শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
মন্ত্রিপরিষদ সভায় প্রধানমন্ত্রী

নাম হবে পদ্মা সেতুই

যাযাদি রিপোর্ট
  ২০ মে ২০২২, ০০:০০
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ সভায় সভাপতিত্ব করেন -ফোকাস বাংলা

পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত সেতুর নাম 'পদ্মা সেতু'ই হবে এবং জুন মাসের শেষের দিকে এ সেতুর উদ্বোধন হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বিষয় নিয়ে তিনি আগামী ৫ থেকে ৬ দিনের মধ্যে কথা বলবেন।

বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, 'সেতুর নামকরণ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। এর নাম পদ্মা সেতুই হবে। এটা প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন। পদ্মা সেতু জুন মাসের শেষে উদ্বোধন হচ্ছে, এটা তো উনি বলেই দিয়েছেন, আমরাও রেডি আছি, ইনশাআলস্নাহ। আশা করছি লাস্ট উইকের আগেই ব্রিজ রেডি হয়ে যাবে। ডেটটা (উদ্বোধনের তারিখ) এখনো ফিক্সড হয়নি। ধরে রাখেন লাস্টের দিকে।'

টোল নিয়ে চলমান বিতর্কের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, 'যখনই যেখানে ব্রিজ করি টোলটা ফেরির ওয়ান পয়েন্ট ফাইভ ধরা হয়। সেটা ধরেই করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সরকার যদি মনে করে এটা বেশি হয়ে গেছে তখন বিবেচনা করা হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'অনেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর সঙ্গে কম্পেয়ার করছেন। বঙ্গবন্ধু ব্রিজ তো হলো ফোর পয়েন্ট এইট (৪.৮ কিলোমিটার) কিলোমিটার। আর এটা হলো নাইন পয়েন্ট এইট সেভেন, অলমোস্ট ডাবল। তাছাড়া এখানকার ফেরির ন্যাচার আর যমুনার ফেরির ন্যাচার এক ছিল না।'

মন্ত্রিসভার অন্যান্য সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, 'হাট ও বাজার (স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা) আইন, ২০২২'-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন, 'ভূমি উন্নয়ন কর আইন, ২০২২'-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন, 'ভূমি সংস্কার আইন, ২০২২'-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন, 'জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য নীতি, বাংলাদেশ-২০২২'-এর খসড়া অনুমোদন, গত ৭ হতে ১২ মার্চ-২০২২ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিতকরণ এবং গত ২৬ ফেব্রম্নয়ারি হতে ১ মার্চ-২০২২ মেয়াদে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল কর্তৃক কমিশন ওয়ান দ্য লিমিটস অব দ্য কন্টিনেন্টাল সেল্ফ (সিএলসিএস)-এর ৫৪তম অধিবেশনে বাংলাদেশ কর্তৃক মহীসোপানের অ্যামেন্ডমেন্ট সাবমিশন উপস্থাপন সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিতকরণ।

এর মধ্যে মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া 'হাট ও বাজার (স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা) আইন, ২০২২' শীর্ষক আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোনো হাটবাজার বসানো যাবে না। স্থানীয় হাটবাজারের জন্য জেলা প্রশাসকের অনুমতি লাগবে।

এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ?'কেউ যদি সরকারের অনুমতি ছাড়া হাটবাজার বসায় তাহলে সেটা সরকার খাস জমি হিসেবে নিয়ে নেবে। এছাড়া ৫ লাখ টাকা জরিমানা এবং এক বছরের কারাদন্ড দেওয়া হবে বলেও আইনে বিধান রাখা হয়েছে।'

নীতিগত অনুমোদন দেওয়া ভূমি উন্নয়ন কর আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, ২৫ বিঘা পর্যন্ত যাদের জমি আছে তাদের কর দিতে হবে না। এর বেশি হলেই পুরো জমির কর দিতে হবে। কারও যদি খাজনা দেওয়া ৩ বছর বাকি থাকে তাহলে প্রতি বছরের করের সঙ্গে ৬.২ শতাংশ বেশি দিতে হবে বলে এই আইনে উলেস্নখ রয়েছে।

এছাড়া মন্ত্রিসভা বৈঠকে দ্রব্যের অতিরিক্ত মূল্য ইসু্যতে অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে প্রধানমন্ত্রী বেশ কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি বলেন, 'দ্রব্যমূল্য নিয়ে ডিটেইল আলোচনা হয়েছে। কমার্স অ্যান্ড ফাইন্যান্স মিনিস্ট্রিকে কতগুলো নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, পর্যাপ্ত এবং কম্প্রিহেনসিভ ব্যবস্থা নিয়ে সবার কাছে তুলে ধরার জন্য। বিশেষ করে এই যে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাচ্ছে বা সাপস্নাই কমে যাচ্ছে, এই জিনিসগুলো কীভাবে হ্যান্ডেল করতে পারব। কোনো জায়গায় রেস্ট্রিকশন দিলে ভালো হবে বা ওপেন করলে ভালো হবে। এগুলো দু-তিন দিনের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে তুলে ধরতে হবে।'

'ডলারের যে ক্রাইসিস হচ্ছে, এটা কীভাবে সলভ করা যায় তা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বসে দু-তিনদিনের মধ্যে প্রেসের সামনে বলা হবে।'

আগামী ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবে বলেও জানান তিনি।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, 'তাদের বলা হয়েছে, এই সিনারিওতে আমাদের কী করণীয়, যেমন মনে করেন আপনি একটি সাজেশন দিলেন ফল আনার মধ্যে ট্যাক্স বাড়িয়ে দেন, যাতে ফল বেশি না আসে। এখন বৈশাখ মাস। এখন তো আমাদের আম, জাম কাঁঠাল পর্যাপ্ত থাকবে। এরকম একটি সাজেশন আপনি দিলেন, এটা বিবেচনা করে লজিক্যাল কিনা, সেটা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া।'

তিনি বলেন, '৮ বা ৯ হাজার কোটি টাকার ফল আসে বছরে। ৯ হাজার কোটি টাকা ইজ মোর দেন ওয়ান বিলিয়ন ডলার। এখন ট্যাক্স যদি সাময়িকভাবে বাড়ানো হয় বা অন্য যে ফ্যান্সি আইটেমগুলো আছে সেগুলোতে ট্যাক্স বাড়ান, এ বিষয়গুলো আলোচনা করে ২-৩ দিনের মধ্যে একটি সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।'

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, 'আপনাদের কাছেও আমাদের একটি আবেদন যে, গঠনমূলক জিনিসগুলো আলোচনা করতে হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'কালই দেখলাম নাইন পারসেন্ট মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে গ্রেট ব্রিটেনে। আমেরিকাতে এইট পারসেন্টের বেশি। আমরা তো ওয়ার্ল্ডের বাইরে না, আমরা তো ওয়ার্ল্ডের অংশ। সে ক্ষেত্রে আমাদেরও হয়তো কিছু কিছু ক্ষেত্রে আরও রেশনাল বিহেভ করতে হবে। সেজন্য আমরা মিডিয়াকে অনুরোধ করব এটাই একটু পজিটিভওয়েতে প্রচার করার জন্য। আমরা সবাই যেন একটু সাশ্রয়ী বা রেশনাল থাকি।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে