শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
আসছে কোরবানি

চামড়া সংরক্ষণে ৪০০ কোটি টাকা ঋণ পাবেন ট্যানারি মালিকরা

যাযাদি রিপোর্ট
  ০১ জুলাই ২০২২, ০০:০০

এবারের কোরবানি ঈদে পশুর কাঁচা চামড়া সংরক্ষণে ৪০০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ পাবেন দেশের ট্যানারি মালিকরা। যা বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। তবে গত বছরের তুলনায় এই ঋণের পরিমাণ ১৮৩ কোটি টাকা কম। এর আগে, ঈদে কোরবানিকৃত পশুর কাঁচা চামড়া কেনা ও ব্যবস্থাপনায় ৫০০-৬০০ কোটি টাকা ঋণ সংস্থানের ব্যবস্থা করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছিল ট্যানারি মালিকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ট্যানারি শিল্প উদ্যোক্তাদের পূর্বের ঋণের বড় একটি অংশই খেলাপি থাকায় ব্যাংকগুলো সহজে ঋণ দিতে চায় না, যার কারণে ঋণ পেতে সরকারের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। গত ২১ জুন এই সংক্রান্ত একটি চিঠি বাণিজ্য সচিবকে দেয় বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন।

চিঠিতে

কাঁচা চামড়া সংরক্ষণে চাহিদামাফিক লবণ সরবরাহের ব্যবস্থা, কাঁচা চামড়া পাচার ঠেকাতে ঈদের পর অন্তত ৩০ দিন পর্যন্ত বর্ডার এলাকায় টহল বাড়ানো ও কাঁচা চামড়া ক্রয়ে ঋণ সরবরাহে ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতাও চেয়েছে সংগঠনটি।

চিঠিতে বলা হয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রা আয়, জাতীয় প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান ও মূল্য সংযোজনের নিরিখে সম্ভাবনাময় খাত চামড়া শিল্প। এই শিল্পের সিংহভাগ কাঁচা চামড়া সংগৃহীত হয় ঈদুল আযহায়। তবে সঠিকভাবে সংরক্ষণের অভাবে প্রতি বছর প্রায় ৩০ শতাংশ চামড়া নষ্ট হয়, যার জন্য চামড়ার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন।

গত বছরের মতো এবারও আবহাওয়া গরম থাকবে, যার জন্য স্থানীয় মাদরাসা বা এতিমখানার মাধ্যমে চামড়া সংগ্রহের পর যেন লবণ লাগানো হয়, সেজন্য পশু সম্পদ বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন, তথ্য কর্মকর্তা ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে ভূমিকা রাখার বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠনটি।

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক মো. সাখাওয়াত উলস্নাহ জানান, চামড়া সংরক্ষণসহ দেশের বিভিন্ন আড়তের মাধ্যমে সংগৃহীত চামড়া কিনতে ও ব্যবস্থাপনায় নগদ অর্থ প্রয়োজন হয়। ট্যানারি মালিকরা নিজস্ব ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল দিয়ে ব্যবসা করলেও কোরবানির সময় বেশি নগদ অর্থ দরকার হয়। যা নিজস্ব ফান্ড থেকে ম্যানেজ করা সম্ভব না। তাই সরকারের ঋণ সহায়তা প্রয়োজন।

এদিকে সাভার ট্যানারি শিল্পপার্কে কারখানা স্থানান্তর করা হলেও জমির লিজ ডিড সম্পন্ন না হওয়ায় এই জমির বিপরীতে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলেও জানান অনেক উদ্যোক্তা।

মূলত এই খাতের শিল্প মালিকরা সারা দেশ থেকে আড়তের মাধ্যমে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াজাত করে। প্রক্রিয়াকরণের পর উদ্যোক্তারা তা চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নিকট অথবা বিদেশে রপ্তানি করে থাকেন।

ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সূত্র মতে, ট্যানারি মালিক ও বাণিজ্যিক রপ্তানিকারক মিলিয়ে সংগঠনটির বর্তমান সদস্য প্রায় ৮০০ জন। সারা দেশে ১৮৬৬টি বড় ও মাঝারি আড়ত রয়েছে। এর বাইরেও ছোট আকারে অনেক আড়ত রয়েছে, যারা মৌসুমি উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে ঈদুল আজহার সময় চামড়া সংগ্রহ করে থাকেন।

শিল্পের উদ্যোক্তারা জানান, দীর্ঘদিন পর চামড়া রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে, বিদেশি ক্রেতাদের চাহিদাও এখন বেশ ভালো। রপ্তানি ত্বরান্বিত ও বর্তমান ট্রেন্ড ধরে রাখতে সরকারের সহায়তা প্রয়োজন। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি রপ্তানি আয় হয়েছে। যা আগের অর্থ-বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩২ শতাংশ বেশি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে