আ’লীগ প্রাথীর্র রাখাইন ভাষায় নিবার্চনী পোস্টার

প্রকাশ | ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
রাখাইন ভাষায় পোস্টার
তফসিল অনুসারে ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর থেকে পুরোদমে চলছে প্রচারণাও। যে যেভাবে পারছেন ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু এসবের মধ্যে রাখাইন ভাষাভাষী বৌদ্ধ ধমার্বলম্বীদের মন জয় করতে রাখাইন ভাষায় পোস্টার ছাপিয়ে আলোচনার তুঙ্গে কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনে নৌকার প্রাথীর্ সাইমুম সরোয়ার কমল। সংসদীয় আসনে রাখাইন ভাষাভাষীর বাস রয়েছে এমন এলাকায় এসব পোস্টারগুলো শোভা পাচ্ছে। প্রচার করা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। নৌকা প্রাথীর্ সাইমুম সরোয়ার কমলের প্রচার সেল সূত্রমতে, কক্সবাজার-৩ আসনে রামু, কক্সবাজার পৌরসভা ও চৌফলদÐী এলাকায় রাখাইন ভাষাভাষী বৌদ্ধ ধমার্বলম্বী মানুষের বসবাস। এসব এলাকায় রাখাইন ভাষাভাষীর ভোটার সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। এদের ভোটগুলো টানতে তাদের মৌখিক ভাষা ব্যবহার করে কিছু পোস্টার করা হয়েছে। তাদের দাবি, এসব রাখাইন জনগোষ্ঠীর লোকজন স্বাভাবিকভাবেই বাংলা বোঝেন না। তাই তাদের ভোট প্রাথর্নায় রাখাইন ভাষায় নিবার্চনী পোস্টার ছাপিয়েছেন কমল। কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রাখাইন নেতা বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে বাংলা ভাষা বুঝব না এটা কেমন কথা? ’৭০-এর দশকের পর জন্ম নেয়া সব রাখাইন ভাষাভাষীই বাংলা ভালোমতোই লিখতে, পড়তে ও বুঝতে পারে। আর বৌদ্ধ ধমার্বলম্বী সবাই রাখাইন ভাষা ব্যবহার করে না এবং ক্ষেত্রবিশেষে জানেও না। সুতরাং বাংলা ভাষা বোঝে না উল্লেখ করে রাখাইন ভাষাভাষী বৌদ্ধ ধমার্বলম্বীদের হেয় করা হলো। অনেকে আমাদের মিয়ানমারের অধিবাসী বলেই মনে করতে পারে, যা এক ধরনের অবমাননাকর। নাম প্রকাশ না করার শতের্ এক ভাষা সাহিত্যিক বলেন, রক্তের বিনিময়ে মাতৃভাষা অজর্নকারী হিসেবে বিশ্বের বুকে বাঙালি ছাড়া আর কোনো জাতি নেই। সেই সূত্রে বাংলাদেশি রাখাইন গোষ্ঠীও বাংলা ভাষার গবির্ত অংশীদার। তারা কেন বাংলা বুঝবে না, এটা বোধগম্য নয়। স্বাধীন দেশের জাতীয় নিবার্চনে ভিন দেশের ভাষায় পোস্টার করা আমাদের ভাষাকে এক ধরনের হেয় করার সামিল। এমনটি কক্সবাজার পৌর নিবার্চনেও পরিলক্ষিত হয়েছে। এক কাউন্সিলর প্রাথীর্ রাখাইন ভাষায় পোস্টার ও ব্যানার টানিয়েছিল। তবে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে নৌকার প্রাথীর্ সাইমুম সরোয়ার কমলের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু ফোনটি রিসিভ না করায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। দৃষ্টি আকষর্ণ করা হলে জেলা রিটানির্ং কমর্কতার্ ও জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, পোস্টারগুলো সম্পকের্ জেনেছেন। নিবার্চনী আইনে বিদেশি ভাষায় পোস্টার করা না করার উপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তাই এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। স্থানীয়দের মতে, এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রাথীর্র চেয়ে শক্ত অবস্থানে রয়েছে বিএনপির প্রাথীর্ লুৎফর রহমান কাজল। ২০০৮ সালে বিএনপির বিদ্রোহী প্রাথীর্ থাকার পরও প্রায় অধর্লাখ ভোটের ব্যবধানে কাজল এমপি নিবাির্চত হন। তবে ২০১৪ সালে আসনটি থেকে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় সংসদ সদস্য (এমপি) নিবাির্চত হন কমল। এবার ভোটযুদ্ধে কে জয়ী হন তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন সাধারণ ভোটাররা। উল্লেখ্য, কক্সবাজার-৩ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ১৪ হাজার ৩৬ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬১২ জন এবং পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১৬ হাজার ৪২৪ জন।