সকালে জনসভার ঘোষণা রিজভীর সন্ধ্যায় স্থগিত মিজার্ ফখরুলের

প্রকাশ | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ১০ ডিসেম্বর বেলা ২টায় ঢাকার সোহরাওয়াদীর্ উদ্যানে জনসভা করবে বলে বৃহস্পতিবার সকালে ঘোষণা দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় সেই জনসভা স্থগিতের ঘোষণা এসেছে। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কাযার্লয়ে বৃহস্পতিবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রিজভীর এ ঘোষণার পর সন্ধ্যায় এক বৈঠক শেষে জনসভা স্থগিতের ঘোষণা দেন বিএনপির মহাসচিব ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ভোটের প্রচারের মধ্যে জনসভার বিষয়ে জানতে চাইলে রুহুল কবির রিজভী বলেন, সভা-সমাবেশ করা একটি রাজনৈতিক দলের সাংবিধানিক অধিকার। এখন তো কোনো জরুরি অবস্থা চলছে না যে সভা-সমাবেশ করা যাবে না। নিবার্চনের প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ করা যাবে না, ঠিক আছে। কিন্তু দলীয় সভা-সমাবেশ করতে তো কোনো নিষেধ নেই। তিনি বলেন, বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিজেদের দলের নেতা-কমীের্দর গ্রেপ্তার বন্ধ করতে, মিথ্যা মামলা না দেওয়ার আহŸান জানিয়ে জনসভা করবে। সেখানে তো ভোটের প্রচার বা ভোট চাওয়ার জন্য জনসভা হবে না। রিজভীর ঘোষণার আট ঘণ্টার মাথায় সন্ধ্যায় মতিঝিলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক শেষে জোটের মুখপাত্র মিজার্ ফখরুল বলেন, ১০ ডিসেম্বর জনসভা হবে না। এটি পরে হবে। সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, সরকারের পক্ষে ইসির ‘নজিরবিহীন পক্ষপাতিত্ব’ ভোটারদের হতাশ ও ক্ষিপ্ত করে তুলছে। সংসদ নিবার্চন সামনে রেখে দেশব্যাপী গ্রেপ্তারের মহোৎসব চলছে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর থেকে গ্রেপ্তারের পরিমাণ বেড়ে গেছে। গতকাল পযর্ন্ত বিএনপির দুই হাজার নেতা-কমীর্র বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে চাপিয়ে দেয়া শত শত মামলার বোঝায় নিবার্চনের মাঠ দূরে থাক, ঘরে পযর্ন্ত থাকতে পারছে না ধানের শীষের প্রাথীর্র কমীর্-সমথর্করা। যারা ধানের শীষের মনোনয়নপ্রত্যাশী এবং প্রাথীর্ হয়ে যারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, এ ধরনের ২৭ জন নেতা মিথ্যা মামলায় এখন কারাগারে আছেন। তিনি বলেন, নিবার্চনের মাঠে বিএনপিকে ঘায়েল করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে নামে-বেনামে, গায়েবি মামলায় বিএনপির নেতাকমীের্দর লাল দেয়ালের ভেতর ঘিরে রাখা হয়েছে। মামলা আর পুলিশি হয়রানির কারণে নেতা-কমীর্রা ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এরপরও ক্ষান্ত হচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, পরিবারের অন্য সদস্যদের হয়রানি করা হচ্ছে। পুলিশি হেনস্তার ভয়ে বিএনপির মনোনীত প্রাথীর্রা একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনে নিভের্য় প্রচারণা চালাতে পারবেন কিনা, এ নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন তারা। নিবার্চন কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, সারা দেশে যারা ভোট গ্রহণ করবেন সেই ডিসি, এসপি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড গঠনের নিদের্শনা নিবার্চন কমিশন দেননি, উল্টো তাদের ‘পক্ষপাতিত্বের’ দিকে উসকে দিয়েছে ইসি। নিবার্চন কমিশনে দফায় দফায় ডেকে এনে সেমিনার, প্রশিক্ষণ, কমর্শালা, সংলাপের নামে বিএনপি প্রাথীের্দর হয়রানি করার ‘নিদের্শ’ দেয়া হচ্ছে। অধিকাংশ রিটানির্ং অফিসার আওয়ামী অনুমোদিত মনোবৃত্তির দ্বারা প্রণোদিত। প্রধান নিবার্চন কমিশনারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, সিইসি শব্দটি উচ্চারণ করলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে সাবেক সিইসি কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদের নাম। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির বিতকির্ত নিবার্চনে তার ভূমিকা দেশ-বিদেশে নিন্দিত ও কলঙ্কিত। জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করে কাজী রকিব যে পথে হেঁটেছেন, বতর্মান সিইসি কে এম নুরুল হুদাও যেন সে পথেই চলতে শুরু করেছেন। শুধু তাই নয়, সেটাকে এক ডিগ্রি বৃদ্ধি করে নৈতিকতার ‘মাথা খেয়ে’ নিজের ভাগনেকে নৌকা প্রতীকের প্রাথীর্ করেছেন। তার সঙ্গে আগারগঁাওয়ের নিবার্চন ভবনে বসে বৈঠকও করছেন।