেছে। আরও বৃদ্ধি পেলে জেলার ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। প্রতি বিঘা জমিতে ৫-৬ মণ হারে তিল উৎপাদন হয়ে থাকে। প্রতি মণ তিলের বর্তমান বাজার মূল্য ৪ হাজার টাকা। প্রতি মণ তিলে গড়ে ১৪ কেজি করে তেল পাওয়া যায়। যমুনাচরের বড়চামতারা গ্রামের তিল চাষি রেজাউল করিম বলেন, তিনি চরের বালু মাটিতে তিন বছর ধরে তিল চাষ করছেন। এবার করেছেন চার বিঘা জমিতে। তিল চাষে জমির উর্বর শক্তি বাড়ে। রাসায়নিক সার ও জমি নিড়ানির দরকার হয় না। সামান্য শ্রম ও অল্প খরচে প্রতি বিঘায় পাঁচ থেকে ছয় মণ ফলন মেলে। জমি সমান করে তিলের বীজ ছিটালেই চলে। প্রতি বিঘায় প্রয়োজন ২ কেজি বীজ। সেচ, সার, নিড়ানি ছাড়াই তিন মাসের মধ্যে তিল ওঠে। তিলে কোনো রোগবালাই না হওয়ায় কীটনাশকের দরকার হয় না। এক বিঘা জমিতে তিল চাষ করে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা লাভ করা যায়। রতনদিয়া চরের তিল চাষি মকরম আলী জানান, প্রতি বছর দুই বিঘা জমিতে তিল চাষ করি। তিল বীজ বপনের পর একটা নিড়ানি ছাড়া কোনো খরচ নেই। তাই অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় তিল চাষ করছি। আমাদের দেখাদেখি চরের অধিকাংশ কৃষক এ বছর তিল চাষ করেছে। আশা করি ফলনও ভালো হবে। শাহজাদপুর উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম জানান, 'আমরা উন্নতমানের তিল বীজ কৃষকদের মধ্যে সরবারহ করে তিল চাষে উদ্বুদ্ধ করছি। যমুনা চরের বালুমাটি তিল চাষের উপযোগী। যমুনা চরের কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করায় এবার অর্থকরী ফসল হিসেবে গতবারের চেয়ে তিল চাষ বেশি হয়েছে। মানুষ তিলের তেল ব্যবহারে ও ব্যাপকভাবে উদ্বুদ্ধ হয়েছে।