যুদ্ধ, করোনা ও মাঙ্কিপক্স নিয়ে ভয়াবহ চ্যালেঞ্জের মুখে বিশ্ব -ডবিস্নউএইচও প্রধান

প্রকাশ | ২৪ মে ২০২২, ০০:০০

ম যাযাদি ডেস্ক
চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, করোনাভাইরাস মহামারি এবং মাঙ্কিপক্স নিয়ে বিশ্ব 'ভয়াবহ' চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার (ডবিস্নউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস। আফ্রিকার বাইরে এক ডজনেরও বেশি দেশে মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব নিয়ে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞদের আলোচনায় তিনি এই সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেন বলে সোমবার এক প্রতিবেদন জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস বলেন, 'অবশ্যই (করোনা) মহামারি আমাদের বিশ্বের একমাত্র সংকট নয়। যেমন বিশ্বজুড়ে আমাদের সহকর্মীরা ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে ইবোলার প্রাদুর্ভাব, মাঙ্কিপক্স এবং অজানা কারণের হেপাটাইটিস এবং আফগানিস্তান, ইথিওপিয়া, সোমালিয়া, দক্ষিণ সুদান, সিরিয়ান আরব প্রজাতন্ত্র, ইউক্রেন এবং ইয়েমেনে জটিল মানবিক সংকটের বিষয়ে সরব রয়েছেন।' তিনি আরও বলেন, 'আমরা জলবায়ু পরিবর্তন, বৈষম্য এবং ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে সৃষ্ট রোগ, খরা, দুর্ভিক্ষ এবং যুদ্ধের এক ভয়ঙ্কর অবস্থার মুখোমুখি রয়েছি।' বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপের দেশগুলোর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও ইসরায়েলে ৯০ জনেরও বেশি মানুষ মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে জনসাধারণের জন্য এখনো ব্যাপক কোনো ঝুঁকি নেই বলেই বলা হচ্ছে। বিবিসি বলছে, বিশ্বে এর আগে মাঙ্কিপক্সের অল্প কিছু সংক্রমণ পাওয়া গেছে। ভাইরাসটি মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এই ভাইরাস মানুষের মধ্যে সহজে ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা নেই এবং অসুস্থতা সাধারণত হালকা হয়। এর আগে যাদের শরীরে এটি পাওয়া গিয়েছিল তারা সবাই ভাইরাসটির প্রাকৃতিক আবাসভূমি যেসব দেশে সেখানে ভ্রমণে গিয়েছিলেন। কিন্তু এবার যে প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে তাতে প্রথমবারের মতো এমন সব মানুষের দেহে এটি পাওয়া গেছে যাদের সাথে পশ্চিম অথবা মধ্য আফ্রিকার কোনো যোগাযোগও নেই। ফলে কিভাবে তারা আক্রান্ত হয়েছেন সেটি এখনও পরিষ্কার নয়। আর এ বিষয়টিই প্রাদুর্ভাব বিজ্ঞানীদের অবাক করে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে 'মাঙ্কিপক্স' সংক্রমণ মোকাবিলায় ২১ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন বিধি জারি করেছে বেলজিয়াম। দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যারা এই ভাইরাসে সংক্রমিত হবে, তাদের তিন সপ্তাহের জন্য কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। তবে বেলজিয়ান ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন বলেছে, তাদের দেশে মাঙ্কিপক্সের বৃহত্তর প্রাদুর্ভাবের ঝুঁকি কম। ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, 'মাঙ্কিপক্স' সংক্রমণের ক্ষেত্রে এমনিতে আইসোলেশনের প্রয়োজন হয় না। তবে কোভিড সংক্রমণের পর এখন অনেকেরই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে। তাই সতর্ক থাকা উচিত। 'মাঙ্কিপক্স' মূলত গুটিবসন্ত বা চিকেনপক্স গোত্রেরই রোগ। তবে, এটি গুটিবসন্তের থেকে কম মারাত্মক, মৃতু্যর হার ৪ শতাংশেরও নিচে। বেশিরভাগ রোগীই কয়েক সপ্তাহের মধ্যে চিকিৎসা ছাড়াই সুস্থ হয়ে ওঠে। তবে, এর আগে কখনো আফ্রিকার বাইরে মহামারি আকারে এই রোগ ছড়াতে দেখা যায়নি।