সুনামগঞ্জে সড়কের ক্ষতি ১৮০০ কোটি টাকা

প্রকাশ | ০২ জুলাই ২০২২, ০০:০০

ম যাযাদি ডেস্ক
টানা ১৬ দিনেও সিলেট অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির উলেস্নখযোগ্য উন্নতি হয়নি। এখনো বাড়ি-ঘর, দোকানপাটসহ বিভিন্ন ভবন জলাবদ্ধ হয়ে আছে। ফলে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন বানভাসিরা। সীমান্তের ওপার থেকে নেমে আসা ভারতীয় ঢলের পানি ও ভারী বর্ষণে স্থানীয় নদ-নদীর পানি বেড়ে সুনামগঞ্জে ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়েছে এবার। গত ১৬ জুন বিকাল থেকে ১৭ জুন সকালের মধ্যে তলিয়ে যায় জেলার প্রায় ৯০ ভাগ এলাকা। বন্যাকবলিত সুনামগঞ্জের প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানিয়ে জেলা প্রশাসন বলছে, বন্যায় জেলার ১১ উপজেলায় ৪৫ হাজার ২৮৮টি ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৪ হাজার ৭৪৭টি ঘর-বাড়ি সম্পূর্ণ এবং ৪০ হাজার ৫৪১টি ঘর-বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো জেলার বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি ও ত্রাণ তৎপরতা-সম্পর্কিত এক প্রতিবেদনে এসব উলেস্নখ করেছেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেছেন, বন্যায় জেলায় ২৫ হাজার ২০৪টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। বন্যায় ১ হাজার ৬৪২টি গবাদিপশু মারা গেছে। এর মধ্যে গরু ৪২২টি, মহিষ ৩৭টি, ছাগল ৬৬৯টি ও ভেড়া ৫১৪টি। এ ছাড়া বন্যায় ২৮ হাজার ৮০৫টি মুরগি ও ৯৭ হাজার ৮৩১টি হাঁস মারা গেছে। বন্যায় জেলায় এ পর্যন্ত ৩৮৪ কিলোমিটার সড়ক, ১৫৫টি সেতু-কালভার্টের সংযোগ সড়ক এবং ৪টি সেতু-কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনো বিভিন্ন স্থানে পানি আছে। তাই বন্যার পানি পুরোপুরি নেমে যাওয়ার পর চূড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করা হবে। এদিকে এলজিইডি ও সওজের দাবি অনুযায়ী, মোট এক হাজার ৮০০ কোটি টাকার সড়ক, সেতু, কালভার্ট ও অ্যাপ্রোচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুব আলম বলেন, এলজিইডির দুই হাজার ২০০ কিলোমিটার সড়ক ১২০টি সেতু কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসবের প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতি এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা। পানি কমলে এটি আরও বাড়তে পারে। সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম প্রমাণিক জানান, সড়ক জনপথের ১৮০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ১৮০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম জানান, সুনামগঞ্জের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদীর পানি কমে ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। আর বৃষ্টিপাত না হলে সপ্তাহ খানেক সময় লাগবে স্বাভাবিক হতে। জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সংবাদমাধ্যমকে জানান, সুনামগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। বন্যার কারণে জেলায় ক্ষয়ক্ষতির তালিকা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। সরকারিভাবে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।